উন্নত জীবনের আশা আর জীবিকার সন্ধানে চরম বিপদসংকুল জেনেও অবৈধ পথে প্রতিনিয়ত বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন অসংখ্য বাংলাদেশি। তাঁদের অনেকেরই গন্তব্য ইউরোপের আধুনিক রাষ্ট্র ইতালি। ভীষণ বিপজ্জনক পথে নৌযানে করে ভূমধ্যসাগরের মতো মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ জলপথ পাড়ি দিয়ে উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়া থেকে ইতালিতে যাচ্ছেন বহু বাংলাদেশি। অনেকে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন আবার কেউ কেউ যাত্রাপথে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করছেন। এই পুরো বিপদসংকুল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় আদম পাচারকারী ও দালালদের মাধ্যমে অবৈধ প্রক্রিয়ায়। অনেকেই চরম ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগরের উত্তাল পথ পাড়ি দিয়ে যাওয়ার সময় মারা যান। প্রতিকূল পরিবেশে সীমান্ত ও সমুদ্র পাড়ি দিয়ে নিয়মিত বিরতিতে মৃত্যুর মুখে পড়ছেন সোনার হরিণের আশায় অভিবাসনপ্রত্যাশী হাজারো বাংলাদেশি।

লিবিয়া যাওয়ার পথ

বৈধ পথে যেসব অভিবাসনপ্রত্যাশী কাজের সন্ধানে ইতালি যেতে পারেন না তাঁদের একমাত্র ভরসা আন্তর্জাতিক আদম পাচারকারী ও তাদের সহযোগী দালাল। এসব পাচারকারীর সহায়তায় বিরাট অঙ্কের টাকার বিনিময়ে (১৫ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ পর্যন্ত) বাংলাদেশ থেকে আকাশপথে বিদেশগামীদের নেওয়া হয় দুবাই। দুবাই থেকে তাঁদের পাঠানো হয় তুরস্ক কিংবা মিসর। দালালেরা সেখান থেকে পাঠিয়ে দেয় লিবিয়ায়, পরে লিবিয়া থেকে সমুদ্রপথে যায় ইতালি।

মূলত লিবিয়া থেকে ইতালি যেতে জনপ্রিয় ও বিপজ্জনক তিনটি ধাপ আছে। লিবিয়ায় যাওয়ার পর দালালদের মাধ্যমে তাঁদের একটি দলে ঢোকানো হয়। পরে তাঁদের সাগরে কম্পাস (দিক নির্ণয়ের যন্ত্র) ধরে পথ চেনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ইতালির উদ্দেশে যাত্রা শুরু হয় লিবিয়ার জোয়ারা ও তাজোরা উপকূল থেকে। যাত্রা শুরুর পর প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরাই নৌকা চালাতে শুরু করেন। দালালেরা তখন সঙ্গে থাকেন না। ভূমধ্যসাগরে নৌকা ছাড়ার পর ভাগ্যাহত এসব অভিবাসীর দায়িত্বও কেউ নেয় না। তখন একমাত্র ভরসা ভাগ্যবিধাতা।

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে মারা যাওয়া সুজন হাওলাদারের স্ত্রী মুন্নী বেগমের আহাজারি। সম্প্রতি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার মজুমদারকান্দি এলাকায়.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল কিশোরী, সাপের কামড়ে মৃত্যু

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় সাপের কামড়ে এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের সরেঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের সদস্যরা জানান, রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় ওই কিশোরীকে একটি বিষধর সাপ ছোবল দেয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয় তার।

নিহত কিশোরীর নাম নাঈমা আকতার (১৩)। সে আনোয়ারার রায়পুর ইউনিয়নের সরেঙ্গা গ্রামের বক্সি মিয়াজিবাড়ির মোহাম্মদ হাসানের মেয়ে। স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে।

পরিবারের সদস্যরা জানান, রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে মা ও ছোট বোনের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল নাঈমা। রাত তিনটার দিকে সাপের ছোবলে তার ঘুম ভাঙে। বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানালে তাকে উদ্ধার করে রাতেই আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তবে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক নাঈমাকে মৃত ঘোষণা করেন। জানতে চাইলে নাঈমার চাচা কফিল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন বলেন, ‘সাপে কামড় দিয়েছে জানার পর আমরা নাঈমাকে হাসপাতালে নিয়েছিলাম। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি।’

আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সাপে কামড় দেওয়া এক কিশোরীকে হাসপাতালে আনা হয়ছিল। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ