রংপুরে নারী ফুটবলারদের মাঠে নামতে বাধা, ১৪৪ ধারা জারি
Published: 6th, February 2025 GMT
রংপুরে আন্তঃজেলা নারী ফুটবল টুর্নামেন্টে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার প্রেক্ষিতে খেলা বন্ধ করে মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বিকেলে তারাগঞ্জের বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় তারাগঞ্জের সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত আন্তঃজেলা ফুটবল টুর্নামেন্টে জয়পুরহাট নারী দল ও রাজশাহী নারী দলের খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নারীদের এ ফুটবল খেলা বন্ধের ঘোষণা দিয়ে মাইকিং করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তারাগঞ্জ উপজেলা সভাপতি আশরাফ আলী। খেলা বন্ধে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন তিনি। এ নিয়ে খেলার আয়োজক ও ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুবেল রানা। কিন্তু দুই পক্ষের কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। এজন্য অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে খেলা বন্ধ করে মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
টুর্নামেন্টের আয়োজকরা জানান, প্রতিবছর বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আন্তঃজেলা ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়ে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছরও খেলার আয়োজন করা হয়। খেলার আয়োজনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জয়পুরহাট নারী ফুটবল দল ও রাজশাহী নারী ফুটবল দলের খেলা ছিল। খেলোয়াড়ও চলে এসেছে। হঠাৎ ইসলামী আন্দোলনের নেতা আশরাফ আলী খেলা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে মাইকিং করেন। এর পর বিকেলে আলোচনায় বসলে তিনি বিক্ষোভের হুমকি দেন। এতে করে প্রশাসন খেলা বন্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করে। ফলে জয়পুরহাট ও রাজশাহী থেকে আসা নারী ফুটবলাররা ফিরে যেতে বাধ্য হন।
এ বিষয়ে আশরাফ আলী বলেন, আমাদের দাবি ছিল খেলা বন্ধ করা। খেলা বন্ধ করেছে প্রশাসন। আমরা পরবর্তী সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবেল রানা সন্ধ্যায় সমকালকে বলেন, খেলার আয়োজক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তারাগঞ্জের নেতা এবং ইত্তেহাদুল উলামা সংগঠনের নেতাদের নিয়ে বসা হয়েছিল। সেখানে জামায়াত ও বিএনপি নেতারাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও ছিলেন। কিন্তু কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নন। এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গে কথা বলে তাই খেলার মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ টবল ট র ন ম ন ট ১৪৪ ধ র জ র খ ল র আয় ১৪৪ ধ র ইসল ম ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্প এশিয়ায় শান্তি খুঁজছেন, উত্তেজনা বাড়াচ্ছেন লাতিনে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর এশিয়া সফরে শান্তি প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে একই সঙ্গে লাতিন আমেরিকায় যুদ্ধের উত্তেজনাও বাড়াচ্ছেন। গত রোববার থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করার সময় উপস্থিত ছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু একই সময়ে ক্যারিবীয় সাগরে সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছেন তিনি। ভেনেজুয়েলায় স্থল অভিযান চালানোর ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ক্যারিবীয় সাগরে কয়েকটি স্পিডবোট উড়িয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য যুদ্ধবিমানবাহী রণতরি, এফ/এ-১৮ জেট ও নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজের বহরের প্রয়োজন পড়ে না। তবু ইউরোপ থেকে ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড রণতরি ওই অঞ্চলে আগে থেকে অবস্থানরত নৌ ও বিমানবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে রওনা হয়েছে। এ থেকে ধারণা জোরালো হচ্ছে, ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালান রোধের নামে তাদের অভিযান আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে যাচ্ছে।
এই নতুন ২১ শতকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘গানবোট’ কূটনীতির লক্ষ্য হচ্ছে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো। যুক্তরাষ্ট্রের চোখে তিনি নির্বাচনে পরাজয় মেনে না নেওয়া স্বৈরশাসক। গানবোট কূটনীতি হলো কোনো দেশের নীতি বা আচরণ পাল্টাতে বা তাকে ভয় দেখাতে শক্তিশালী সামরিক নৌবহর (যুদ্ধজাহাজ, রণতরি ইত্যাদি) পাঠিয়ে হুমকি দেওয়া।
উত্তেজনা বাড়ছে
ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন সামরিক শক্তি বৃদ্ধির ঘটনা লাতিন আমেরিকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ভেনেজুয়েলার পাশাপাশি কিউবা ও নিকারাগুয়াও এই পদক্ষেপকে উসকানিমূলক বলে অভিযোগ করেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, মার্কিন রণতরির উপস্থিতি মাদুরোকে ক্ষমতা ছাড়ার জন্য এক বিশাল বার্তা দেবে অথবা ভেনেজুয়েলার সেনা কর্মকর্তাদের তাঁকে উৎখাত করতে উৎসাহিত করবে। এ ছাড়া মাদক চক্রের ওপর হামলার প্ল্যাটফর্মের বাইরে এটি সরকার পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনার ডেমোক্র্যাট সিনেটর মার্ক কেলি রোববার এবিসির ‘দিস উইক’ অনুষ্ঠানে বলেন, ‘কোনো দেশকে ভয় দেখানোর পরিকল্পনা না করলে বা সেখানে সামরিক অভিযান শুরু করার ইচ্ছা না থাকলে পুরো যুদ্ধবহরকে এক প্রান্ত থেকে ক্যারিবীয় অঞ্চলে পাঠানো হয় না।’
সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম রোববার বলেন, ভেনেজুয়েলায় স্থল অভিযানের আশঙ্কা দেখা গেছে। সাউথ ক্যারোলাইনার এই রিপাবলিকান সিনেটর সিবিএসের ‘ফেস দ্য নেশন’ অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমার মনে হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মাদুরোর পদত্যাগের সময় এসেছে।’
ট্রাম্পের এশিয়া সফর
ট্রাম্প বর্তমানে এশিয়া সফরে রয়েছেন। এ সফরের প্রধান উদ্দেশ্য হলো বাণিজ্যবিষয়ক আলোচনা ও এশিয়া অঞ্চলে উত্তেজনা কমিয়ে শান্তির পথ খোঁজা। তাঁর সফরের শুরু হয়েছে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ান সম্মেলনে যোগদানের মাধ্যমে। তিনি তাঁর সফরে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া তিনি আগামী বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে
বাণিজ্যযুদ্ধ বন্ধে বৈঠক করবেন। বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ ঘিরে চলমান উত্তেজনা তাঁদের বৈঠকের পর কমতে পারে। কিন্তু লাতিন আমেরিকায় এ উত্তেজনা এখনই কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।