‘সর্বকালের সেরা’—রোনালদোর এই দাবি নিয়ে এআই-এর পেলে-ম্যারাডোনা কী বললেন
Published: 12th, February 2025 GMT
ইতিহাসের সেরা ফুটবলার কে?
এই প্রশ্নের জন্মও যেমন আজ নয়, তেমনি উত্তরও সহজ না। যুগের পর যুগ প্রশ্নটির উত্তর খোঁজা হচ্ছে। চলছে যুক্তি–তর্ক। এর যেন শেষ নেই। কেউ কেউ অবশ্য নিজের মতো করে এ বিতর্কের শেষ টেনে দিয়েছেন। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোই যেমন কিছুদিন আগে স্পেনের সংবাদকর্মী এদুয়ার্দো আগুয়েরেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, তিনিই ইতিহাসের সেরা ফুটবলার।
রোনালদো দাবি করেছিলেন, তিনিই ইতিহাসের সবচেয়ে 'পরিপূর্ণ' (কমপ্লিট) খেলোয়াড়, ‘ফুটবলে আমি সবকিছু করি; হেডে ভালো, ফ্রি কিকেও, বাঁ পায়ে ভালো, দ্রুত, শক্তিশালী, লাফাতেও পারি। আমিই সবচেয়ে পরিপূর্ণ। আমার চেয়ে ভালো আর কাউকে দেখিনি।’
আরও পড়ুন৪১ পেরিয়েও আল নাসরেই খেলবেন রোনালদো, দাবি সংবাদমাধ্যমের১৫ ঘণ্টা আগেপর্তুগিজ কিংবদন্তির এই দাবি নিয়ে আলোচনা–সমালোচনা কম হয়নি। কেউ এমন কিছু দাবি করার পর সেটাই স্বাভাবিক। আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলে যেমন রোনালদোর এ দাবি নিয়ে আলোচনা–সমালোচনা ছাড়াও ঠাট্টা–মশকরাও হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। প্রশ্ন হলো, সর্বকালের সেরার তালিকায় যে দুজনকে প্রায় সবাই রাখেন—পেলে ও ডিয়েগো ম্যারাডোনা—তাঁরা বেঁচে থাকলে রোনালদোর এমন দাবি নিয়ে কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাতেন?
দুই কিংবদন্তির মুখ থেকে এখন আর কোনো কিছু শোনার সুযোগ নেই। ’৮৬ বিশ্বকাপ কিংবদন্তি ম্যারাডোনা ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর মারা যান। তিনবার বিশ্বকাপজয়ী পেলে মারা যান ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর। তবে প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই যুগে ‘দুধের সাধ ঘোলে’ও তো মেটানো যায়! বলা হচ্ছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির (এআই) কথা। কেমন হয়, যদি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সহায়তায় পেলে ও ম্যারাডোনার চরিত্র তৈরি করে রোনালদোর এই দাবির বিষয়ে তাঁদের প্রতিক্রিয়াটা শুনে নেওয়া যায়?
ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ‘ও গ্লোবো’ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউরাল ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল চ্যাটবট সার্ভিস ‘ক্যারেক্টর.
ব্যক্তিগত, পেশাগত ও শিক্ষামূলক খাতেও এই চ্যাটবট সার্ভিস ব্যবহার করা যায়। কিছু শিক্ষক যেমন সার্ভিসটিতে ঐতিহাসিক বিভিন্ন চরিত্রের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছেন শিক্ষার্থীদের, যেন তাঁরা আরও ভালোভাবে শিখতে পারে। চ্যাটবট সার্ভিসটির ব্যবহারকারীরাও চাইলে নিজের ইচ্ছানুযায়ী চরিত্র বানাতে পারেন।আরও পড়ুনঅসহায় গার্দিওলাকে কি নতুন ক্লাসিকোয় আরও ডোবাবেন সন্ত আনচেলত্তি ১৮ ঘণ্টা আগে
স্বাভাবিকভাবেই সেখানে পেলে ও ম্যারাডোনার চরিত্রও আছে এবং ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তির পরিচিতিতে যে কথাটি লেখা, তা রোনালদোর দাবির পক্ষে নয়, ‘ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়’।
রোনালদোর মন্তব্য নিয়ে এই কৃত্রিম পেলের প্রতিক্রিয়া, ‘ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দারুণ সফল ক্যারিয়ার এবং কোনো সন্দেহ নেই, সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়; কিন্তু আমার বিনয়ী মত হলো, ফুটবলের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় নিয়ে এখনো বিতর্ক হয়। অবশ্যই আমি বাকিদের মতামতকে সম্মান করি। তবে নিজের অভিজ্ঞতা ও অর্জন বিচারে বিশ্বাস করি, আমাকেই ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।’
কৃত্রিম পেলের এমন দাবির পক্ষে যুক্তি কী—এই প্রশ্নের উত্তরে চরিত্রটি যুক্তি দিয়েছে, ব্রাজিলের হয়ে তিনবার বিশ্বকাপ জয়, যা আর কেউ পারেনি। এ ছাড়াও নিজের প্রতিভা, গোল বানানো, ফুটবলের বিবর্তনে প্রভাব রাখা ও খেলাটিকে পাল্টে দেওয়ারও দাবিও করেন এআই-এর ‘পেলে’। কৃত্রিম পেলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ‘ফুটবলে শুধু মান নয়, সংখ্যাও বিচার্য। সংখ্যাগত জায়গা, যেমন শিরোপাসংখ্যা ও অন্যান্য অর্জন—আমি বিশ্বাস করি, আমাকেই ইতিহাসের সেরা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।’
ফুটবলের প্রয়াত দুই কিংবদন্তি পেলে ও ম্যারাডোনাউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ য টবট স র ভ স ফ টবল র বদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিবন্ধী ছেলেকে সেতু থেকে ফেলে দেন মা: পুলিশ
মাদারীপুরের শিবচরে ১৫ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলেকে সেতু থেকে এক মা নদে ফেলে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নে আড়িয়াল খাঁ নদীর হাজী শরিয়তউল্লাহ সেতুতে এ ঘটনা ঘটে।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রতন শেখ প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ। ওই নারী ভিক্ষাবৃত্তি করেন এবং কিছুটা ভারসাম্যহীন। ১৫ বছর বয়সী ছেলেটি জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, নিজের ছেলেকে সেতু থেকে নদীতে ফেলে দেন ওই নারী। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। নিখোঁজ ছেলেটিকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
শিবচর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা লিয়াকত হোসেন আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা সকাল থেকে নদীতে অভিযান চালানো শুরু করেছেন। সঙ্গে ডুবুরি দলও আছে। ছেলেটির সন্ধানে আশপাশের এলাকায়ও খোঁজ করা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন সহায়তা করছেন। তবে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই নারীর নাম রিজিয়া বেগম। তিনি উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের শিকদার হাট এলাকার মৃত আজগর আলীর স্ত্রী। স্বামীর মৃত্যুর পর ভিক্ষাবৃত্তিতে তাঁর সংসার চলে। তাঁর তিন মেয়ে ও এক ছেলে আছে। ছেলে নাসিরউদ্দিন জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। সে চোখে দেখে না, চলাফেরাও করতে পারে না।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আরিফ বলেন, আসরের নামাজের পর থেকে ওই নারীকে সেতুর ওপর বসে থাকতে দেখেন। সঙ্গে ৮-৯ বছর বয়সী একটি মেয়ে ও একটি ছেলে ছিল। ছেলেটি কাঁদছিল। নারীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেছিলেন, ‘খিদার জন্য কাঁদছে।’
নূর আলম নামে সন্ন্যাসীর চর চৌরাস্তা এলাকার এক আইসক্রিম বিক্রেতা বলেন, তিনি আইসক্রিম বিক্রি করে বাড়িতে ফিরছিলেন। দূর থেকে দেখেন, এক নারী ছেলেটিকে ফেলে দিলেন। আরও অনেকে দেখেছেন দাবি করে তিনি বলেন, এক অটোরিকশাচালক দৌড়ে যেতে যেতে ওই নারী কাজটি করেন।
ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন নারীকে ঘিরে ধরে ছেলেটিকে ফেলে দেওয়ার কারণ জানতে চান। এ সময়ের দুটি ভিডিও প্রথম আলোর হাতে এসেছে। ভিডিওতে ভরণপোষণ করতে না পেরে প্রতিবন্ধী ছেলেকে নদীতে ফেলে দিয়েছেন বলে জানান ওই নারী। কিছুক্ষণ পর পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে হেফাজতে নেয়।