Samakal:
2025-09-17@22:52:50 GMT

অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত

Published: 7th, February 2025 GMT

অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত ও দেশত্যাগ করে ভারতে আশ্রিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করিয়া রাজধানীর ‘ধানমন্ডি ৩২ নম্বর’ বলিয়া পরিচিত সড়কে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনসহ সমগ্র দেশের বিভিন্ন জনপদে যেই ভাঙচুরের অঘটন চলিতেছে, উহাতে আইনশৃঙ্খলার অবনতিই স্পষ্ট হইয়াছে। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা হইতে বিক্ষোভকারীরা ইতিহাসের অনেক ঘটনার সাক্ষী ঐ ভবনের সম্মুখে একত্র হইয়া হস্তচালিত বিভিন্ন দেশীয় সরঞ্জাম দিয়া ভাঙচুর শুরু করে। পরে ‘বুলডোজার’ দিয়া বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ভবনটি ধসাইবার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ভবনটি ভাঙ্গিয়া ফেলিবার অযুত আলোকচিত্র ও ভিডিওচিত্র সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়াইয়া পড়িয়াছে। অনেক সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিতও হয়। তদুপরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলাকারীগণকে নিবৃত্ত করিতে পারিল না কেন– এই প্রশ্ন রহিয়া যাইবে। আমরা জানি, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে প্রথম দফায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার ভবনটি উহার পূর্বে ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর’রূপে ব্যবহৃত হইয়া আসিতেছিল, যাহা ঐ দিনের পর হইতে একপ্রকার পরিত্যক্তই ছিল। তাহার পরও উহাতে হামলার ঘটনা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নাজুকতাই তুলিয়া ধরিবে।
কেবল ধানমন্ডির ভবনটি নহে; ইহার সহিত বিভিন্ন জেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁহার পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের ম্যুরাল ভাঙচুর, নামাঙ্কিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামফলক, আওয়ামী লীগের স্থানীয় দপ্তর ও নেতৃবৃন্দের বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চলিয়াছে। বৃহস্পতিবার অত্র সম্পাদকীয় রচনাকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটিয়াছে। এই ধরনের হামলা ও ভাঙচুর যে অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত; বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের এক বিবৃবতিতে তাহা বলা হইয়াছে। উক্ত বিবৃতিতে ৩২ নম্বরের ভবন ভাঙচুরের ঘটনাকে শেখ হাসিনার সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়া আখ্যা দেওয়া হইয়াছে। স্বীকার্য, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাইতে যেই ধরনের গণহত্যা চালাইয়াছিল, সেই ক্ষোভ মানুষের মনে রহিয়াছে। যেই কারণে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যুক্ত হইয়া ছাত্রসমাজের উদ্দেশে ভাষণ দিবার ঘোষণার পরই ছাত্র-জনতার এই প্রতিক্রিয়া আমরা দেখিয়াছি। শেখ হাসিনার বক্তব্যকে ‘উস্কানি’রূপে গ্রহণ করিলেও উহার বিপরীতে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচিই প্রত্যাশিত ছিল। হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিকাণ্ড কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নহে।

আমরা মনে করি, দেশে যেহেতু সরকার রহিয়াছে, কোনো পক্ষেরই আইন স্বহস্তে তুলিয়া লইবার অবকাশ নাই। অস্বীকার করা যাইবে না, আওয়ামী লীগের দেড় দশক ধরিয়া মানুষ যেইভাবে জুলুম-নিপীড়নের  শিকার ও অধিকারহারা হইয়াছিল, তাহাতে ঐ সরকার পতনের পরপরই দেশজুড়িয়া বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুর অস্বাভাবিক ছিল না। ঐ সময় কোনো সরকার বিদ্যমান না থাকিবার কারণে জনরোষ হইতে ঐগুলি রক্ষারও উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ ছিল না। ৮ আগস্ট যেহেতু অভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার শপথ লইয়াছে, সেহেতু তৎপরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাগত উন্নতিই প্রত্যাশিত ছিল। ইহাও স্মরণে রাখিতে হইবে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার অভ্যুত্থানকারী পক্ষগুলির অভিপ্রায়েই গঠিত হইয়াছে। সরকার যাহাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখিতে পারে, তজ্জন্য সকলের সহযোগিতা কাম্য। 
অস্বীকার করা যাইবে না, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর হইতেই নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করিয়া আসিতেছে। নানামুখী আন্দোলনসহ দেড় দশকের পুঞ্জীভূত সংকটের মধ্যেও তাহারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করিয়াছে। বুধবারও যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় উপযুক্ত ব্যবস্থা গৃহীত হইত, তাহা হইলে খোদ সরকারের ভাষাতেই এইরূপ অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত হামলার ঘটনা এড়ানো যাইত। আমরা মনে করি, ভবিষ্যতে এই ধরনের কর্মকাণ্ড কঠোর হস্তে নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নাই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র হইয় ছ ধ নমন

এছাড়াও পড়ুন:

‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি

‎নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল  সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।

সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে  একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য। 

সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের  গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি,  সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।

‎‎মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

‎দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।

‎‎জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।

‎‎এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।

‎‎তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।

‎‎এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
  • নুরুল হকের ওপর হামলার ঘটনায় জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
  • ১৭ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ, নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই হাজার সদস্য
  • ফরিদপুরে অবরোধ শনিবার পর্যন্ত স্থগিত
  • শরীয়তপুরের সেই বিদ্যালয়টি অবশেষে ভেঙেই পড়ল পদ্মা নদীতে
  • তিন ভবনেই ১৫টি, রাজনৈতিক দলের কার্যালয় কেন পল্টনকেন্দ্রিক
  • আসন্ন নির্বাচনে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের