শিক্ষার্থীদের দাবি ‘পুরোপুরি মেনে না নেওয়ায়’ উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে বর্জনের ঘোষণা
Published: 19th, February 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষার্থীদের দাবি ‘পুরোপুরি মেনে না নেওয়ায়’ উপাচার্যকে বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালককেও বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
আজ বুধবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে কুয়েট মেডিকেল সেন্টারের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে একটি স্মারকলিপি পাঠাবেন বলে তাঁরা জানান।
সমাবেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা বক্তব্য দিয়েছেন, তাঁরা কেউ নিজেদের নাম ও ব্যাচ বলেননি। এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা এখন অভিভাবকশূন্য আছি। আমাদের কোনো ভিসি, প্রো-ভিসি ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক নেই। অভিভাবকশূন্য ক্যাম্পাসে আমরা হলেই অবস্থান করব।’
এর আগে আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৯৩তম সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকবে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার সম্পৃক্ততা পেলে শিক্ষার্থীদের আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও কোনো ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না।
সিন্ডিকেটের সভায় গতকাল মঙ্গলবার ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়েছে। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এম এম এ হাসেমকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, গতকালের ঘটনায় জড়িত বহিরাগতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আর জড়িত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করবে। আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে। ক্যাম্পাস এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
গতকাল দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
গতকাল রাতে ক্যাম্পাসের মেডিকেল সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না এবং থাকলে আজীবন বহিষ্কারের বিধান রেখে অধ্যাদেশ জারি; গতকালের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা, বহিষ্কারসহ ব্যবস্থা নেওয়া; ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ক্যাম্পাসের বাইরে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের রাখা; আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয় প্রশাসন থেকে বহন করা এবং ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ।
আরও পড়ুনকুয়েটের প্রশাসনিক ভবনসহ সব ভবনে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা৪ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সংঘর্ষে আহত শতাধিক১৮ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপ চ র য র জন ত গতক ল র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে জিডির প্রতিবাদে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের অপসারণ দাবি এবং ২২ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়েরের প্রতিবাদে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে মশালমিছিল শেষে তাঁরা মহাসড়কে বসে পড়েন।
রাত সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অবরোধ চলছিল। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা এই অবরোধে মহাসড়কের উভয় পাশে শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। এ কারণে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
অবরোধকারী শিক্ষার্থীরা সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা ও বর্তমান রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের অপসারণ, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে অপসারণ করা অধ্যাপক মুহসিন উদ্দীনকে পুনর্বহাল, ‘স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের’ জন্য উপাচার্যকে ক্ষমা প্রার্থনা এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে থানায় দায়ের করা সাধারণ ডায়েরি প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের মহাসড়কে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অবরোধ। মঙ্গলবার রাতে