মামুন-জিয়াউলদের মামলা দুই মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ
Published: 20th, February 2025 GMT
জুলাই-আগস্ট গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানসহ ৮ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলার তদন্ত ২ মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দিয়েছেন। এছাড়া চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে একদিন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এরআগে এদিন সকাল ১০ টার দিকে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান, ডিএমপির মিরপুর বিভাগের সাবেক উপকমিশনার (ডিসি) জসিম উদ্দিন মোল্লা, বরখাস্ত হওয়া ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো.
এছাড়া সাবেক পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন ফারুকী ও বরিশাল রেঞ্জের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিনকেও হাজির করা হয়।
শুনানি শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, “আজ ট্রাইব্যুনালে কার্যতালিকায় প্রথমে ছিল পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে। সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ ২৩ জন আসামিকে হাজির করার আদেশ ছিল। সেই মামলায় ৮ জন গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের হাজির করা হয়েছিল ট্রাইব্যুনালে। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রার্থণা করা হয়। আদালত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। ৮ পুলিশ কর্মকর্তার তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন। আগামি ২৮ এপ্রিল পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে।”
ঢাকা/মামুন/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ ল ল হ আল ম ম ন হ জ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)