১০ বাংলাদেশিকে সৌদি হয়ে রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে সুলতানের কাছে বিক্রি
Published: 6th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় মানব পাচারে জড়িত অভিযোগে এক নারীকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিআইডি জানিয়েছে, ওই নারী মানব পাচার চক্রের সদস্য। ওই চক্র ১০ বাংলাদেশিকে রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে এক সুলতানের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন।
সিআইডির গণমাধ্যম শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বুধবার রাতে নেপালে পালিয়ে যাওয়ার আগমুহূর্তে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে ফাবিহা জেরিন নামের ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তামান্না ‘ড্রিম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেড’ নামের একটি কোম্পানির অংশীদার। তিনি একটি মানব পাচার চক্রেরও সদস্য। চক্রটি রাশিয়ায় মাসে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বেতনে কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১০ জনকে পাচার করেছে। চক্রটি প্রথমে ওই ১০ জনকে ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরবে পাঠায়। সেখানে তাঁদের ওমরাহ করানোর পর রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে এক সুলতানের কাছে বিক্রি করে দেয়। সুলতান তাঁদের দাস হিসেবে রাশিয়ার সৈনিকদের কাছে হস্তান্তর করেন। সেখানে তাঁদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ না দিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাধ্য করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুদ্ধে নাটোরের সিংড়া থানার হুমায়ুন কবির নামের একজন নিহত এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের আমিনুল নামের আরেকজন গুরুতর আহত হন। পাচার হওয়া ১০ জনের মধ্যে নরসিংদীর পলাশ থানার বাসিন্দা আকরাম হোসেন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যান। পরে নিজ ব্যবস্থাপনায় গত ২৬ জানুয়ারি দেশে ফিরে অন্যান্য ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। গত মঙ্গলবার ‘যুদ্ধাহত’ আমিনুলের স্ত্রী ঝুমু আক্তার রাজধানীর বনানী থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার তদন্তের ধারাবাহিকতায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তামান্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিআইডি জানতে পেরেছে, তামান্না নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। সাধারণ মানুষকে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রেরণা জুগিয়েছেন তামান্নার ভাই তুহিন, যিনি বর্তমানে রাশিয়ায় অবস্থান করছেন।
সিআইডি জানায়, পাচার হওয়া ১০ জনের আরেকটি দল বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থান করছে। যুদ্ধ করতে বাধ্য করা হবে জেনে তাঁরা রাশিয়ায় যেতে অস্বীকার করেছেন। এর ফলে তাঁদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়ায় সৌদি আরবে থাকা ১০ জন কোনো কাজ করতে পারছেন না এবং দেশেও ফিরতে পারছে না। সিআইডি তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের
ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।