কালীগঞ্জের সূর্যমুখী দেখতে দর্শনার্থীর ভিড়, বাগানে প্রবেশ ফি ৩০ টাকা
Published: 25th, February 2025 GMT
গাজীপুরের কালীগঞ্জে সূর্যমুখী ফুলের একটি বাগান দেখতে দর্শনার্থীদের গুনতে হচ্ছে ৩০ টাকা। শুরুতে প্রবেশ মূল্য ছিল ২০ টাকা। লোক সমাগম বেশি ও বাগানে ক্ষতির মাত্রা বেড়ে গেলে পরে প্রবেশ মূল্য বাড়ানো হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের সাওরাইদ গ্রামে একটি সূর্যমুখী ফুলের বাগানে গেলে দেখা যায়, বাগানের পাশেই বড় করে একটি সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে “অনুমতি ছাড়া প্রবেশ নিষেধ, প্রবেশমূল্য ৩০ টাকা’’।
প্রবেশমুখের অপর একটি সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ‘‘ফুল ছিঁড়লে জরিমানা ২০০ টাকা, গাছ ভাঙলে জরিমানা ২০০ টাকা’’।
সূর্যমুখী বাগানে দর্শনার্থী
সাওরাইদ গ্রামে সূর্যমুখী অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে প্রচলিত দ্বি-ফসলী শস্য বিন্যাসকে তিন শস্য বিন্যাসে উন্নয়নের লক্ষে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) রাইস ফার্মিং সিস্টেমস বিভাগ একটি প্রকল্প হাতে নেয়। রবি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ওই গ্রামের কৃষক যতীন্ত্র, হিরোন, সাইফুল, জসিম, রশিদ, নয়ন, রুহি দাস, নিষ কাঞ্চন, নারায়ণ ও লিটন বিশ্বাস নামের ১২ জন সহযোগী কৃষককে নিয়ে ৬ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়। কৃষকরা বিনামূল্যে বারি সূর্যমুখী-৩ জাতের বীজ ও রাসায়নিক সার সবরাহ করা হয়।
কৃষক লিটন বিশ্বাসের ভাতিজা বিপুল বিশ্বাস বাগানে প্রবেশের পথ আটকে জনপ্রতি ৩০ টাকা প্রবেশমূল্য নিয়ে ঢুকতে দিচ্ছেন দর্শনার্থীদের।
বাগান রক্ষক বিপুল বিশ্বাস জানান, প্রতিদিন এখানে শতাধিক দর্শনার্থীর আগমন ঘটছে। তবে সৌন্দর্য উপভোগে প্রবেশ মূল্য টাকা নির্ধারিত থাকলেও সময়ের ব্যাপারে কোন নির্ধারিত সময় দেওয়া নেই। দর্শনার্থীরা ফুলের সৌন্দর্যে বিমোহিত ও আপ্লূত হচ্ছেন।
সূর্যমুখী বাগানে দর্শনার্থী
তিনি বলেন, “এখন বেশিরভাগ গাছে ফুল ফুটেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জেনে বিপুলসংখ্যক সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ বিগত ১৫ দিন ধরে ভিড় জমাচ্ছেন এই বাগানটিতে। লোকজনকে সামাল দিতে প্রতিদিন ৪ থেকে ৭ জন লোক এখানে নিয়মিত সময় দিচ্ছেন।”
কথা হয় বাগানে ঘুরতে কয়েকজন দর্শনার্থীর সাথে। এ সময় গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল কয়ের এলাকার রাজন ঘোষ বলেন, “যদিও টিকেটের মাধ্যমে সূর্যমুখী বাগানে আসতে হয়। তবুও এখানে সুন্দর একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আগে ২০ টাকা টিকেট থাকলেও এখন দর্শনার্থীদের চাপ বেশি থাকায় এখন ১০ টাকা বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে। তবু ঘোরার মত একটা জায়গা তৈরি হয়েছে এখানে।”
কালীগঞ্জ পৌরসভার ভাদার্ত্তী এলাকার শহিদুল সরকার জাকির বলেন, “রাস্তা দিয়ে বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেল করে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ চোখে পড়লো সূর্যমুখীর বিশাল বাগান। অনেক মানুষের কোলাহল। তাই মোটরসাইকেল রাস্তায় পার্কিং করে দুই বন্ধু ৩০ টাকা করে টিকেট কেটে বাগানে ঘুরলাম।”
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, “ফসলের আশায় সূর্যমুখীর বাগান করলে সেখানে দর্শনার্থীদের প্রবেশ উন্মুক্ত করা উচিত নয়। এতে দর্শনার্থীর পদচারণায় বাগানের মাটি শক্ত হয়। আর তাতে গাছ ঠিক মত নিউটেশন নিতে পারেনা এবং ফুলটাও বড় হয় না। ফুলের বীজগুলো বড় হয় না এবং তেলটাও ঠিকভাবে নিতে পারে না।”
ঢাকা/রফিক/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৩০ ট ক স ন দর
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড়ে সীমান্ত এলাকা থেকে যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার
পঞ্চগড়ে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা বাড়ি থেকে রাজু ইসলাম (৩৫) নামের এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মারা গেছেন বলে ধারণা করছেন স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা। তবে ওই সীমান্তে বিএসএফের গুলির কোনো খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
রোববার দুপুর পৌনে ১২টায় লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় সদর থানা-পুলিশ। নিহত রাজু ইসলামের বাড়ি সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ঝুলিপাড়া এলাকায়। তিনি বিবাহিত এবং তাঁর তিন ছেলেমেয়ে আছে।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, রাজু গতকাল শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়িতেই ছিলেন। এরপর তিনি কখন বাইরে গেছেন, স্বজনদের কেউ জানেন না। রাত তিনটার দিকে তাঁকে কে বা কারা বাড়ির বাইরে আহত অবস্থায় ফেলে যায়। এ সময় তাঁর চিৎকারে স্বজনেরা ঘুম থেকে উঠে আহত অবস্থায় তাঁকে দেখে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে দেবীগঞ্জ উপজেলার কাছাকাছি গেলে তিনি মারা যান। পরে লাশ বাড়িতে আনা হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, প্রথম দিকে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, রাজু স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) করে মারা গেছেন। পরে তিনি গিয়ে দেখেন, তাঁর দুটি পায়ের হাঁটু ও আশপাশে গুলির চিহ্ন। ভারত সীমান্তে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে তিনি মারা গেছেন বলে তাঁরা ধারণা করছেন। কারণ, তাঁর পায়ে স্পষ্ট গুলির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, সকালে বিষয়টি জানাজানির পর বাড়িতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গেছে।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাতে ওই এলাকায় বিজিবির দুটি টহল দল দায়িত্বরত ছিল। তখন সীমান্তে গুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিএসএফও গুলি করেনি বলে জানিয়েছে। এমনকি পরিবার থেকে প্রথম দিকে তাঁদের জানানো হয়, তিনি হৃদ্রোগে মারা গেছেন। তবে তিনি যে আহত হয়েছেন, সেটা সীমান্ত এলাকায় হয়েছেন নাকি বাংলাদেশের ভেতরে হয়েছেন, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শইমী ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের দুই পায়ে গুলির চিহ্ন আছে, সেটি তাঁরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন। তবে গুলি কারা করেছে বা কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে, সেটা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে।