সেন্টু-স্বপনের পর দুলাল-নাছির সহ-সভাপতি হবেন : বদু
Published: 11th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ হোসিয়ারি সমিতির পরিচালকদের বেয়ারা নির্বাচনে একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সভাপতি বদিউজ্জামান বদু, সহ-সভাপতি (জেনারেল) আব্দুস সবুর খান সেন্টু ও সহ-সভাপতি (এসোসিয়েট) সাঈদ আহম্মেদ স্বপন।
মঙ্গলবার ৩টায় হোসিয়ারি সমিতির অফিসে বেয়ারা নির্বাচনের ঘোষনা করেন নিবাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম সানি এ সময় উপস্থিত ছিলেন বোর্ডের সদস্য মো.
ওই সময় নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম সানি বলেন, নির্বাচন তফসিল থেকে ভোট গণণা পর্যন্ত সকল শ্রেণী মানুষ আমাদের সহযোগিতা করেছেন। বিশেষ করে হোসিয়ারি সমিতির প্রার্থীতা আমাদের সর্বত্রক সহযোগিতা করেছেন। নির্বাচন সুষ্ঠ ও সুন্দর পরিবেশ করার লক্ষ্যে কঠোরতা সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
এতে অনেকে মনক্ষুন্ন ও অসন্তোষ হয়েছেন, এগুলো আমার একক সিদ্ধান্ত নয়। নির্বাচন যেন বির্তক না হয় সেই জন্য কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আজ বুধবার ১২ ফেব্রুয়ারি সভাপতি, দুই সহ-সভাপতি ও ১৫জন পরিচালককে শপথ বাক্যের মাধ্যমে আগামী হোসিয়ারি সমিতির দায়িত্ব শুরু করবেন নির্বাচিতরা।
ভেন্যু নিয়ে সানি জানান, ভোটারদের আবেদন ও দূর্ভোগ কমাতে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে ভোট গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অনেকে ভুল তথ্য দিয়ে মিডিয়াকে রঙ লাগানো চেষ্টা করা হয়েছিলো। আপনাদের সহযোগিতায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন উপহার দিতে পেরেছি।
নবনির্বাচিত সভাপতি বদিউজ্জামান বদু জানান, নির্বাচন বোর্ড আমাদের যে নির্বাচন উপহার দিয়েছে তার স্মরণীয় হয়ে থাকবে। হোসিয়ারি মালিকরা এমন সুন্দর নির্বাচনের দাবি করেছিলেন। সকলের সহযোগিতায় নির্বাচনটি করতে পারায় আমাদের প্যানেলের সকলে বিজয়ী হয়েছেন।
অনেকে বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব ভেন্যু নিয়ে আমাদের উপর দোষ চাপিয়ে ছিলেন। আসলে আমরা কিছু জানি না। প্রায় সাত আটশত হোসিয়ারি মালিকদের স্বাক্ষরীত আবেদনে প্রেক্ষিতে নির্বাচন বোর্ড নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সংবাদ নিয়ে বদু বলেন, অনেকে অনেক নিউজ করেছেন। আজকেও আমাদের এসোসিয়েট গ্রুপের পরিচালক সাইফুল ইসলাম হিরু ৫০ লাখ টাকা খরচ করে নির্বাচন করেছেন। ৫০ লাখ টাকা কি এক টাকা দুই টাকা, এমন বিভ্রান্ত নিউজ করবেন না দয়া করে।
দুই বছরে চার সহ-সভাপতি নিয়ে বদু বলেন, আপনাদের অবগত করে জানাচ্ছি সহ-সভাপতি আব্দুস সবুর খান ও সাঈদ আহম্মেদ স্বপন এক বছর করে দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর বাকি এক বছরে দুলাল মল্লিক ও নাছির শেখ সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করবেন। সকলকে নিয়ে আমরা হোসিয়ারি সমিতি পরিচালনা করতে চাই।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ক ল ব সহয গ ত কর ছ ন আম দ র করব ন
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!
সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।
একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।
যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।