আমার জন্য বিয়ে যেন আটকে না থাকে : ইনু
Published: 17th, February 2025 GMT
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন হাসানুল হক ইনুর ভাতিজি। আত্মীয়রা চেয়েছিলেন তার উপস্থিতিতে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করতে। তবে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন তিনি। তার কারণে যেন বিয়ে আটকে না থাকে। শুভ কাজ দ্রুত শেষ করতে বলেছেন ইনু।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর থানাধীন গোল চত্বর এলাকায় গুলিতে নিহত আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানির জন্য তাকে আদালতে হাজির করা হয়। আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আইনজীবীর সাথে কথোপকথনের সময় একথা জানান তিনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির ইন্সপেক্টর নাসির উদ্দিন সরকার তার এবং রাশেদ খান মেননেন ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। যাত্রাবাড়ি থানার দুই মামলায় সাবেক ওসি আবুল হাসানকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়।
এদিন সকাল ১০ টা ৫৫ মিনিটের দিকে তাদের আদালতে তোলা হয়। কাঠগড়ায় উঠানোর পর ইনু ও রাশেদ খান মেনন তাদের আইনজীবীর সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। ইনু তার আইনজীবী মোহাম্মদ সেলিমের সাথে কথোপকথনে বলেন, “আমি কারাগারে আছি। ভাতিজির বিয়ে যেন আটকে না থাকে। আগামীকাল বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। তাদেরকে বলে দিও, আমি কারাগারে থাকলেও বিয়ের অনুষ্ঠানে যেন করে ফেলে। শুভ কাজে দেরি করার দরকার নেই।”
১১ টা ১০ মিনিটে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি.
এদিকে শুনানিতে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “ছাত্র আন্দোলনে গণভবনে একটি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জামাত শিবিরকে নিষিদ্ধসহ গুলি করার নির্দেশ প্রদান করা হয়। সেখানে তারা ছিলেন এবং সম্মতি দেন। তাদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। তাহলে আরও তথ্য বের হবে।”
হাসানুল হক ইনুর আইনজীবী মোহাম্মদ সেলিম বলেন, “ইনু ছয় বারের এমপি ছিলেন। বয়স্ক লোক, উনার চিকিৎসা করা প্রয়োজন। উনি ৫০টির বেশি মামলার আসামি। জাসদ থেকে দলীয় সিদ্ধান্ত হয় গভমেন্টে যে ৩০ পার্সেন্ট বা ৫৬ পার্সেন্ট কোটা আছে সেটা যৌক্তিক নয়। তাকে একমাত্র রাজনৈতিক কারণে আটক করা হয়েছে। উনি একজন ক্যারিশমাটিক লোক। দশজন ফুটবলারের মধ্যে একজন। পাকিস্তান আমলে দুই নম্বর গোল রক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।”
এর উত্তরে ওমর ফারুক বলেন, “২০ হাজারের মতো লোক বিভিন্নভাবে গুলি করে হত্যা ও আহত করা হয়েছে। লাখ লাখ মিথ্যা মামলা মানুষকে দেয়া হয়েছে। তিনটা নির্বাচন প্রহসন করে করেছে। ডামি নির্বাচন করেছে। তারা মন্ত্রিসভায় শপথ গ্রহণ করে একটি পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের পাপের স্টেশন হিসেবে বাংলাদেশকে তুলে ধরেছে। বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হাসিনাকে প্রতিদিন খুশি করে রাখা, তোষামোদ করেছে। আপনারা দেখেছেন আজকে জুলাই বিপ্লবের আন্দোলনের সময় ছাত্রদের উপরে কিভাবে গুলি করে হাজার হাজার মানুষকে পঙ্গু করা হয়েছে। গুলি করে যখন শিশু বাচ্চাদের পাখির মতো গুলি করে মারা হয়। একটা ভ্যান গাড়িতে বাচ্চাদের লাশ স্তুপ করে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। একজন পুলিশ কর্মকর্তা তার বাচ্চাকে ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে খুঁজে পায়না। এভাবে বাংলাদেশকে একটা লাশের শহর বা দেশ বানিয়ে ফেলা হয়েছিল। তখন শেখ হাসিনাকে এমন হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে অভয় দেওয়া হয়। এরা দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে নেমেছে। জনগণের কাছে এদের আর খাওয়ানো যাবে না। এদের চরিত্র ও মনোভাব সবাই বুঝে গেছে।”
তিনি বলেন, “একইদিনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে যায়, বাংলাদেশের চিফ জাস্টিস পালিয়ে যায়, বায়তুল মোকাররমের ইমাম পালিয়ে যায়, এখন ঢাকা বারের পিপিও পালিয়ে যায়, ৩০০ এমপি পালিয়ে যায়। এমন বাংলাদেশ তারা তৈরি করেছিল। স্বৈরাচার এরশাদ তো পালিয়ে যায় নাই কিন্তু এরা দেশ থেকে পালিয়ে চলে গেছে। এদের বিচার এদেশের মাটিতে হবে এরা এই ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত।”
ঢাকা/মামুন/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল
বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।
তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।
চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল