নিজস্ব ক্যাম্পাস করাসহ নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে বস্ত্র অধিদপ্তরে নেওয়ার দাবি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল হতে টানা সেখানে অবস্থান করছেন তারা। 

এর আগে মঙ্গলবার প্রায় ৪ ঘণ্টা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। মঙ্গলবার রাত হতে টানা আজ বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দিনেও চলছে এ কর্মসূচি।  

নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, নিজস্ব ক্যাম্পাস করাসহ তাদের কলেজকে বস্ত্র অধিদপ্তরে নেওয়ার দাবিতে দীর্ঘ ৭ মাস ধরে দফায় দফায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ-সমাবেশ, মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। তাদের এ ন্যায় সঙ্গত দাবি না মেনে গত সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এক সপ্তাহের মধ্যে কলেজটির শিক্ষার্থীদের টাঙ্গাইলের কালিহাতির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সংযুক্ত হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন:

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটি স্থগিত, আন্দোলন প্রত্যাহার  

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন 
কমিটি বাতিলের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

কলেজের কার্যক্রম বন্ধ করে নেওয়া এমন সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। জনভোগান্তির কথা বিবেচনা করে অবরোধ তুলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। দিন ও রাতে টানা সেখানে অবস্থান করবেন বলে তারা জানিয়েছেন। 

টাঙ্গাইলে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত বাতিল করে নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে বস্ত্র অধিদপ্তরের আওতায় নিয়ে পরিচালনা, অস্থায়ী ক্যাম্পাসে নতুন সেশনে ভর্তি কার্যক্রম চালু রাখা, নিজস্ব ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করা, শিক্ষক নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চলমান থাকবে বলে জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক রাশেদুল হোসেন চৌধুরী জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে তাদের তিনি কথা বলেছেন। সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
 

ঢাকা/হৃদয়/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ