জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, গণহত্যা চালানো আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করার আর বিন্দু পরিমাণ অধিকার রাখে না। শহীদ ভাইয়ের লাশের শপথ নিয়ে বলছি, আওয়ামী লীগ যদি আর কোনো আপত্তিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে, আমাদের শরীরের শেষ রক্তবন্ধু দিয়ে আমরা তাদের বিরুদ্ধে লড়ে যাব।

বুধবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গাজীপুরের সংঘাতে নিহত কাশেমের জানাযায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রতি আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে আগুন লাগাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন কাশেম। শহীদ মিনারে জানাজা ও কফিন মিছিলের আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

কফিন মিছিলে অংশ নিয়ে আখতার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ মুক্তির ৬ মাস পেরিয়েছে। আমাদের ভাইকে কুপিয়ে আহত করা হলো। এতটাই অসুস্থ হয়ে গেলেন যে তিনি শহীদ হলেন। আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা ত্রাসের রাজত্ব করেছিল। আমরা বিগত ফ্যাসিবাদের সময়ের আয়না ঘর দেখেছি। ২ ফিট বাই ৪ ফিট রুমে আমাদের ভাইদের রেখেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় অভ্যুত্থানের সময়ও আমাদের ভাইদের আয়না ঘরে রাখা হয়েছিলো। আমাদের ভাইকে হত্যার পেছনে যারা সক্রিয়, হুমকি দিয়েছে, পরিকল্পনা করেছে তারা সবাই পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ।’

আখতার বলেন, জাতিসংঘের রিপোর্টে আমরা দেখেছি, পুলিশ শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশ গণহত্যা করেছিল, মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল। ভারতে থাকুক আর যেখানেই থাকুক; দেশীয় শক্তি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সব শক্তিকে কাজে লাগিয়ে অবশ্যই শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচার করতে হবে।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে আর কী প্রয়োজন প্রশ্ন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আজকে আয়না ঘর উন্মোচিত হয়েছে। জাতিসংঘের রিপোর্টের মাধ্যমে হাসিনা যে সরাসরি গণহত্যায় জড়িত, সে বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে, ছয় মাস পরেও আমাদের আওয়ামী লীগের দোসরদের হাতে নিহত হতে হয়। গণতন্ত্রকামী ও ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলের এটা সামগ্রিক ব্যর্থতা। আমরা এতদিনেও সুবিচার নিষিদ্ধ করতে পারি নাই।’ 

তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনাদের আর কি লাগবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে?’

হাসনাত বলেন, ‘আমরা দেখছি, কালচারাল এক্টিভিজম, শ্যাডো একটিভিজমের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করেছে। এখন সেটার বৈধতা উৎপাদন করছে। আমাদের সার্বভৌমত্ব রেখে আওয়ামী লীগ নিজের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেছিল। হয় আওয়ামী লীগ থাকবে, না হয় আমরা থাকব। আমরা একসঙ্গে থাকতে পারি না।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘৬ মাস পরেও বিপ্লবীদের শহীদ হতে হচ্ছে। ৬ মাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি করল? আজকে আমাদের ভাইয়ের রক্তকে সামনে রেখে শপথ করতে হবে। গাজীপুরের মোজাম্মেল, জাহাঙ্গীর রাসেলের জন্যে আমাদের ভাই শহীদ হলেন। যারা নতুন করে আওয়ামী লীগের পক্ষে জনমত তৈরি করছে, তাদেরও বিচার করতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম দ র ভ ই র জন ত কর ছ ল আখত র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান

ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা ও নিষ্ঠুরতম বর্বরতা থেকে রক্ষা করতে অবিলম্বে পরিপূর্ণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। 

আজ বুধবার ফিলিস্তিন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। 

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ইসরায়েল এ পর্যন্ত ৫৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে গণহত্যা অব্যাহত রেখেছে। তিনি ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী সকলকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠনই বলছে, ‘গাজায় গণহত্যা চলছে’

ফিলিস্তিন সংকট সমাধান: সবার দৃষ্টি জাতিসংঘের বিশ্ব সম্মেলনে

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন পুর্নব্যক্ত করে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি স্থাপনের একমাত্র পথ হিসেবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের লক্ষ্যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। 

গাজা পুনর্গঠনে আরব পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের নেতৃত্বে গাজা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে প্রস্তত রয়েছে। তিনি গাজায় জাতিসংঘের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম বাধা দেয়ার যেকোনো প্রচেষ্টা সর্বাত্বকভাবে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান।

২০২৩ সালের অক্টোবরের পর হতে গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি আক্রমণের প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি একাত্মতা প্রকাশ এবং একটি স্থায়ী সমাধানের পথ সুগম করতে জাতিসংঘের সদস্যদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করার জন্য ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ‘জাতিসংঘ হাইলেভেল ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর দ্য পিসফুল সেটেলমেন্ট অব দ্য কোয়েশ্চেন অব প্যালেস্টাইন অ্যান্ড দ্য ইমপ্লিমেন্টেশন অব দ্য টু-স্টেট সল্যুশন’ শীর্ষক মন্ত্রী পর্যায়ের এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

এতে বাংলাদেশসহ ১১৮টি দেশের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করছে।

ঢাকা/হাসান/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান
  • ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান
  • গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬০ হাজার ছাড়াল
  • গণহত্যার বিচারের পর পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দাবি রেজাউল করীমের