চট্টগ্রামের ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও তাঁর স্ত্রী শারমিন তামান্নাকে খুনসহ আরও দুটি মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) আবেদন করা হয়েছে। গতকাল রোববার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চান্দগাঁও থানা-পুলিশ এ আবেদন করে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জুলাই অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট এলাকায় ছাত্রলীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ) ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের হামলায় ফজলে রাব্বী নিহত হওয়া এবং নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর বাড়ির সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় করা দুটি মামলায় সাজ্জাদ ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছে পুলিশ। শুনানির তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।

রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, সাজ্জাদ রাজশাহী এবং তাঁর স্ত্রী ফেনী কারাগারে রয়েছেন। তাঁদের হাজির করে শুনানি হবে, নাকি ভার্চ্যুয়ালি হবে, তা আদালত নির্ধারণ করবেন। রাষ্ট্রপক্ষের মত, আসামিরা দুর্ধর্ষ হওয়ায় নিরাপত্তার কারণে ভার্চ্যুয়ালি শুনানি হলে ভালো হয়।

পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, সাজ্জাদ ১০টি হত্যাসহ মোট ১৯টি মামলার আসামি। তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধেও একাধিক হত্যাসহ ৮টি মামলা রয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে ৪টি হত্যা মামলায় উচ্চ আদালত থেকে তাঁরা জামিন পেয়েছেন। তবে ওই আদেশ চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে চট্টগ্রামের আদালতে পৌঁছালে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

গত ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিং মল থেকে সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছুড়ে’ সাজ্জাদকে জামিনে মুক্ত করার কথা উল্লেখ করে তামান্নার একটি বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তাঁকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আরও পড়ুনচট্টগ্রামের ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদকে রাজশাহী, স্ত্রী তামান্নাকে ফেনী কারাগারে স্থানান্তর২৫ নভেম্বর ২০২৫

এদিকে সাজ্জাদ কারাগারে থাকলেও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনীর তৎপরতা থেমে নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। বাহিনীর অন্তত অর্ধশত সদস্য খুন, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। সাজ্জাদের অনুপস্থিতিতে মোহাম্মদ রায়হান, মোবারক হোসেন ইমন, বোরহান উদ্দিন কাদের ও নাজিম বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে পুলিশের ভাষ্য।

গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর গণসংযোগ চলাকালে একটি গলিতে গুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থলে নিহত হন সরোয়ার হোসেন বাবলা নামের এক সন্ত্রাসী। তাঁর বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সরোয়ারকে গুলি করা হয়। তবে ভিড়ের মধ্যে গুলি চালানো শুটারকে এখনো শনাক্ত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সন ত র স

এছাড়াও পড়ুন:

হাঁসফাঁস আলোনসোর রিয়ালের স্বস্তির জয়

চাকরি বাঁচানোর তীব্র চাপের মুখে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ কোচ জাভি আলোনসো অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। রেলিগেশন অঞ্চলের কাছাকাছি থাকা আলাভেসের বিপক্ষে রবিবার রাতে ২-১ গোলে জয় পেয়েছে তারা। তবে, এই জয় ছিনিয়ে আনতে লস ব্ল্যাঙ্কোসদের যে পরিমাণ ঘাম ঝরাতে হলো, তাতে স্প্যানিশ মিডিয়ায় কোচের ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা পুরোপুরি থামলো না।

চ্যাম্পিয়নস লিগে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে হারের পর এই ম্যাচটি ছিল রিয়ালের জন্য ‘মাস্ট উইন’ পরিস্থিতি। জানুয়ারির পর লা লিগায় প্রথম গোল করে ব্রাজিলিয়ান তারকা রদ্রিগোই ৭৬তম মিনিটে নাটকীয়ভাবে দলের তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করেন।

আরো পড়ুন:

রিয়ালের ৪ তারকা ফুটবলার নিষিদ্ধ

এমবাপ্পের জোড়া গোলে রিয়ালের দাপুটে জয়

চোটের কারণে সিটি ম্যাচে বাইরে থাকা কিলিয়ান এমবাপ্পে এই ম্যাচে ফিরলেও, তার পারফরম্যান্সে শারীরিক অস্বস্তি স্পষ্ট ছিল। যদিও খেলার শুরুর ১০ মিনিটে ফরাসি তারকা দু’বার গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন। একটি শট অল্পের জন্য বারের পাশ দিয়ে যায়। অন্যটি ক্রসবারের উপর দিয়ে উড়ে যায়।

তবে ২৪তম মিনিটে দলের লিড এনে দেন এমবাপ্পেই, যা ছিল মাদ্রিদের জার্সিতে তার ৭০তম গোল। রদ্রিগো বলের দখল নিয়ে জুড বেলিংহামকে পাস দেন এবং ইংলিশ মিডফিল্ডারের বাড়ানো বলে বাকি কাজ সারেন এমবাপে।

এমবাপ্পের গোলের পর রিয়াল আরেকটি গোল করেছিল। কিন্তু কর্নার কিক নেওয়ার আগে বল বেলিংহামের হাতে লাগায় সেটি বাতিল হয়। প্রথমার্ধে রিয়ালের ত্রাতা হন থিবো কোর্তোয়া, যিনি পাবলো ইবানেজের নিশ্চিত গোল রুখে দেন।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই রিয়াল ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পায়। কিন্তু আলাভেসের গোলরক্ষক আন্তোনিও সিভেরা রিয়াল তারকা এমবাপ্পে ও ফিরতি শটে ভিনিসিয়ুসের প্রচেষ্টা ডাবল সেভ করে হতাশ করেন। ৬৯তম মিনিটে আলাভেস অবশ্য সমতা ফিরিয়েছিল। ভিসেন্তে থ্রু বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দারুণ ফিনিশিংয়ে জাল কাঁপান এবং ভিএআর চেকের পর গোল বহাল থাকে।

সমতা ফেরার পর চাপ বাড়তে থাকলে একসময় রাউল আসেনসিও গোলমুখের সামনে দাঁড়িয়ে লুকাস বয়েসের শট রুখে দিয়ে রিয়ালকে রক্ষা করেন। অবশেষে ৭৬তম মিনিটে মুক্তি মেলে। বাঁদিক থেকে জনির নিচু ক্রস বক্সের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে রদ্রিগো জোরালো শটে লা লিগায় নিজের গোলখরা কাটান এবং দলকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। তবে গোল করার কিছুক্ষণ পরই ব্যথা নিয়ে মাঠ ছাড়েন এই ব্রাজিলিয়ান।

ম্যাচের একদম শেষে ভিনিসিয়ুস বক্সের মধ্যে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টির দাবি তোলে রিয়াল। কিন্তু রেফারি ও ভিএআর সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে। স্টপেজ টাইমে ব্রাহিম দিয়াজ ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। তাতে ২-১ ব্যবধানের স্বস্তির জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে রিয়াল।

টানা দুই ম্যাচ হারের পর জয় পাওয়ায় ১৭ ম্যাচ শেষে রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট দাঁড়াল ৩৯। শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার (৪৩) সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান তারা চারে বজায় রাখল।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ