মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক বলেছেন, বঙ্গবীর জেনারেল আতাউল গণি ওসমানী ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। তার দৃঢ়তা, কঠোর নিয়মানুবর্তিতা, গণতন্ত্রে অবিচলতা, নিপুণ সমর কুশীলতার মাধ্যমে তিনি ১৯৭১ এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সামরিক নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন সব মুক্তিযোদ্ধার আস্থার প্রতীক।

শনিবার ঢাকায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর জেনারেল এম.

এ.জি ওসমানীর ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়েজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। বঙ্গবীর ওসমানী স্মৃতি পরিষদ এই সভা আয়োজন করে।

উপদেষ্টা বলেন, জেনারেল ওসমানী মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ী সর্বাধিনায়ক যার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইতিহাসে বিজয়ী সমর নায়ক হতে পারা একটি বিরল সম্মান এবং সৌভাগ্যের বিষয়। সৃষ্টিকর্তা জেনারেল ওসমানীকে  সেই সম্মানে সম্মানিত করেছেন। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, জাতি তাঁকে কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করবে।

ফারুক ই আজম বলেন, সম্মান ও গৌরবের অধিকারী এরকম ক্ষণজন্মা দেশপ্রেমিক মানুষকে আমরা যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করতে পেরেছি কিনা, এ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গেরিলা ও প্রচলিত যুদ্ধের সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অগ্রনায়ক এবং বাংলাদেশের প্রথম সেনাপ্রধান ও প্রথম জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর অবদান ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, ইতিহাসের সঠিক মূল্যায়ন করা খুবই জরুরি। জেনারেল ওসমানীকে তার যথাযথ সম্মান প্রদান করা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তার অবদান তুলে ধরা আমাদের দায়িত্ব। একটি জাতি যদি নিজেদের ইতিহাস সঠিকভাবে না জানে, তবে তারা সত্যিকার অর্থে উন্নতির পথে এগোতে পারে না।

ওসমানী স্মৃতি পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব) এম আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক সচিব মোফাজ্জল করিম, সাবেক উপদেষ্টা ইফতেখার আহমেদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আসহাব উদ্দিন, সাবেক সচিব এহছানে এলাহী, সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ার হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ র ক ই আজম ক উপদ ষ ট ওসম ন

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনা যে অপরাধ করেছে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও তা করে নাই: আসিফ নজরুল

শেখ হাসিনা ও তার দোসররা যে অপরাধ বাংলাদেশে করেছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও মনে হয় এত জঘন্য অপরাধ করে নাই বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই গণহত্যার বিচার আলোচনা ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

তিনি বলেন, “মরদেহ পুড়িয়ে ফেলা, আহতদের গুলি করে মেরে ফেলা, নিরস্ত্র মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলা... আপনারা বলতে পারেন, ২৫ মার্চ কালরাতে হয়েছে। অবশ্যই হয়েছে, ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ওটা তো অন্য দেশের বাহিনী।”

“১৯৭১ সালে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলেছে, এরকম কোনো ফুটেজ আমি দেখি নাই। ১৯৭১ সালে একজন গুলি খেয়েছে, তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে তার বন্ধু, সে অবস্থায় তাকে গুলি করেছে। কোনো মুক্তিযোদ্ধার এমন কোনো বর্ণনা আমি পড়ি নাই বা ফুটেজ দেখি নাই। অন্যরকম নৃশংসতা থাকতে পারে, কিন্তু এরকম নৃশংসতা করে নাই” বলে দাবি করেন তিনি। 

এত বড় গণহত্যা চালিয়েও আওয়ামী লীগের বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, “একটা দল ১৫ বছর শুধু মিথ্যা আর নির্যাতন করে চালিয়েছে। এখনো তাদের মিথ্যাচার বিন্দুমাত্র থামেনি। এখনো নির্যাতনের ইচ্ছা বিন্দুমাত্র থামেনি। আপনারা যখন মহাখুনি শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনতে পান, দেখবেন এখনো তার নির্যাতন করার ইচ্ছা আছে। এরা কি বিচারে কোনো রকম গাফিলতি থাকে সেটা উন্মোচন করার চেষ্টা করবে না? আমার তো অনেক দায়িত্ব। এই বিচারকে সমালোচনার ঊর্ধ্বে রাখতে হবে।” 

তিনি আরো বলেন, “এই বিচারে আপনাদের (শহীদ পরিবার) হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আমি বিশ্বাস করি, যেই প্রক্রিয়ায় বিচার এগোচ্ছে, ইনশাআল্লাহ আমাদের সরকারের আমলেই আপনারা কাঙ্ক্ষিত মামলাগুলোর রায় পাবেন। এমনভাবে বিচারের অকাট্য সাক্ষ্য-প্রমাণ আমরা রেখে যাব, কোনো সরকার চাইলেও বিচার থেকে সরতে পারবে না।” 

আইন উপদেষ্টা বলেন, “আর আমি বিশ্বাস করি না, ভবিষ্যতে বিএনপি-জামায়াত যারাই ক্ষমতায় আসুক, তারা বিচারে শৈথিল্য বা গাফেলতি দেখাবে। তারা সবাই নির্যাতিত মানুষ।” 

পরে হতাহতদের স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব (বাজেট ও উন্নয়ন) রুহুল আমীন। এরপর জুলাই আন্দোলন নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেখ হাসিনা যে অপরাধ করেছে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও তা করে নাই: আসিফ নজরুল