ভারতীয় ধনকুবের সুনীল মিত্তাল টেলিকম কোম্পানি এয়ারটেলের ৫ কোটি ১০ লাখ শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। মোট ৯৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা ৮ হাজার ৪৫৮ কোটি রুপির বিনিময়ে এই শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। এই শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে তিনি নতুন উদ্যোগে বিনিয়োগ করবেন বলে জানানো হয়েছে।

ভারতের পত্রিকা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সংবাদে বলা হয়েছে, সুনীল মিত্তালের ইন্ডিয়ান কনটিনেন্টাল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের এসব শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এসব শেয়ারের প্রায় এক-চতুর্থাংশ কিনে নিয়েছে ভারতী টেলিকম লিমিটেড। মিত্তালের ছেড়ে দেওয়া বাকি শেয়ারও অন্য বিনিয়োগকারীরা কিনে নিয়েছেন। তবে কোন বিনিয়োগকারীরা এসব শেয়ার কিনে নিয়েছেন, তাঁদের তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। গত মঙ্গলবার এসব শেয়ার ১ হাজার ৬৬০ রুপিতে বিক্রি করা হয়েছে। যদিও গত সোমবার এসব শেয়ারের দাম ছিল ১ হাজার ৬৭৫ রুপি।

সুনীল মিত্তাল এখন ভারতের চেয়ে অন্যান্য দেশে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন। এই মুহূর্তে তিনি আফ্রিকা ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্যাটেলাইট কোম্পানি ওয়ান ওয়েবে বিনিয়োগ করছেন।

এদিকে সুনীল মিত্তালের শেয়ার কিনে নেওয়ার মধ্য দিয়ে এয়ারটেলে ভারতী টেলিকমের হিস্যা ৪০ দশমিক ৪৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ভারতী টেলিকম আগেই বলেছিল, এয়ারটেলে নিজেদের অবস্থান তারা আরও শক্তিশালী করবে; অর্থাৎ এই কোম্পানিতে তারা নিজেদের প্রাধান্য বজায় অক্ষুণ্ন রাখবে।

ভারতী টেলিকম এই প্রথম যে মিত্তালের কোম্পানির শেয়ার কিনছে, তা কিন্তু নয়। এর আগে গত বছরের নভেম্বরে তারা ইন্ডিয়ান কনটিনেন্টাল ইনভেস্টমেন্টের আরও ১ দশমিক ২ শতাংশ শেয়ার কিনে নিয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে এয়ারটেলে তাদের একরকম একচ্ছত্র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এসব শ য় র ট ল কম

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ