রংপুরে আন্তঃজেলা নারী ফুটবল টুর্নামেন্টে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার প্রেক্ষিতে খেলা বন্ধ করে মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বিকেলে তারাগঞ্জের বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে। 

জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় তারাগঞ্জের সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত আন্তঃজেলা ফুটবল টুর্নামেন্টে জয়পুরহাট নারী দল ও রাজশাহী নারী দলের খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নারীদের এ ফুটবল খেলা বন্ধের ঘোষণা দিয়ে মাইকিং করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তারাগঞ্জ উপজেলা সভাপতি আশরাফ আলী। খেলা বন্ধে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন তিনি। এ নিয়ে খেলার আয়োজক ও ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুবেল রানা। কিন্তু দুই পক্ষের কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। এজন্য অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে খেলা বন্ধ করে মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। 

টুর্নামেন্টের আয়োজকরা জানান, প্রতিবছর বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আন্তঃজেলা ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়ে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছরও খেলার আয়োজন করা হয়। খেলার আয়োজনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জয়পুরহাট নারী ফুটবল দল ও রাজশাহী নারী ফুটবল দলের খেলা ছিল। খেলোয়াড়ও চলে এসেছে। হঠাৎ ইসলামী আন্দোলনের নেতা আশরাফ আলী খেলা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে মাইকিং করেন। এর পর বিকেলে আলোচনায় বসলে তিনি বিক্ষোভের হুমকি দেন। এতে করে প্রশাসন খেলা বন্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করে। ফলে জয়পুরহাট ও রাজশাহী থেকে আসা নারী ফুটবলাররা ফিরে যেতে বাধ্য হন।

এ বিষয়ে আশরাফ আলী বলেন, আমাদের দাবি ছিল খেলা বন্ধ করা। খেলা বন্ধ করেছে প্রশাসন। আমরা পরবর্তী সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবেল রানা সন্ধ্যায় সমকালকে বলেন, খেলার আয়োজক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তারাগঞ্জের নেতা এবং ইত্তেহাদুল উলামা সংগঠনের নেতাদের নিয়ে বসা হয়েছিল। সেখানে জামায়াত ও বিএনপি নেতারাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও ছিলেন। কিন্তু কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নন। এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গে কথা বলে তাই খেলার মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ টবল ট র ন ম ন ট ১৪৪ ধ র জ র খ ল র আয় ১৪৪ ধ র ইসল ম ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

তদন্ত কমিটি থেকে জবি শিক্ষক সমিতির প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারির পদত্যাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দুই শিক্ষকের ওপর ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি থেকে দুই শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদদীন পদত্যাগ করেছেন। 

আজ রোববার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, আমি নিজেই তো বিচারপ্রার্থী। আমি কিভাবে তদন্ত কমিটিতে থাকি। আমি এই ঘটনার বিচার চাই। সুতরাং তদন্ত কমিটিতে আমার থাকা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এখন আমি ও আমার ভুক্তভোগী শিক্ষকের হয়ে কথা বলতে পারছি।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি আরও শিক্ষক বলেন, আমার সামনে যে ঘটনা ঘটেছে, আমি নিজেই এটার বিচার চাই। কোষাধ্যক্ষকে আহ্বায়ক করে নতুন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

এ ঘটনায় জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রইছ উদদীন পদত্যাগ করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. গিয়াসউদ্দিনকে স্থলাভিষিক্ত করে নতুন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

এদিকে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ওই দুই শিক্ষকের ওপর ছাত্রদলের হামলায় বিচারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়। আজ রোববার সকাল থেকে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে দ্রুত বিচারের দাবিতে উপাচার্য ভবন ঘেরাও করে বিভাগীয় শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। 

এদিন বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘যেই হাত শিক্ষক মারে, সেই হাত ভেঙে দাও’, ‘ছাত্রদলের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘সন্ত্রাসীদের আস্তানা, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘এক দুই তিন চার, অছাত্ররা ক্যাম্পাস ছাড়’, এমন নানা স্লোগান দেন তারা।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের নিচে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রফিক বিন সাদেক রেসাদের ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে মারধর শুরু করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ড. এ কে এম রিফাত হাসান এবং সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম রক্ষা করতে গেলে তাদেরকে গালিগালাজ ও হামলা করে ছাত্রদলের নেতকর্মীরা। একইসঙ্গে শাখা বাগছাস সভাপতি মো. ফয়সাল মুরাদ, মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস হাসান ও  ও যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুককে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে তাদের ওপরও হামলা ও মারধর শুরু করে তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ