‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ আইনের ব্যত্যয় যেন না ঘটে: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
Published: 9th, February 2025 GMT
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনায় আইনের ব্যত্যয় না ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে দলের সচিব পর্ষদের এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, সারা দেশে গতকাল শনিবার বিশেষ অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনা শুরু করেছে যৌথ বাহিনী।
মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, একটি নির্মম স্বৈরশাসনের অবসানের পর দেশকে স্থিতিশীল করতে এবং জনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ‘ডেভিল’দের নিধন করা অপরিহার্য ছিল। সরকার দেরিতে হলেও সেই কাজ শুরু করেছে, সে জন্য তাদের ধন্যবাদ। পতিত স্বৈরাচারের আস্ফালন ও অপরাধীদের নিরাপদে বিচরণ করার খবর জনমনে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে, যার সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ দেখা গেছে গত কয়েক দিনে। একটি কার্যকর রাষ্ট্রে আইনবহির্ভূত ভাঙচুর গ্রহণযোগ্য না হলেও স্বৈরাচারের নির্লজ্জতা তার পটভূমি তৈরি করেছে এবং ন্যায্যতা তৈরি করেছে।
মহাসচিব আরও বলেন, তবে এ বিশেষ অভিযানে আইনের শাসনের ব্যত্যয় যেন না ঘটে। অপরাধী যত বড়ই হোক, বিচার আইনের মাধ্যমেই হতে হবে। অতীতের অভিজ্ঞতায় বলা যায় যে এ ধরনের অভিযানে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিরপরাধ মানুষ ফেঁসে যায়। তথ্যের গরমিল, গণধরপাকড় ইত্যাদির কারণে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হয়। এ বিষয়গুলোতে সরকারকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান তিনি।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম, মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, কে এম আতিকুর রহমান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইন র
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের
গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।
মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।
এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।
মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।