গুমের মামলায় ১২ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ পেছাল
Published: 14th, December 2025 GMT
গুমের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় সাবেক ও বর্তমান ১২ সেনা কর্মকর্তাসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হবে কি না, সে বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য ছিল রোববার। তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ এদিন এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি। ১৮ ডিসেম্বর এ মামলায় আদেশ দেওয়ার দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
বিচারপতি মো.
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) গুম করে রাখার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় ১৩ আসামির মধ্যে তিনজন গ্রেপ্তার আছেন। তাঁরা হলেন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী। রোববার তাঁদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।
আদেশের তারিখ পরিবর্তনের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে এক ব্রিফিংয়ে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন বলেন, অনেকগুলো মামলা থাকায় ট্রাইব্যুনাল সময় পাননি।
এ মামলার ১০ আসামি পলাতক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচজন মহাপরিচালক (ডিজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আবেদিন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী ও মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক।
পলাতক আসামিদের মধ্যে আরও আছেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ তৌহিদুল উল ইসলাম, মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মখছুরুল হক। এ ছাড়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকও এ মামলার পলাতক আসামি। তাঁদের পক্ষেও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীরা অব্যাহতির আবেদন করেছেন।
দুই সেনা কর্মকর্তার মামলাও পিছিয়েছেজুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অপর একটি মামলায় দুই সেনা কর্মকর্তাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানিও রোববার অনুষ্ঠিত হয়নি। ২১ ডিসেম্বর এ মামলায় শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
এ মামলার দুই আসামি গ্রেপ্তার আছেন। তাঁরা হলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম। তাঁরা জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) দায়িত্ব পালন করেন।
হেনরী–জিয়াউলের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ১৫ ফেব্রুয়ারিমানবতাবিরোধী অপরাধের আরেকটি মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীর বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
এ ছাড়া গুমের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেকটি মামলায় রোববার সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১৫ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ ন ধ র য কর ম নবত ব র ধ কর মকর ত অপর ধ র র বব র
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের তামাশা
মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায় পর্যন্ত পাকিস্তানিরা আশা করেছিল, চীন হয়তো তাদের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের চীন সফরে মধ্যস্থতা করে তাদের সেই আশা আরও প্রবল হয়েছিল। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, পাকিস্তানের প্রধান লক্ষ্য ও শেষ পর্যন্ত প্রবল আশা ছিল, যা তারা প্রকাশ্যে দেখাচ্ছিল, তা হলো চীন শেষ পর্যন্ত তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। কিন্তু এটি ছিল একটি তামাশা। কারণ, চীনারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা সামরিকভাবে যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করবে না। সব ধরনের কূটনৈতিক সহায়তা দেবে।
রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক আলোচনায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান এই মন্তব্য করেন।
ডেইলি স্টার ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয় ও ব্যক্তির অবদান তুলে ধরতে ‘ইতিহাস আড্ডা’ শীর্ষক ধারাবাহিক আলোচনার আয়োজন করেছে। এটি ছিল সপ্তম আয়োজন। কবি ইমরান মাহফুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচক ছিলেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও অধ্যাপক নাভিন মুর্শিদ। অসুস্থতার কারণে আরেক আলোচক গবেষক–সাংবাদিক মঈদুল হাসান আসতে পারেননি।
চীনের তামাশা, যুক্তরাষ্ট্রের নাটকঅধ্যাপক রেহমান সোবহান মুক্তিযুদ্ধকালে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, চীন পাকিস্তানের সঙ্গে যে তামাশা করছিল, সেই নাটক সাজিয়ে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। চীনকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, যেন তারা যুদ্ধে যোগ দেয়। চীন যখন যুদ্ধে আসছিল না, তখন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে পাঠানোর হুমকি দেয়। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের নৌবহরকে মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি লক্ষ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। সপ্তম নৌবহর আর আসেনি। এর পরিণতিতেই নিয়াজির চূড়ান্ত আত্মসমর্পণ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান।
‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক ইতিহাস আড্ডায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান। রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে