গাজীপুরের শ্রীপুরে বেতন-ভাতার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে উসমান গ্রুপের মালিকানাধীন টু-পাস ড্রেসেস পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে উপজেলার কাওরান বাজারে মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। 

এ সময় আঞ্চলিক সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সড়কে কয়েক হাজার শ্রমিক জমায়েত হয়েছে এবং তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন।

বেতন-ভাতার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার কাওরান বাজার এলাকার টু-পাস ড্রেসেস কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ওই দিন মালিকপক্ষ দুদিনের সময় নেয় বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য। কিন্তু আজ রবিবার মালিকপক্ষের কোনো লোক না আসায় শ্রমিকেরা আবারো বিক্ষোভ শুরু করে।

আরো পড়ুন:

সুনামগঞ্জে যাত্রীবাহী দু’ বাসের সংঘর্ষ, আহত ২০ 

চুরি-ডাকাতি বৃদ্ধি
রাত ১০টার পর বন্ধ থাকবে ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাসড়ক 

কারখানার শ্রমিক নিলুফা আক্তার জানান, গত বৃহস্পতিবার মালিকপক্ষ বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য তারিখ দেয়। কিন্তু আজও মালিকপক্ষের কোনো লোক আসেনি। কারখানার মালামাল সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য তারা রাস্তায় নেমে এসেছেন।

লায়লী নামের আরেক শ্রমিক বলেন, ‘‘কারখানা কর্তৃপক্ষ চায়না মালিকের কাছে কারখানা বিক্রি করে দিয়েছে। চায়না মালিকের লোকজন ইতোমধ্যে কারখানায় প্রবেশ করছে। আমরা আশঙ্কা করছি, চায়না মালিক এসে শ্রমিক ছাঁটাই শুরু করবে এমন কথা জানতে পারছি আমরা। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় এসেছি। দুদিন সময় নিয়ে আজ সমাধানের কথা। কিন্তু আজ মালিক আসেনি।’’

শ্রমিক ঝরনা আক্তার বলেন, ‘‘সকাল ১০টার মধ্যে সমস্যা সমাধানের কথা। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ নয়-ছয় করছে। এদিকে চায়না মালিকের লোকজন কারখানার বিভিন্ন সেকশন বুঝে নিচ্ছে। সরানো হচ্ছে মেশিন যন্ত্রপাতি।’’

শ্রমিক শ্যামল সরকার বলেন, ‘‘মালিক কারখানা বন্ধ করবে, বিক্রি করবে; তাতে আমাদের সমস্যা নেই। কিন্তু আমাদের ন্যায্য দাবি তো মানবে। সামনে ঈদ আসছে, এই মুহূর্তে আমাদের চাকরিচ্যুত করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। আজ দাবি আদায় ছাড়া সড়ক থেকে সরব না।’’

এ বিষয়ে কারখানার মানবসম্পদ কর্মকর্তা মো.

রাসেল আহমেদ জানান, গত বৃহস্পতিবার কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করে। আজ সমাধানের কথা ছিল। সেই মোতাবেক আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু এখনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকেরা সড়ক দখল করে বিক্ষোভ করছেন। পুলিশের সদস্যরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছে।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শ্রমিকেরা রাস্তায় রয়েছে। রাস্তার দুপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শ্রমিকদের বুঝানো হচ্ছে। তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা পুলিশ অব্যাহত রেখেছে।

ঢাকা/রফিক/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন ব ক ষ ভ কর ম ল কপক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই 

ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ