১০ মিনিটে অন-অ্যারাইভাল ভিসা দেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 13th, February 2025 GMT
বিদেশিদের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসা সেবা সহজ করতে একটি অ্যাপ উদ্বোধন করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, “অন-অ্যারাইভাল ভিসা পেতে অনেক সময় লাগে; ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা সময় লাগে। যে সিস্টেম (অ্যাপ) করা হচ্ছে, সেটা কার্যকরী হলে ৫-১০ মিনিটে অন-অ্যারাইভাল ভিসা পেয়ে যাবেন।”
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিদেশিদের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসা বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “কিছু দেশ আছে, যারা অন-অ্যারাইভাল ভিসা পায়। কিন্তু, এই ভিসা পেতে কারো ৪৫ মিনিট বা ১ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। আমরা নতুন যে সিস্টেম করেছি, সেটা হলো—সেবাগ্রহীতা মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে অন-অ্যারাইভাল ভিসা পেয়ে যাবেন। এই ভিসা পেতে তারা আমাদের অনলাইনে আবেদন করে যাবতীয় তথ্য দিয়ে রাখবেন। পরে একটি কোড পাবেন তারা। এই কোড এয়ারপোর্টে দেখিয়ে ডলারে পেমেন্ট করলেই তিনি ৫ থেকে ১০ মিনিটের ভিসা পাবেন। এ সিস্টেমই আজ চালু হলো। এই ভিসার মেয়াদ হবে ১ মাস।”
তিনি বলেন, “সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দিতে যে সময়টুকু লাগবে, শুধু সে সময়টাই ব্যয় হবে। কার্ড এবং ক্যাশে ভিসার জন্য পেমেন্ট করা যাবে।”
উপদেষ্টা আরো বলেন, “পাসপোর্ট যাতে সহজে পাওয়া যায়, সেজন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে। ভেরিফিকেশন থাকলেও যাতে আরো সহজে পাসপোর্ট পাওয়া যায়, সে চেষ্টা করছি। তবে, ভেরিফিকেশন বাদ দেওয়ার চেষ্টাই থাকবে।”
র্যাব বিলুপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “একটা প্রস্তাব তারা (জাতিসংঘ) দিয়েছে। আমরা সবাই বসব। বসার পর আমাদের যা ডিসিশন (সিদ্ধান্ত), সেটা আমরা জানাব।”
প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো.
ঢাকা/এএএম/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাবাকে দেওয়া কথা রেখেছেন, ৬৯ বছর বয়সে করেছেন পিএইচডি
সময়টা ১৯৯৯ সাল। মরিশাস থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পাড়ি জমান নিদ্যানন্দ রায়া। উদ্দেশ্য ছিল স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করা। বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, জীবনে যত দিন পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন, তত দিন পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন তিনি।
এরপর দুই দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। বাবাকে দেওয়া সেই কথা রেখেছেন নিদ্যানন্দ। এখন তাঁর বয়স ৬৯ বছর। এ বয়সে এসে মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটি থেকে সামাজিক নীতি বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। নামের শুরুতে ‘ড.’ শব্দটি যুক্ত করেছেন।
এ অর্জন কেমন লাগছে? প্রশ্নের জবাবে নিদ্যানন্দের চটজলদি জবাব, ‘তেমন কিছুই না। এটা জীবনের একটা অর্জন মাত্র।’
বিবিসি রেডিও লন্ডনকে দেওয়া সাক্ষাতকারে নিদ্যানন্দ বলেন, আমি বেশ গরিব পরিবার থেকে এসেছি। আমার বাবা ছিলেন নাপিত। আর মা পরিচারিকার কাজ করতেন। আমি বন থেকে কাঠ, ফলমূল সংগ্রহ করতাম। মা–বাবার বেতন দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় আমাকে স্কুল ছাড়তে হয়েছিল। এসব কারণই আমাকে শৃঙ্খলাবোধ আর জ্ঞান অর্জনের পথে উদ্বুদ্ধ করেছিল।ড. নিদ্যানন্দ এখন লন্ডনের এনফিল্ডে বসবাস করেন। পড়াশোনার জন্যই দেশ ছেড়েছিলেন। বলছিলেন, নিজ দেশে পড়াশোনার সুযোগ সীমিত ছিল। তাই দেশ ছেড়ে এসেছিলেন।
বিবিসি রেডিও লন্ডনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিদ্যানন্দ বলেন, ‘আমি বেশ গরিব পরিবার থেকে এসেছি। আমার বাবা ছিলেন নাপিত। আর মা পরিচারিকার কাজ করতেন। আমি বন থেকে কাঠ ও ফলমূল সংগ্রহ করতাম। মা–বাবার বেতন দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় আমাকে স্কুল ছাড়তে হয়েছিল। এসব কারণই আমাকে শৃঙ্খলাবোধ আর জ্ঞান অর্জনের পথে উদ্বুদ্ধ করেছিল।’
যুক্তরাজ্যকে ‘সুযোগের ভূখণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করে নিদ্যানন্দ বলেন, ‘এটি এমন একটি জায়গা, যেখানে আপনি স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারেন।’
স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর নিদ্যানন্দ সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার প্রস্তাব পান। কিন্তু সেখানে কাজের সুযোগ না থাকায় সেটা করতে পারেননি।
মাঝের সময়টায় যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হওয়ার জন্য কঠিন সংগ্রাম করতে হয়েছে নিদ্যানন্দকে। দীর্ঘ সময় পরিবারের খরচ চালাতে স্কুলশিক্ষক স্ত্রী ল্যাকসোমিকে সহায়তা করতে পারেননি তিনি। বরং স্ত্রীই তখন পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছেন। নিদ্যানন্দ বলেন, ‘তখন আমাকে চাকরি খুঁজে বের করতে হয়েছিল। আমাকে স্থায়ী হতে হয়েছিল। আমাকে সবকিছু করতে হয়েছিল।’
‘এখানে আসার পর আমি গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম। পরে আমাকে একজন পরিচর্যাকারী হিসেবেও কাজ করতে হয়েছে,’ বলেন নিদ্যানন্দ।
নিজের পিএইচডি গবেষণায় নিদ্যানন্দ মৌরিতানিয়ার ক্রেওলের ফরাসিভাষী সম্প্রদায়ের মানুষদের ঔপনিবেশিক–পরবর্তী অভিজ্ঞতার বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এলিনোর কফম্যানের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এই শিক্ষক বলেন, আমি তাঁর সাফল্যে রোমাঞ্চিত। আশা করব, তিনি তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা চালিয়ে যাবেন।নিজের পিএইচডি গবেষণায় নিদ্যানন্দ মৌরিতানিয়ার ক্রেওলের ফরাসিভাষী সম্প্রদায়ের মানুষদের ঔপনিবেশিক–পরবর্তী অভিজ্ঞতার বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।
মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এলিনোর কফম্যানের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন নিদ্যানন্দ। এই শিক্ষক বলেন, ‘আমি তাঁর সাফল্যে রোমাঞ্চিত। আশা করব, তিনি তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা চালিয়ে যাবেন।’
জীবনের উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিষয়ে বলতে গিয়ে কয়েক দশক আগে বাবাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করেন নিদ্যানন্দ। তিনি বলেন, ‘আমি বাবাকে দেওয়া কথা রেখেছি। বাবা, আমি তোমাকে গর্বিত করেছি।’