সুদানের খনিজপ্রধান আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয় সেনার মর্মান্তিক মৃত্যু এবং তিন নারী সেনাসহ মোট আটজনের গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

রোববার এক বিবৃতিতে সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন নিহত সেনাসদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। একই সঙ্গে তাঁরা শহীদদের পরিবার, স্বজন ও সেনাবাহিনীর শোকাহত সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে আহত সেনাসদস্যদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়। তাঁদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে সরকার দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলেও সিপিবি আশা প্রকাশ করেছে।

জাতিসংঘের শান্তি মিশনে বাংলাদেশের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘের অধীন বিভিন্ন শান্তি মিশনে বাংলাদেশ নিষ্ঠা, পেশাদারি ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে। দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে শান্তি মিশনে অংশ নেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হামলার ঘটনায় জড়িত ভাড়াটে সন্ত্রাসী সংগঠন আরএসএফ এবং তার প্রধান পৃষ্ঠপোষক সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ কী পদক্ষেপ নেয়, তা বাংলাদেশের মানুষ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইউরোপজুড়ে অভিবাসনবিরোধী বক্তব্য ও নীতি জোরালো হচ্ছে

ইউরোপজুড়ে অভিবাসনবিরোধী মনোভাব তীব্র হয়ে উঠছে। গত বছরে অভিবাসনবিরোধী মনোভাব পোষণকারী হাজারো মানুষ ‘ওদের দেশে ফেরত পাঠাও!’ স্লোগান দিয়ে লন্ডনের রাস্তায় মিছিল করেছে। যুক্তরাজ্যের এক আইনপ্রণেতা অভিযোগ করেছেন, তিনি এখন টেলিভিশনে অশ্বেতাঙ্গ মুখ দেখছেন বেশি। দেশটির শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিবিদেরাও অভিবাসীদের দেশছাড়া করার পক্ষে কথা বলছেন।

যুক্তরাজ্য ও ইউরোপজুড়ে অভিবাসী ও অভিবাসী–বংশোদ্ভূতদের প্রকাশ্যভাবে দানব হিসেবে উপস্থাপনের প্রবণতা ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে অভিবাসন উঠে আসছে। এ বিষয় নিয়ে প্রচারে থাকা ডানপন্থী দলগুলোর জনপ্রিয়তাও বাড়ছে।

ইউরোপের কয়েকটি দেশে অভিবাসনকে জাতীয় পরিচয়ের জন্য হুমকি হিসেবে তুলে ধরা রাজনৈতিক দলগুলো জনমত জরিপে শীর্ষে বা শীর্ষের কাছাকাছি অবস্থান করছে। এসব দলের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্যের রিফর্ম ইউকে, জার্মানির অলায়েন্স ফর জার্মানি ও ফ্রান্সের ন্যাশনাল র‍্যালি।

ইউরোপে বাড়ছে বিভাজনের অনুভূতি

গত এক দশকে ইউরোপের কয়েকটি দেশে অভিবাসন নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। এর পেছনে আংশিকভাবে রয়েছে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেনের সংঘাত থেকে পালিয়ে আসা লাখ লাখ আশ্রয়প্রার্থীর ইউরোপে আসার বিষয়টি। তবে মোট অভিবাসনের তুলনায় আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈচিত্র্য ও অভিবাসনের প্রতি বিরূপ মনোভাবের পেছনে একাধিক কারণ কাজ করছে। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের পর থেকে অর্থনৈতিক স্থবিরতা, ক্যারিশম্যাটিক জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকদের উত্থান এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভাজনমূলক প্রভাব—সবকিছুই এতে ভূমিকা রেখেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিভাজনের মনোভাবকে আরও উসকে দিয়েছে। বিশেষ করে এক্স (সাবেক টুইটার), যেখানে অ্যালগরিদম বিভাজনমূলক কনটেন্টকে প্রাধান্য দেয় এবং যার মালিক ইলন মাস্ক কট্টর ডানপন্থী পোস্ট সমর্থনসূচকভাবে রিটুইট করেন।

ইউরোপজুড়ে ডানপন্থী দলগুলোর মধ্যে জার্মানির অলায়েন্স ফর জার্মানি, ফ্রান্সের ন্যাশনাল র‍্যালি এবং হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের ফিদেজ পার্টি জাতিগত জাতীয়তাবাদকে উৎসাহ দিচ্ছে। এখন তা ট্রাম্প প্রশাসনের সমর্থনও পাচ্ছে। এই শত্রুতাপূর্ণ ভাষা বহু ইউরোপীয় রাজনীতিবিদদের মনে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

বর্ণবাদী বক্তব্য বাড়ছে

যেসব নীতি একসময় চরমপন্থী বলে বিবেচিত হতো, সেগুলোই এখন দৃঢ়ভাবে রাজনৈতিক এজেন্ডায় জায়গা করে নিয়েছে। জনমত জরিপে নিয়মিত শীর্ষে থাকা কট্টর ডানপন্থী দল রিফর্ম ইউকে বলছে, ক্ষমতায় এলে তারা অভিবাসীদের স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা কেড়ে নেবে—এমনকি তারা যদি দশকের পর দশক যুক্তরাজ্যে থেকেও থাকে। বিরোধী দল কনজারভেটিভরা বলছে, যেসব দ্বৈত নাগরিকত্বধারী ব্রিটিশ নাগরিক অপরাধ করবে, তাদের দেশছাড়া করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ