‘সম্পর্কটা বিয়ের দিকে যাবে নাকি ব্রেক-আপ হবে তা বলা মুশকিল’
Published: 20th, February 2025 GMT
মনোবিদ তথাগত চ্যাটার্জির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ভাঙার পর অনেক দিন নীরব ছিলেন ভারতীয় বাংলা সিনেমার অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী। গত বছরের শেষের দিকে তিনি জানান, নতুন করে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন।
সেই সময়ে প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি ঋতাভরী। এরপর ছবি প্রকাশ করে ঘোষণা দেন— তার প্রেমিকের নাম সুমিত আরোরা। চলতি বছরের শুরুতে জানা যায়, প্রেমিক সুমিতের সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়তে যাচ্ছেন ঋতাভরী চক্রবর্তী। এ নিয়ে আলোচনা হলেও মুখে কুলুপ আঁটেন এই অভিনেত্রী। অবশেষে বিয়ে নীরবতা ভাঙলেন ঋতাভরী।
আলাপচারিতায় জানতে চাওয়া হয়, এ বছরই নাকি বিয়ে করছেন? জবাবে ঋতাভরী চক্রবর্তী বলেন, “এটা কেউ জানে না, আমিও না। কেউ সম্পর্কে থাকলে বিয়ের কথাবার্তা স্বাভাবিকভাবে আসেই। অনেক ওঠা-পড়ার পরও সম্পর্ক বজায় থাকলে বিষয়টা আরো বেশি হয়। আমাদের কয়েকবার ব্রেক-আপ হলেও ফের প্যাচ-আপ হয়েছে। তাই সম্পর্কটা এবার বিয়ের দিকে যাবে নাকি আরো একটা ব্রেক-আপ অপেক্ষা করছে, সেটা বলা মুশকিল। নির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঠিক হলে তা অবশ্যই জানাতাম।”
আরো পড়ুন:
প্রেমে পড়লেও বিয়ে করতে চাই না: শ্রীলেখা
সমাজের চোখরাঙানিতে কিচ্ছু যায়-আসে না: শ্রাবন্তী
এর আগে ভারতীয় একটি গণমাধ্যম জানায়, চলতি বছরের ডিসেম্বরে থাইল্যান্ডে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের নিয়ে ‘ডেস্টিনেশন ওয়েডিং’-এর পরিকল্পনা করেছেন ঋতাভরী। বাঙালি ও পাঞ্জাবি মতে বিয়ে সারবেন এই অভিনেত্রী। বিয়ের অনুষ্ঠান হবে ঘরোয়াভাবে। তবে প্রীতিভোজের আয়োজন জাঁকজমকপূর্ণভাবেই করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। তবে এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি ঋতাভরী।
ঋতাভরীর প্রেমিক সুমিত আরোরা বলিউডের ব্যবসাসফল সিনেমার সংলাপ রচয়িতা। এ তালিকায় রয়েছে শাহরুখ খানের ‘জওয়ান’, শ্রদ্ধা কাপুরের ‘স্ত্রী’, সামান্থা রুথ প্রভুর ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’, কার্তিক আরিয়ানের ‘চান্দু চ্যাম্পিয়ন’ প্রভৃতি।
কিছু দিন আগে পা ভেঙেছে ঋতাভরীর। এখনো পুরোপুরি সুস্থ হননি। তবে আগের চেয়ে এখন অনেক ভালো আছেন বলেও জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
‘ওগো বধূ সুন্দরী’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে টেলিভিশনে আত্মপ্রকাশ করেন ঋতাভরী। ২০১১ সালে ‘তোমার সঙ্গে প্রাণের খেলা’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় পা রাখেন। যদিও চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়নি।
২০১২ সালে মুক্তি পায় তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘তবু বসন্ত’। ঋতাভরী অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো— ‘চতুষ্কোণ’, ‘বারুদ’, ‘পরী’, ‘শেষ থেকে শুরু’, ‘বহুরূপী’ প্রভৃতি।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
মিরাজে দুর্দান্ত জয় বাংলাদেশের
এমন পারফরম্যান্সই তো চাওয়ার থাকে ভালো দলের কাছে। মেহেদী হাসান মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্য, সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরি, তাইজুল ইসলামের ৯ উইকেট শিকারে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল জয় এনে দেয় বাংলাদেশকে। প্রথম টেস্ট হারের পর যে সমালোচনা হয়েছিল, তার জবাবটা বোধ হয় দ্বিতীয় টেস্ট তিন দিনে জিতে দিয়ে দিলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। ‘বাউন্স ব্যাক’ করে সিরিজ ড্র ১-১-এ।
চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে বীরোচিত পারফরম্যান্স ছিল টাইগারদের। এটি সম্ভব হয়েছে পছন্দের উইকেটে খেলা হওয়ায়। স্পিন ভুবনে উইকেট উৎসব করেছেন তাইজুল, মিরাজ গাঁটছড়া বেঁধে। সিরিজ নির্ধারণী টেস্টে দুটি সেঞ্চুরি দারুণ অর্জন অধারাবাহিক ব্যাটিং লাইনআপের। এই টেস্টে ওপেনিং জুটি ভালো করেছে। লম্বা সময় পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া এনামুল হক বিজয় ভালোই সঙ্গ দেন সাদমানকে। লোয়ার মিডলঅর্ডারে মিরাজের লড়াই ছিল দেখার মতো।
টেলএন্ডারদের নিয়ে রীতিমতো বাজিমাত করেছেন তিনি। শেষ ৩ উইকেটে তৃতীয় দিন ১৫৩ রান যোগ করেন। বাংলাদেশকে পৌঁছে দেন ৪৪৪ রানে। ২১৭ রানের লিড থাকায় ইনিংস ব্যবধানে জয়ের স্বপ্ন দেখায়। মিরাজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে সে স্বপ্ন পূরণ হয়। সাকিব আল হাসান ও সোহাগ গাজীর পর তৃতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার তাঁর।
গত বছর দেশের মাটিতে টেস্টে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার পর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। ২০২৫ সালের শুরুটাও ভালো ছিল না। সিলেটে জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছে। সিরিজ বাঁচাতে চট্টগ্রামে জিততেই হতো। লক্ষ্যে পৌঁছাতে কন্ডিশনেও পরিবর্তন আনা হয়। চট্টগ্রামের উইকেটে খেলা হয় দ্বিতীয় টেস্ট। যেখানে শাসন ছিল স্পিনারদের। পছন্দের উইকেট পাওয়ায় তিন স্পিনার নিয়ে খেলে বাংলাদেশ। তিনজনই দারুণ বোলিং করেন প্রথম থেকে।
দীর্ঘ বিরতির পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া অফস্পিনার নাঈম হাসান চ্যালেঞ্জ নিয়ে বোলিং করে গেছেন। বেশি উইকেট না পেলেও এক প্রান্তে ব্যাটারদের চাপে ফেলেছেন। যার সুফল তাইজুল ও মিরাজ পেয়েছেন অন্য প্রান্তে। প্রথম দিন শেষ সেশনে ব্রেক থ্রু দেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনার পরে পিক করে ৬ উইকেট শিকার করেন। জিম্বাবুয়ে ৯ উইকেটে ২২৭ রানে প্রথম দিন শেষ করে। পরের দিন এক বল খেলে ওই রানেই অলআউট হয়। বাংলাদেশ ব্যাটিং শুরু করে বড় লক্ষ্য নিয়ে। সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয় ১১৮ রানের ওপেনিং জুটি করায় প্রতিপক্ষকে ছাড়িয়ে যাওয়া সহজ হয়। সাদমানের সেঞ্চুরি ও মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম কিছু রান করায় ৭ উইকেটে ২৯১ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করে বাংলাদেশ।
সেদিন সংবাদ সম্মেলনে সাদমান আশা প্রকাশ করেন, মিরাজ ও তাইজুল জুটি করবেন। অষ্টম উইকেটে ৬৪ রানের জুটি দু’জনের। বেশি ভালো করেছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। মিরাজের সঙ্গে ১৫৬ বলে ৯৬ রানের জুটি। অভিষেক টেস্টে সাকিবের ব্যাটিং দারুণ লেগেছে অধিনায়ক শান্তর কাছে। ৮০ বলে ৪১ রান করেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা, মাথায় বল লাগার পরও বিচলিত হননি তিনি। মিরাজ ছাড়া চট্টগ্রাম টেস্টের প্রাপ্তি হিসেবে ওপেনিং জুটির ভালো খেলা, সাদমানের সেঞ্চুরি, তাইজুলের ৫ উইকেট শিকার ও সাকিবের রান করাকে মনে করেন শান্ত।
শেষের তিন উইকেটে তৃতীয় দিন প্রায় দুই সেশন ব্যাট করে বাংলাদেশ। তাইজুল, সাকিব ও হাসানকে নিয়ে ১৫৩ রান যোগ করে। মিরাজ ১০৪ রান করে ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে উইকেট দেন। নার্ভাস নাইটির ঘরে প্রবেশ করে কিছুটা ঝুঁকির মুখে ছিলেন মিরাজ। ৯৮ রানে পৌঁছানোর পর সেঞ্চুরি ছুঁতে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ফিল্ডারের কাছে বল চলে যাওয়ায় এক রানে থামতে হয়। তখন স্ট্রাইকে হাসান থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল সবাই। ড্রেসিংরুমে খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফের সবাই দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। কখন হাসান আউট হয়ে যায়, সে ভয় কাজ করছিল হয়তো। কিন্তু হাসান ছিলেন দৃঢ়চেতা। মাসাকাদজাকে ডিফেন্স করে স্বস্তি দেন।
মিরাজ স্ট্রাইকে এসে মেদেভেরের প্রথম দুই বলে ঝুঁকি নেননি। তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ নেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ ও দ্বিতীয় টেস্টের সেরা খেলোয়াড় মিরাজ। প্রথম ম্যাচের উভয় ইনিংসে ৫ উইকেট করে ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে অতীতের সব পারফরম্যান্স ছাড়িয়ে গেছেন। সেঞ্চুরির সঙ্গে ৫ উইকেটপ্রাপ্তি, দুই হাজার রানের মাইলফলক পেয়েছেন। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ২১৭ রানে পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ১১১ রানে। ফ্লাডলাইটের আলো জ্বেলে নির্ধারিত সময়ের বেশি খেলান আম্পায়াররা। প্রায় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খেলা হয়। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটাররা তাতে আপত্তি করেননি। তাইজুল ৩, নাঈম ১ ও মিরাজ ৫ উইকেট নিলে ম্যাচ শেষ হয়।
সিলেটে প্রথম টেস্ট হারের পর চট্টগ্রামে প্রভাব বিস্তার করে খেলে ম্যাচ জেতার পরও খুশি নন অধিনায়ক শান্ত, ‘আমি টেস্ট সিরিজ ড্র করে খুশি না। কারণ, প্রথম টেস্টে আমরা একেবারেই ভালো খেলিনি। এই টেস্টে একপেশে খেলে জিতলেও সিরিজে আরও ভালো খেলা উচিত ছিল। সিরিজটি জিততে হতো।’ টাইগার দলপতি জানান, এই পারফরম্যান্স শ্রীলঙ্কা সফরে কাজে দেবে। দেশের মাটিতে স্পোর্টিং উইকেট বানিয়ে বিদেশে খেলার পরিবেশ তৈরি করছিল বিসিবি। ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হচ্ছে। কিউইদের বিপক্ষে সিলেটে ঐতিহাসিক জয় পেলেও মিরপুর থেকে হারতে শুরু করে। দেশের মাটিতে টানা ছয় হারের পর জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ।