জাতীয় বাজেটের কতটুকু অংশ গবেষণা খাতে যাওয়া উচিত, তা নিয়ে আওয়াজ ওঠাতে বলছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বন, পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১ টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রাঙ্গণে আয়োজিত ‘চট্টগ্রাম গবেষণা ও উদ্ভাবনা মেলা ২০২৫’ এর প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌতবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত এ মেলায় চবিসহ দেশের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত গবেষকরা তাদের গবেষণাকর্ম উপস্থাপন করেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “আপনারা একটি আওয়াজ উঠাতে পারেন, জাতীয় বাজেটের কতটুকু গবেষণাখাতে যায়, কতটুকু যাওয়া উচিত। গবেষক মানেই শিক্ষক নয়, এ দেশে কৃষকরাও গবেষণা করে। তারা বিভিন্ন প্রজাতির ভ্যারাইটি বের করে। গবেষণা মানুষের কল্যাণে ব্যয় করা হবে। এটি বিজ্ঞানভিত্তিক যেমন হবে, একইসঙ্গে সামাজিক বিভিন্ন বিষয়েও হবে।”

তিনি বলেন, “অধ্যাপক জামাল নজরুল শুধু চট্টগ্রামের নয়, পুরো বিশ্বের গর্ব। তিনি মরেও অমর হয়ে আছেন। আমাদের এমনকিছু করতে হবে, যেন মৃত্যুর পরও যুগযুগ ধরে বেঁচে থাকতে পারি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নিয়ে তিনি বলেন, “চবি ক্যাম্পাস অনেক চমৎকার, সবুজের ছড়াছড়ি। কিন্তু এখানে যানবাহনের মাধ্যমে প্রচুর শব্দদূষণ হচ্ছে। এর দিকে খেয়াল রাখতে হবে। পলিথিনের ব্যবহার রোধ করতে হবে এবং গাছে পেরেক মারা যাবে না। আমাদের প্রজন্ম এসব নিয়ে ভাবেনি। বর্তমান প্রজন্মকে এসব নিয়ে ভাবাতে হবে।”

উদ্বোধনী বক্তব্যে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.

মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, “শিক্ষা, বিজ্ঞানসহ সবকিছুর জন্য প্রয়োজন সুশৃঙ্খল পরিবেশ। ১৯৭১ সালে আমরা একটা পরিবেশ পেয়েছিলাম। কিন্তু সেটি লুটপাট ও ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আরেকটি পরিবেশ পেয়েছি। এটাকে কাজে লাগাতে হবে।” এ সময় তিনি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের জন্য জোরালো দাবি জানান।

এতে উপস্থিত ছিলেন, চবি উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আল-আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান, এএফ মুজিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি এম নুরুল আলম, জামাল নজরুল ইসলাম গবেষণা পরিচালনা কেন্দ্রের পরিচালক অঞ্জন কুমার চৌধুরী, সদস্য  সাদাফ সাজ সিদ্দিকী প্রমুখ।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ