বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পিএইচডি থাকলেও বিসিএস শিক্ষাসহ অন্য ক্যাডারে নেই কেন
Published: 9th, February 2025 GMT
বাংলাদেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পিএইচডি থাকলেও বিসিএস সাধারণ শিক্ষাসহ অন্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের কেন পিএইচডি থাকে না, এর উত্তর পাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিসিএস ক্যাডারদের পদোন্নতি ও নিয়োগ বিধিমালায় চোখ বোলাতে হবে।
শিক্ষাসহ সিভিল সার্ভিসের অন্য ক্যাডারদের চাকরি স্থায়ীকরণ ও পদোন্নতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়োগ ও পদোন্নতির মধ্যে বেশ কিছু কাঠামোগত পার্থক্য রয়েছে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের বড় অংশ কলেজে পাঠদান করলেও তাঁদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ শিক্ষা-সংক্রান্ত বিভিন্ন দপ্তর ও শিক্ষা বোর্ডে কর্মরত। ফলে অন্য ক্যাডারের মতো তাঁরাও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা গবেষণা ও শিক্ষাদানে নিয়োজিত থাকেন। ফলে বিসিএস ক্যাডারদের ক্ষেত্রে পিএইচডি ডিগ্রি বাধ্যতামূলক নয়, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় উচ্চপর্যায়ের পদোন্নতির জন্য পিএইচডি গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুনকলেজশিক্ষকদের পদোন্নতি পেতে লাগবে গবেষণা০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫বিসিএস ক্যাডারদের চাকরি স্থায়ীকরণ ও পদোন্নতি নীতিমালাবিসিএস ক্যাডারদের চাকরি স্থায়ীকরণ ও পদোন্নতির জন্য নির্দিষ্ট বিধি অনুসরণ করতে হয়। প্রাথমিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা প্রবেশনারি (প্রশিক্ষণকাল) অবস্থায় থাকেন এবং সন্তোষজনক কর্মদক্ষতা প্রদর্শনের পর স্থায়ী নিয়োগ পান।
স্থায়ীকরণের শর্তাবলি
১.
২. বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষা: বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) কর্তৃক তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়
ক. আইন ও বিধি (প্রথম পত্র)
খ. হিসাব (দ্বিতীয় পত্র)
গ. সংশ্লিষ্ট ক্যাডারভুক্ত কার্যক্রম–সংক্রান্ত বিষয়াবলি
পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া আবশ্যক।
৩. বনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স: নির্ধারিত বনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স (Foundation Training Course-FTC) সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক।
আরও পড়ুনআয়ারল্যান্ড দিচ্ছে স্কলারশিপ, সুযোগ পাবেন যাঁরা১ ঘণ্টা আগেশিক্ষকতাউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র স থ য় করণ প এইচড
এছাড়াও পড়ুন:
বাবাকে দেওয়া কথা রেখেছেন, ৬৯ বছর বয়সে করেছেন পিএইচডি
সময়টা ১৯৯৯ সাল। মরিশাস থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পাড়ি জমান নিদ্যানন্দ রায়া। উদ্দেশ্য ছিল স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করা। বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, জীবনে যত দিন পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন, তত দিন পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন তিনি।
এরপর দুই দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। বাবাকে দেওয়া সেই কথা রেখেছেন নিদ্যানন্দ। এখন তাঁর বয়স ৬৯ বছর। এ বয়সে এসে মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটি থেকে সামাজিক নীতি বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। নামের শুরুতে ‘ড.’ শব্দটি যুক্ত করেছেন।
এ অর্জন কেমন লাগছে? প্রশ্নের জবাবে নিদ্যানন্দের চটজলদি জবাব, ‘তেমন কিছুই না। এটা জীবনের একটা অর্জন মাত্র।’
বিবিসি রেডিও লন্ডনকে দেওয়া সাক্ষাতকারে নিদ্যানন্দ বলেন, আমি বেশ গরিব পরিবার থেকে এসেছি। আমার বাবা ছিলেন নাপিত। আর মা পরিচারিকার কাজ করতেন। আমি বন থেকে কাঠ, ফলমূল সংগ্রহ করতাম। মা–বাবার বেতন দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় আমাকে স্কুল ছাড়তে হয়েছিল। এসব কারণই আমাকে শৃঙ্খলাবোধ আর জ্ঞান অর্জনের পথে উদ্বুদ্ধ করেছিল।ড. নিদ্যানন্দ এখন লন্ডনের এনফিল্ডে বসবাস করেন। পড়াশোনার জন্যই দেশ ছেড়েছিলেন। বলছিলেন, নিজ দেশে পড়াশোনার সুযোগ সীমিত ছিল। তাই দেশ ছেড়ে এসেছিলেন।
বিবিসি রেডিও লন্ডনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিদ্যানন্দ বলেন, ‘আমি বেশ গরিব পরিবার থেকে এসেছি। আমার বাবা ছিলেন নাপিত। আর মা পরিচারিকার কাজ করতেন। আমি বন থেকে কাঠ ও ফলমূল সংগ্রহ করতাম। মা–বাবার বেতন দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় আমাকে স্কুল ছাড়তে হয়েছিল। এসব কারণই আমাকে শৃঙ্খলাবোধ আর জ্ঞান অর্জনের পথে উদ্বুদ্ধ করেছিল।’
যুক্তরাজ্যকে ‘সুযোগের ভূখণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করে নিদ্যানন্দ বলেন, ‘এটি এমন একটি জায়গা, যেখানে আপনি স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারেন।’
স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর নিদ্যানন্দ সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার প্রস্তাব পান। কিন্তু সেখানে কাজের সুযোগ না থাকায় সেটা করতে পারেননি।
মাঝের সময়টায় যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হওয়ার জন্য কঠিন সংগ্রাম করতে হয়েছে নিদ্যানন্দকে। দীর্ঘ সময় পরিবারের খরচ চালাতে স্কুলশিক্ষক স্ত্রী ল্যাকসোমিকে সহায়তা করতে পারেননি তিনি। বরং স্ত্রীই তখন পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছেন। নিদ্যানন্দ বলেন, ‘তখন আমাকে চাকরি খুঁজে বের করতে হয়েছিল। আমাকে স্থায়ী হতে হয়েছিল। আমাকে সবকিছু করতে হয়েছিল।’
‘এখানে আসার পর আমি গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম। পরে আমাকে একজন পরিচর্যাকারী হিসেবেও কাজ করতে হয়েছে,’ বলেন নিদ্যানন্দ।
নিজের পিএইচডি গবেষণায় নিদ্যানন্দ মৌরিতানিয়ার ক্রেওলের ফরাসিভাষী সম্প্রদায়ের মানুষদের ঔপনিবেশিক–পরবর্তী অভিজ্ঞতার বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এলিনোর কফম্যানের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এই শিক্ষক বলেন, আমি তাঁর সাফল্যে রোমাঞ্চিত। আশা করব, তিনি তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা চালিয়ে যাবেন।নিজের পিএইচডি গবেষণায় নিদ্যানন্দ মৌরিতানিয়ার ক্রেওলের ফরাসিভাষী সম্প্রদায়ের মানুষদের ঔপনিবেশিক–পরবর্তী অভিজ্ঞতার বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।
মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এলিনোর কফম্যানের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন নিদ্যানন্দ। এই শিক্ষক বলেন, ‘আমি তাঁর সাফল্যে রোমাঞ্চিত। আশা করব, তিনি তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা চালিয়ে যাবেন।’
জীবনের উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিষয়ে বলতে গিয়ে কয়েক দশক আগে বাবাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করেন নিদ্যানন্দ। তিনি বলেন, ‘আমি বাবাকে দেওয়া কথা রেখেছি। বাবা, আমি তোমাকে গর্বিত করেছি।’