আওয়ামী লীগের ভূত ঢুকেছে এই সরকারে: ব্যারিস্টার খোকন
Published: 22nd, February 2025 GMT
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, ড. ইউনূস সরকার ক্ষমতা ছাড়তে চাইছে না। সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করে দিনের পর দিন সরকারে থাকায় প্রমাণ হচ্ছে এই সরকারের মধ্যে আওয়ামী লীগের ভূত ঢুকেছে। তারেক রহমান যাতে এ দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে না পারেন, সেজন্য ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা সাবধান করে দিতে চাই, কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। তারেক রহমান এই দেশে বীরের বেশে আসবেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী হবেন।
শনিবার বিকেলে চান্দিনা উপজেলার ছয়ঘড়িয়া খেলার মাঠে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক পথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে এ সমাবেশ করা হয়।
মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকবেন জবাবদিহি কোথায়? এসব বাদ দিয়ে যার কাজ তাকে করতে দেন। অনতিবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে এই বছরের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন করুন। সংস্কার কমিটিতে থাকা ব্যক্তিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সংস্কার কমিটিতে যারা আছেন, আপনারা গাড়িটাড়ি চেপে যথেষ্ট আরাম আয়েশেই আছেন। আর সংস্কার লাগবে না, অনেক হয়েছে। তারেক রহমানের ৩১ দফা সংস্কারে মনোযোগ দিলেই সব সমস্যার সমাধান ও সংস্কার সম্পন্ন হবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আকতারুজ্জামান সরকার। প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির কুমিল্লা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি কুমিল্লা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মোস্তাক মিয়া। সঞ্চালনা করেন কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি সদস্য সচিব এ এফ এম তারেক মুন্সি। আরও বক্তব্য দেন কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হাসেম, যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ তৌফিক আহম্মেদ মীর, আব্বাস উদ্দিন কমান্ডার, আতিকুল আলম শাওন ও মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের পুরোনো চক্র ও সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলন। এই সিন্ডিকেট ও চামড়াশিল্প ধ্বংসের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংগঠনটি আয়োজিত ‘চামড়া শিল্পের নৈরাজ্য ও সিন্ডিকেট রুখো’ শীর্ষক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মির্জা শরিফুল আলম। সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, কলামিস্ট মীর আবদুল আলীম, রাজনীতিবিদ নুরুজ্জামান হীরা, মানবাধিকারকর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রমুখ।
কয়েক বছর ধরে কাঁচাচামড়ার দাম কমছে। দাম না পেয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নদী বা খালে ফেলে দিয়েছেন কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন– এমন ঘটনাও ঘটছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চলতি বছর ৮৫ থেকে ৯০ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ট্যানারি মালিকদের। এর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ হয় কোরবানির সময়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে। কোরবানিদাতাদের থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন। সেসব চামড়া আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে তলানিতে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশির ভাগ ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়েছে। বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। দেশে ও বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। অথচ কোরবানির চামড়া শিল্প নিয়ে গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, বিদেশি চক্রান্তে দেশের সোনালি আঁশখ্যাত পাট শিল্পকে সুকৌশলে ধ্বংস করা হয়েছে। এবার আরেক সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। গত বছরের মতো এবারও কম দামে সব ধরনের চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। এতে করে গরিব-অসহায় মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।