আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনায় আইনের ব্যত্যয় না ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে দলের সচিব পর্ষদের এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, সারা দেশে গতকাল শনিবার বিশেষ অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনা শুরু করেছে যৌথ বাহিনী।

মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, একটি নির্মম স্বৈরশাসনের অবসানের পর দেশকে স্থিতিশীল করতে এবং জনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ‘ডেভিল’দের নিধন করা অপরিহার্য ছিল। সরকার দেরিতে হলেও সেই কাজ শুরু করেছে, সে জন্য তাদের ধন্যবাদ। পতিত স্বৈরাচারের আস্ফালন ও অপরাধীদের নিরাপদে বিচরণ করার খবর জনমনে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে, যার সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ দেখা গেছে গত কয়েক দিনে। একটি কার্যকর রাষ্ট্রে আইনবহির্ভূত ভাঙচুর গ্রহণযোগ্য না হলেও স্বৈরাচারের নির্লজ্জতা তার পটভূমি তৈরি করেছে এবং ন্যায্যতা তৈরি করেছে।

মহাসচিব আরও বলেন, তবে এ বিশেষ অভিযানে আইনের শাসনের ব্যত্যয় যেন না ঘটে। অপরাধী যত বড়ই হোক, বিচার আইনের মাধ্যমেই হতে হবে। অতীতের অভিজ্ঞতায় বলা যায় যে এ ধরনের অভিযানে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিরপরাধ মানুষ ফেঁসে যায়। তথ্যের গরমিল, গণধরপাকড় ইত্যাদির কারণে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হয়। এ বিষয়গুলোতে সরকারকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান তিনি।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম, মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, কে এম আতিকুর রহমান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইন র

এছাড়াও পড়ুন:

ছিনতাই প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ায় ভৈরব থানায় ওসির জন্য শাড়ি–চুড়ি নিয়ে এলেন জনতা

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ছিনতাই প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে থানায় বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় কয়েক শ জনতা। তাঁরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) জন্য শাড়ি ও চুরি নিয়ে আসেন। আজ শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে এ বিক্ষোভ হয়। ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশকে তিন দিনের আলটিমেটাম দেন তাঁরা। এ সময় থানার ওসি খন্দকার ফুয়াদ (রুহানী) ও জ্যেষ্ঠ উপপরিদর্শক (এসআই) এমদাদুর রহমান বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন।

বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা বলেন, ভৈরব শহরের কোনো সড়ক এখন আর নিরাপদ নেই। কেবল রাতে নয়, দিনেও লোকজন ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে সর্বস্ব খোয়াচ্ছেন।

ছিনতাইকারীরা কেবল মুঠোফোন ও টাকা নিয়ে শান্ত হচ্ছে না, সব দিয়ে দেওয়ার পরও ছুরিকাঘাত করে পথচারীদের রক্তাক্ত জখম করছে। তখন আক্রান্ত ব্যক্তিদের অসহায়ত্ববরণ করতে হয়। শত চেষ্টা করেও ছিনতাই কমানো যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা পদে পদে দৃশ্যমান হচ্ছে। এ অবস্থায় ভৈরবে স্বাভাবিক জীবনযাপন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। পুলিশ সক্রিয় থাকলে পরিস্থিতি এতটা নাজুক হতো না। পুলিশের ক্রমাগত ব্যর্থতার জন্যই উপহার হিসেবে ওসির জন্য শাড়ি ও চুড়ি নিয়ে আসা হয়েছে। ছিনতাই প্রতিরোধে ব্যর্থ হলে, বিশেষ করে ওসি যেন শাড়ি–চুড়ি পরে অফিস করেন।

তিন দিনের ভেতর ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার ও পুরোপুরি ছিনতাই বন্ধ করতে না পারলে পুলিশের বিরুদ্ধে কঠিন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার ঘোষণা দেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। থানায় বিক্ষোভ করার আগে ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য ‘দুর্জয় ভৈরব’ চত্বরে ছাত্র ও যুবসমাজের ব্যানারে সভা হয়। সভায় বক্তব্য দেন মনিরুজ্জামান, আজহারুল ইসলাম, নূরে আলম, শাহরিয়ার মোস্তুফা, মো. রিয়াদ, হান্নান আহমেদ, মো. জিহাদ, ভুক্তভোগী ফারদিন আহমেদ প্রমুখ।

ওই সভায় বক্তারা বলেন, আগে ভৈরবের ১ নম্বর সমস্যা ছিল মাদক। ভৈরবে মাদক কমেনি, বেড়েছে। তারপরও এখন ছিনতাইকে ভৈরবের ১ নম্বর সমস্যা ধরা হয়। ছিনতাই ইস্যুতে ভৈরবের ঘরে ঘরে আতঙ্ক। সমস্যা সমাধানে নাগরিক সমাজের নানা উদ্যোগেও প্রত্যাশিত ফল আসছে না। এ ক্ষেত্রে পুলিশও ব্যর্থ। ফলে দিন দিন ছিনতাই না কমে, বরং বাড়ছে। আগে রাতে ছিনতাই হতো, এখন দিনেও হচ্ছে। ভৈরবের বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী বাড়ির লোকজনের প্রত্যক্ষ শেল্টারে ছিনতাইকারীর একাধিক চক্র সক্রিয়। প্রতিবছর ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে এক বা একাধিক ব্যক্তির মৃত্যু হচ্ছে। কোনোটির বিচার হচ্ছে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ