সুনামগঞ্জে বেইলি সেতুর পাটাতন দেবে ট্রাক আটকা, ১২ ঘণ্টার পর যান চলাচল শুরু
Published: 28th, February 2025 GMT
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মদনপুর এলাকায় একটি বেইলি সেতুর পাটাতন দেবে পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়ায় দিরাই-মদনপুর সড়কে প্রায় ১২ ঘণ্টা যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার ভোর চারটা থেকে সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেতু থেকে ট্রাকটি সরিয়ে পাটাতন মেরামতের পর সড়কপথটিতে আজ বিকেল চারটার দিকে আবার যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
এ দুর্ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন জানান, ওই সড়ক দিয়ে জেলার দিরাই ও শাল্লা উপজেলার মানুষজন জেলা সদর এবং দেশের অন্য অঞ্চলে যাতায়াত করেন। মদনপুর এলাকার বেইলি সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এর পাশে আরেকটি নতুন সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। আজ ভোর চারটার সময় সিলেট থেকে আসা একটি পণ্যবাহী ট্রাক সেতুর ওপর ওঠে। এ সময় সেতুর স্টিলের পাটাতন দেবে ট্রাকটি আটক পড়ে। এ কারণে সরু সেতুর দুই পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে সেতু পার হয়েছেন।
সকাল থেকে দিরাই-মদনপুর সড়কের ওই সেতু বন্ধ থাকায় ব্যাপক ভোগান্তি পোহান স্থানীয় বাসিন্দারা। দিরাই উপজেলার বাসিন্দা সুলেমান মিয়া নামের এক ব্যক্তি জানান, অসুস্থ এক আত্মীয়কে দেখতে বৃহস্পতিবার সিলেটে গিয়েছিলেন। আজ সকালে মদনপুর ফিরে বিপাকে পড়েছেন। গাড়ি দিরাই যেতে পারছে না।
মনিরুজ্জামান তালুকদার নামের এক পিকআপ ভ্যানের চালক বলেন, সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে ভোরে সবজি নিয়ে দিরাই রওনা হন। সেতু ভেঙে যাওয়ায় আটকে পড়েছেন। রোদের কারণে পিকআপে থাকা সবজি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সেতু দ্রুত মেরামত করা না হলে তাঁর ক্ষতি হবে।
সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ জানান, সেতুটির দুটি পাটাতন ঠিক করা হয়েছে। বিকেলে ট্রাকটি সরানো হয়েছে। পরে বিকেল চারটার দিকে সেতুটি দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?