‘এই গরু পাইল্যা আমার গোবরটাই লাভ হইচে’
Published: 10th, February 2025 GMT
গরুটির ওজন হয়েছে প্রায় ২০ মণ। প্রতি মাসে তাকে গড়ে ছয় হাজার টাকার খাবার দিতে হতো। সেই সঙ্গে পরিচর্যা নিয়ে একজন মানুষকে সারা দিন ব্যস্ত থাকতে হতো। গত কোরবানির ঈদের সময় গরুটির দাম উঠেছিল চার লাখ টাকা। মালিক আশা করেছিলেন ছয় লাখ টাকা। এ জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে এই গরুর ভার তিনি আর বইতে পারছিলেন না।
গতকাল রোববার আটজন মানুষ চারদিকে দড়ি ধরে গরুটাকে গাড়ি থেকে রাজশাহী নগরের সিটি হাটে এনে নামান। তখন সকাল নয়টা। বেলা গড়িয়ে যায়। কিন্তু কেউ এত বড় গরুটির তেমন দামই বললেন না। অবশেষে সিলেটের একজন ব্যবসায়ী দাম হাঁকলেন ৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা; যা কোরবানির ঈদের বলা দামের চেয়ে ২২ হাজার টাকা কম। শেষ পর্যন্ত মালিক ওই দামেই গরুটি বিক্রি করে দিলেন।
এই মালিকের নাম সারফিন শাহ। তাঁর বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলা কালিগ্রামে। প্রত্যাশিত দাম না পেয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটা বড় গরু পালার শখ ছিল। আমার সেই শখ মিট্যা গ্যাছে। এরম আহাম্মুকি আর করব না। আমি মাছ চাষি করি। মাছের খামারে গোবর লাগে। বইলতে গেলে এই গরু পাইল্যা আমার গোবরটাই লাভ হইচে। মাছের জন্য গোবর কিনতে হয়নি।’
সারফিন শাহ ও তাঁর সঙ্গে আসা লোকজনের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, এর আগে কোনো হাটে গরুটি বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাননি। দূরদূরান্তের বড় ব্যবসায়ীরা তার বাড়িতে এসে গরু দেখে গেছেন। গত কোবানির সময় ‘আরিয়ান ডেইরি’ নামের একটি খামারের স্বত্বাধিকারী তাঁর ফেসবুক পেজ থেকে ‘জায়েদ খান’ নাম দিয়ে গরুটি বিক্রি জন্য প্রচার করেছিলেন। কিন্তু তখন জায়েদ খানের দাম চার লাখ টাকার বেশি ওঠেনি। মালিক প্রত্যাশা করেছিলেন ছয় লাখ টাকা। এ জন্য গরুটি না বিক্রি করে রেখে দিয়েছিলেন। কিন্তু খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে তিনি আর পেরে উঠছিলেন না।
বড় আকারের গরুটির দরদাম করতেও আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন না ক্রেতারা। গতকাল রোববার রাজশাহী নগরের সিটি হাটে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চবি ছাত্রদলের ৪২০ জনের কমিটিতে নারী মাত্র ১১
আংশিক কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রদলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ৪২০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে নারী সদস্য রয়েছেন মাত্র ১১ জন। যা শতকরা হিসেবে তাদের অংশগ্রহণের হার মাত্র ২.৬২ শতাংশ।
এর মধ্যে, সহ-সভাপতি পদে একজন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে একজন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একজন, মানবাধিকার সম্পাদক পদে একজন, সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে একজন, ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক পদে একজন এবং সহ-ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক পদে দুইজন।
আরো পড়ুন:
বগুড়ায় স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী আটক
কুমিল্লায় প্রবাসীর স্ত্রীকে মারধর-তালাক, অন্যজনের সঙ্গে বিয়ে
বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে ৬০ জন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ৯২ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক ৬৩ জন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ৬৪ জন এবং সদস্য রয়েছেন ৬২ জন।
এর আগে, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে মো. আলাউদ্দিন মহসিনকে সভাপতি ও আবদুল্লাহ আল নোমানকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি পায় চবি ছাত্রদল। এরপর নানা জটিলতা ও সাংগঠনিক স্থবিরতায় ২ বছর পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারেনি সংগঠনটি। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে ৪২০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, একটি কমিটির মেয়াদ থাকে সর্বোচ্চ ২ বছর। সেখানে চবি ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস পর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করেছে কেন্দ্রীয় সংসদ।
এদিকে, গত ১২ অক্টোবর চাকসু নির্বাচনের আগে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে চবি ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে মোহাম্মদ মামুন উর রশিদ মামুনকে সংগঠনের সদস্য পদসহ স্থায়ী বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় সংসদ। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতির পদটি শূন্য রয়েছে।
পূর্বের আংশিক কমিটিতে সভাপতি ছিলেন মো. আলাউদ্দিন মহসিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও তারা একই পদে বহাল আছেন।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী