ব্র্রিটেনে শীতের মৌসুমে যখন অন্য পেশার মানুষ উৎসবের আনন্দে ব্যস্ত, তখন বিপরীত চিত্র দেখা যায় শিক্ষকসমাজে। অতিরিক্ত কাজের চাপে ক্লান্ত, অসুস্থ, প্রায় ‘জম্বি’র মতো দিন পার করা—এই বাস্তবতাই শিক্ষকদের দৈনন্দিন রুটিনে পরিণত হয়েছে। জনপ্রিয় ধারণার বাইরে, স্কুল ছুটির সময়েও শিক্ষকদের বিশ্রাম খুব কমই মেলে।

ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের স্কুলগুলোতে শিক্ষকদের কর্মপরিবেশ যে ক্রমেই সংকটপূর্ণ হয়ে উঠছে, তা নতুন করে উঠে এসেছে ফোর ডে ইউক ফাউন্ডেশনের (4 Day Week Foundation) সাম্প্রতিক আহ্বানে। সংস্থাটি বলছে, শিক্ষকদের জন্য চার দিনের কর্মসপ্তাহ চালু করা এখন ‘বিলাসিতা নয়, বরং টিকে থাকার প্রয়োজনীয়তা’।

ট্রেডস ইউনিয়ন কংগ্রেসের (টিইউসি) তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে দুজনের মধ্যে একজন শিক্ষক সপ্তাহে গড়ে ২৬ ঘণ্টা বিনা পারিশ্রমিকে অতিরিক্ত কাজ করেন। দেশের যেকোনো পেশার মধ্যে এটি সর্বোচ্চ। হিসাব করলে দেখা যায়, বছরে শিক্ষকের বেতন প্রায় ১৫ হাজার পাউন্ড কমে যায়—যা এনএএসইউডব্লিউটি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক প্যাট্রিক রোচ ‘ডে-লাইট রবারি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ছবি: এআই/প্রথম আলো.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র

এছাড়াও পড়ুন:

জাতিসংঘের ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সবুজের বাড়িতে শোকের মাতম

সুদানের আবেই এলাকায় অবস্থিত জাতিসংঘের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী সদস্য নিহত হন। তাদেরই একজন গাইবান্ধার সবুজ মিয়া (২৮)। 

নিহত সবুজ মিয়া পলাশবাড়ী উপজেলার মহদিপুর ইউনিয়নের ছোট ভগবানপুর পূর্ব পাড়া গ্রামের মৃত হাবিদুল ইসলাম ও ছকিনা বেগমের ছেলে। তার মৃত্যুর খবরে পলাশবাড়ীতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পরিবার, স্বজন ও গ্রামবাসীর কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।

মহদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দা ফিরোজ আকন্দ জানান, ২০০০ সালে সবুজ মিয়া মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে লন্ড্রি কর্মচারী হিসেবে যোগ দেন।

তিনি আরো বলেন, এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবুজ ছিলেন ছোট। তার বড় বোনের বিয়ে হয়েছে। তিনি ১৭ মাস আগে নাটোর জেলায় বিবাহ করেন। বর্তমানে তার স্ত্রী ও মা বর্তমানে বাড়িতে আছেন। তিন মাস আগে ছুটিতে বাড়িতে আসেন। এরপর গত মাসের ৭ নভেম্বর পুনরায় কর্মস্থলে যোগ দেন তিনি। এক মাস ৭ দিন পর তার মৃত্যুর খবর আসে।

নিহত সবুজের মা ছকিনা বেগম রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, আমার ছেলের বয়স যখন দুই বছর, তখন আমি আমার স্বামীকে হারাই। অভাবের সংসারে অনেক কষ্ট করে দুই সন্তানকে বড় করি। সেকারণে ছোট বেলাতেই সেনাবাহিনীতে চাকরিতে প্রবেশ করে সে। সন্তানকে হারিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। এখন আমার ও তার স্ত্রীর দায়িত্ব কে নেবে?

নিহতের স্ত্রী নুপূর আক্তার বলেন, মাত্র দেড় বছর আগে বিয়ে হয় আমাদের। সংসারের মায়া-মমতা শুরুর আগেই আমি আমার স্বামীকে হারালাম। আমি সরকারের প্রতি আবেদন জানাই, যাতে দ্রুত আমার স্বামীর লাশ দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা করে। 

এ বিষয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ জানান, নিহতের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। দ্রুত এ বিষয়ে আমাদের তেমন কিছু করার নেই। সরকার এবং সেনাবাহিনী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। আশা করি, দ্রুতই লাশ নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হবে।  

সুদানের আবেই অঞ্চলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর আনুমানিক ৩টা ৪০ মিনিট থেকে ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী ড্রোন হামলা চালায়। এতে দায়িত্ব পালনরত ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন এবং আরো আটজন আহত হয়।

ঢাকা/মাসুম/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ