ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলের আরেকটি গ্রাম দখলের দাবি করেছে রাশিয়া। রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তাদের বাহিনী ফ্রন্টলাইন শহর হুলিয়াইপোলের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ভারভারিভকা গ্রামটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। খবর আনাদোলু এজেন্সির।

গত ১ ডিসেম্বর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সামরিক কমান্ড পোস্ট সফরের সময় রাশিয়ান কমান্ডার আন্দ্রেই ইভানায়েভ দাবি করেছিলেন, রুশ বাহিনী হুলিয়াইপোল গ্রামে প্রবেশ করে এর উপকণ্ঠে অবস্থান নিয়েছে।

আরো পড়ুন:

ন্যাটোতে যোগদানের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করলেন ইউক্রেনের জেলেনস্কি

ইউক্রেনের ১০ লাখেরও বেশি পরিবার বিদ্যুৎবিহীন

তবে ইউক্রেন দুই দিন পরই এই দাবি অস্বীকার করে। ইউক্রেনীয় সামরিক মুখপাত্র ভ্লাদিস্লাভ ভলোশিন জানান, রুশ সেনারা হুলিয়াইপোল শহরের যোগাযোগ ও সরবরাহ পথ বিচ্ছিন্ন করে শহরটি ঘিরে ফেলার চেষ্টা করছে।

এদিকে ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ দাবি করেছেন, হুলিয়াইপোলসহ আশপাশের এলাকায় রুশ বাহিনীর ১৯টি হামলা প্রতিহত করেছে তাদের সেনারা। তবে বিবৃতিতে ভারভারিভকা গ্রাম নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। 

আনাদোলু জানিয়েছে, চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে রাশিয়ার দাবির স্বাধীন যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

২০২২ সালে যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রিমিয়া, লুহানস্ক, ডোনেস্ক, জাপোরিঝিয়া এবং খেরসন অঞ্চলের বেশিরভাগ অংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে, এছাড়াও খারকিভ, সুমি ও দনিপ্রোপেত্রোভস্কের কিছু অংশও তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যা ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণ অংশ জুড়ে বিস্তৃত এলাকা। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রাশিয়া এই অঞ্চলগুলোর সংযুক্তির ঘোষণা দেয়। তবে পশ্চিমা দেশগুলো এবং কিয়েভ এটিকে প্রহসন বলে খারিজ করে দিয়েছে। ইউক্রেনের ক্রিমিয়া ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার দখলে রয়েছে।

ঢাকা/এএএম/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ ইউক র ন ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে আরও এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে মারধর, অপহরণচেষ্টা ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

আজ রোববার বাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান গ্রেপ্তার আবেদন মঞ্জুর করেন। পরে এ মামলায় তুরিনের পক্ষে জামিন শুনানি করেন আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন।

শুনানিতে আইনজীবী বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়িত্ব পালনের কারণে তাঁর (তুরিন আফরোজ) বিরুদ্ধে বারবার মামলা দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনের হত্যা ও হত্যাচেষ্টা এবং সর্বশেষ আজ অপহরণ ও মারধরের অভিযোগে মোট ছয়টি মামলা হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে তুরিন আফরোজকে আদালতে এনে হাজতখানায় রাখা হয়। হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আদালতের উদ্দেশে হাজতখানা থেকে বের করা হয়। এ সময় তাঁর দুই পাশে দুই হাত ধরে রাখেন পুলিশের নারী সদস্যরা। সামনে ও পেছনে ছিলেন ১৫ থেকে ২০ জন পুলিশ সদস্য। নবম তলার ৩২ নম্বর আদালতে তোলার সময় তাঁকে হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়। আদালতের কাঠগড়ায় তোলার সময় তাঁর মাথার হেলমেট খুলে রাখা হয়। বিচারের জন্য অপেক্ষাধীন থাকা অবস্থায় আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

পরে জানানো হয়, ৩৩ নম্বর আদালতে শুনানি হবে। আবারও হেলমেট ও জ্যাকেট পরিয়ে ৩৩ নম্বর আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের একজন আইনজীবী হাসিখুশির কারণ জানতে চেয়ে দূর থেকে প্রশ্ন করলে তিনি কোনো জবাব দেননি। পরে আদালতে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়।

পরে বিচারকের অনুমতি নিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়িত্ব পালনের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে বারবার মামলা দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা হয়েছে। এ মামলার অভিযোগ ২০২২ সালের। অভিযোগ আনা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রভাব খাটিয়েছেন তিনি। কিন্তু তিনি ২০১৯ সালে ট্রাইব্যুনাল থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিন বছর পর কীভাবে তিনি প্রভাব খাটাবেন? তখন তো তাঁর হাতে কোনো ক্ষমতাই নেই।

আইনজীবী বলেন, ‘তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা। হয়রানি করার জন্য মিথ্যা অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। তিনি অসুস্থ, জামিন পেলে পলাতক হবেন না। যেকোনো শর্তে তাঁর জামিন আবেদন করছি।’

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. কাইয়ুম হোসেন নয়ন বলেন, তুরিন আফরোজ বাদীর কাছ থেকে ৭৮ লাখ টাকায় দুটি বাস কিনেছেন। কিন্তু সব টাকা পরিশোধ না করে বাস নিয়ে যান। বাকি টাকা চাইতে গেলে তুরিন আফরোজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রভাব খাটিয়ে বাদীকে হুমকি দেন এবং বাদীর বাসায় গিয়ে ভাঙচুরের পর তাঁর মেয়েকে অপহরণের চেষ্টা করেন। ২০২২ সালে মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়নি। পরে তিনি আদালতে মামলা করেন।

শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১ জুলাই দুটি বাস কেনার জন্য বাদীর সঙ্গে ৭৮ লাখ টাকার চুক্তি করেন আসামি তুরিন আফরোজ। এরপর আসামি ৪৮ লাখ টাকা পরিশোধ করে অবশিষ্ট টাকা ২৪ মাসের মধ্যে পরিশোধ করবেন বলে বাস দুটি নিয়ে যান। পরে আসামি কোনো কিস্তির টাকা পরিশোধ না করে বাদীকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেন এবং মারধর করে পেশার প্রভাব দেখান।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল বাদী আসামির কাছে আবার টাকা চাইলে আসামির নির্দেশে ২৫ থেকে ৩০ জন অজ্ঞাতানামা সন্ত্রাসী বাদীর বাসায় গিয়ে বাদীকে অস্ত্রের মুখে মারধর করেন এবং বাদীর সাত বছরের কন্যাসন্তানকে অপহরণের চেষ্টা করেন। ওই সময় বাদী ৯৯৯–এ কল দিলে পুলিশের উপস্থিতিতে বাদীর কন্যাসন্তানকে বাসার বাইরে রেখে যান।

ওই ঘটনায় ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল নাবিশা এন্টারপ্রাইজের প্রতিষ্ঠাতা মনজুর আলম নাহিদ বাদী হয়ে অপহরণচেষ্টা, মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে আদালতে মামলাটি করেন।

গত ৭ এপ্রিল রাতে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডের বাসা থেকে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তাঁর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার সিএমএম আদালত। এর পর থেকে তিনি কারাগারে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলাকালে ২০১৩ থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রসিকিউটরের দায়িত্বে ছিলেন তুরিন আফরোজ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে আরও এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো
  • শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গিয়ে ‘আমরা জমিদার’ বলা সেই কর্মকর্তার পদোন্নতির আবেদন
  • হৃদ্‌রোগীদের জন্য সুখবর, চমেক হাসপাতালে নতুন ক্যাথল্যাব