আজহারীর মাহফিলকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি চলছে: হারুনুর রশিদ
Published: 7th, February 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সংসদ ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হারুনুর রশিদ বলেছেন, আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি আমার বাড়ির কাছে একটি তাফসীর মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে মিজানুর রহমান আজহারী আসবেন। মাসব্যাপী জেলাজুড়ে প্রচার চলছে। আর মাসব্যাপী চাঁদাবাজিও চলছে। সমস্ত জায়গায় চাঁদাবাজি চলছে। ব্যাংক, শিল্পকারখানায় চাঁদাবাজি এবং মানুষের বাড়ি বাড়িতে গিয়ে চাঁদাবাজি চলছে।
শুক্রবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের টাউন হাইস্কুল মাঠে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর বিএনপির ১৫ নম্বর ওয়ার্ড আয়োজিত আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেঁড়ে নিয়েছিল, সারা দেশে তাদের নির্মম পরিণতি হয়েছে এবং জনগণের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। হারাম টাকা দিয়ে তারা যেসব বাড়িঘর ও স্থাপনা নির্মাণ করেছিল সেগুলো আজ বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কারণ, দীর্ঘ পনেরো বছর তারা দেশের মানুষকে গুম করেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যা করেছে এবং হাজার হাজার মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে বাড়িছাড়া করেছে। তার বহি:প্রকাশ এখনো থেমে নেই।
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, প্রফেসর ইউনূসের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে স্বল্পতম সংস্কারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে যতদূত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হোক। কিন্তু এখনো দৃশ্যমান নির্বাচনের ব্যাপারে সরকারের কোনো আগ্রহ আছে কি না তা প্রতীয়মান হচ্ছে না। সরকারের জায়গা থেকে এখনো সুস্পষ্ট কোনো ঘোষণা নেই। তাই আমরা দাবি করবো যতদ্রুত সম্ভব নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। নির্বাচনের পথে হাঁটুন। জনগণের মধ্যে স্বস্তি ও আশ্বাস ফিরিয়ে দেন। জনগণের আকাংঙ্খা, তারা তাদের নির্বাচিত প্রার্থী নির্বাচিত করবে এবং সব সমস্যা সংসদে নিরসন হবে। সংস্কার একটি দীর্ঘ ও চলমান প্রক্রিয়া। তাই সংস্কার কার্যক্রম চলবে এবং পাশাপাশি দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রাও আমাদের শুরু করতে হবে।
এ সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিল মাসিদুল হক নিখিলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল বারেক, থানা কৃষক দলের সদস্য সচিব তাসেম আলী, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক তবিউল ইসলাম তারিফ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান অনু, যুবদল নেতা মজিবুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক জামিউল হক সোহেল ও সাংগঠনিক সম্পাদক সামিরুল ইসলাম পলাশ ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন আক্তার, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সারোয়ার জাহান ও সহ-সভাপতি মিম ফজলে আজিমসহ প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ম জ ন র রহম ন আজহ র প ইনব বগঞ জ ব এনপ র জনগণ র
এছাড়াও পড়ুন:
৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান
জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, “দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী কিংবা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে।”
আরো পড়ুন:
বরগুনায় জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মামুন
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
রবিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।
প্রতিটি নির্বাচনী আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “দেশের প্রতিটি সংসদীয় আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য এবং জনপ্রিয় প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও প্রতিটি মানুষকে নিশ্চয়ই মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব নয়। ভিন্ন রাজনৈতিক দলের যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে রাজপথের সঙ্গী ছিলেন, এমন প্রার্থীকেও বিএনপি সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
এই বাস্তবতার কারণে হয়তো কিছু সংসদীয় সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থকদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে আপনারা এই বাস্তবতাকে মেনে নেবেন।”
জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয়, সন্দেহ গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, “দেশে প্রতিনিয়ত একের পর এক নিত্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী নাগরিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।”
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, “পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনোই আগ্রহ ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জনমনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?... এমন তো হবার কথা ছিল না।”
বিএনপির বিজয় ঠেকাতে অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।”
শুধু বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ‘ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিগত ১৫ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।”
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান জানান, তবে বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা থাকায় সে সংকট কাটিয়েছে তার দল।
তারেক রহমান বলেন, “দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যতটুকু সম্ভব, যতটুকু যথাসাধ্য সম্ভব আমাদের অবস্থান থেকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।”
দেশে নারীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সামাজিক উদাসীনতা প্রকট হয়ে উঠছে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ সংক্রান্ত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন তুলে ধরে বলেন, “নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপত্তাহীন সমাজ নিশ্চয়ই সভ্য সমাজ হিসেবে গণ্য হতে পারে না।”
সেজন্য তিনি জাতীয়তাবাদী মহিলা দলসহ বাংলাদেশের সচেতন নারী সমাজকে তাদের দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অনলাইনে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ এবং তার ফি পরিশোধের প্রক্রিয়া নিয়ে একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়। তাতে বলা হয়, এখন থেকে বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকে অনলাইনে বিএনপির দলীয় ওয়েবসাইটে গিয়ে সদস্যপদ গ্রহণ করা যাবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, এ জে ড এম জাহিদ হাসান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ