চাঁদা না দেওয়ায় পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানোর অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী নেতার বিরুদ্ধে
Published: 1st, March 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা শাখার সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান আলীর বিরুদ্ধে চাঁদা না দেওয়ায় এক তরুণকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানোর অভিযোগ উঠেছে। পরে ওই তরুণকে নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের এম এ রাজ্জাক মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগী তরুণের মা ফরিদা ইয়াসমিন এ অভিযোগ করেন। তবে অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান আলী চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুলিশও প্রভাবিত হয়ে গ্রেপ্তার করার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, তাঁর ছেলের নাম মেজবাউর হক (হৃদয়)। ছেলে যখন খুব ছোট তখন তিনি তাঁর বাবার বাসায় চলে আসেন। ছেলেকে মানুষ করাতে ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখা করান। বর্তমানে তাঁর ছেলে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ষষ্ঠ সেমিস্টারে লেখাপড়া করছেন। তাঁর স্বল্প আয়ে ছেলের খরচ চালাতে না পেরে কুমারখালী শহরে একটি ক্যাফেতে তাঁর চাকরির ব্যবস্থা করান। বিশ্বস্ততার কারণে ক্যাফের মালিক টাকাপয়সা তাঁর ছেলের কাছে রাখতেন। তাঁর ছেলের সঙ্গে সমন্বয়ক আসাদুজ্জামান আলীর ছোটবেলা থেকেই বন্ধুত্ব। টাকা রাখার বিষয়টি জানতে পেরে আসাদুজ্জামান এক মাস আগে তাঁর ছেলের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। দিতে অস্বীকার করলে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়াসহ নানা হুমকি–ধমকি দেওয়া হয়।
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, গত ৯ ফেব্রুয়ারি কয়েকজন পুলিশসহ তাঁর ছেলেকে বাসা থেকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জানতে পারেন, তাঁর বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা দেওয়া হয়েছে। এর পর থেকে ছেলে কারাগারে আছেন। এরপরই কান্নায় ভেঙে পড়েন ফরিদা।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা পদ্মপুকুর ঘাট এলাকায় নাশকতার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে মেজবাউরকে আটক করা হয়। তিনি কুমারখালী পৌর ছাত্রলীগের উপদপ্তর সম্পাদক। পরবর্তী সময়ে তাঁকে নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
ফরিদা ইয়াসমিন আরও বলেন, তাঁর ছেলে কোনো রাজনীতি করে না। আগে কোনো মামলাও ছিল না। টাকা না পেয়ে আসাদুজ্জামান পুলিশকে ব্যবহার করে জেলে পাঠিয়েছে। এর বিচার চান তিনি। তাঁর ছেলেকে ফিরে পেতে চান। চাঁদা দাবির বিষয়টি প্রথমে মজা মনে করে পুলিশকে জানাননি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আলী এত বড় ঘটনা ঘটাবে, তা বুঝতে পারিনি।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমারখালী শাখার সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান আলী বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের লোকজন বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে। আমার বিরুদ্ধে তাঁরা যেসব অভিযোগ তুলেছেন, সব মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক। আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করতে ও ফাঁসাতে এসব করা হচ্ছে। চাঁদাবাজির কোনো অভিযোগ যদি প্রমাণ করতে পারে, তবে গলায় জুতার মালা পরে ঘুরব। কুষ্টিয়া তথা বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাব।’
জানতে চাইলে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলায়মান শেখ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি নিজে অভিযান চালিয়ে মেজবাউরকে গ্রেপ্তার করেছেন। তিনি নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের পদধারী নেতা। কারও দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ন শকত
এছাড়াও পড়ুন:
জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আলম মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল আরমান, ফজলু মেম্বার, মনির মল্লিক, শাহাদাত হোসেন, ওবায়দুর রহমান, শাহ আল বেপারী, সেলিম হোসেন দিপু।
সংবাদ সম্মেলনে শাহীন মিয়া বলেন, কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও স্বৈরাচারের দোসর এদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র যেকোনো অঙ্গ সংগঠনের পদে থাকতে পারে না। নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হিসেবে আমার সংগঠনে যারা চাঁদাবাজ, দখলবাজ স্বৈরাচারের দোসর আমি তাদেরকে বহিষ্কার করেছি।
আওয়ামীলীগের সাথে শাহীনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনাদের ব্যাপারে পাল্টা তিনি বলেন, রূপগঞ্জ থানার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর, দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও সাংগঠনিক দূর্বলতার কারণে তাকে ৩০ নভেম্বর ২০২৩ সালে সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এছাড়াও বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে নজরুলের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা ছিল না। সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম হত্যা মামলার আসামি রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনের যোগসাজসে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের একাধিক মৌজার আবাদী জমিতে বালি ভরাট করে সাধারণ কৃষকের দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করেছিল।
এছাড়াও অসহায় ও সাধারন মানুষের বসতবাড়ি সহ জবরদখল করে নেয় তারা। নজরুল দোসরদের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নির্যাতন করেছিল। এভাবে বিগত ১৭ বছরে স্বৈরাচার সরকারের আস্থাভাজন হয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন এই নজরুল। সে হলো মৌসুমী পাখি।
তিনি বলেন, ১৭ টি বছর জুলুম নির্যাতন সহ্য করে এই নারায়ণগঞ্জে কৃষক দলকে হাতের মুঠোয় রেখেছি আজ সেই কৃষক দলের ভাবমূতি ক্ষুন্ন করতে এই নজরুল স্বৈরাচারের সাথে হাত মিলিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের মানহানি করেছে।
আমি এরই মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তার বিরুদ্ধে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। বিষয়টি আমি আমার হাইকমান্ডকে অবগত করেছি।
তিনি আরও বলেন, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সার্জন মোমেনকে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও দলীয় শৃংখল বঙ্গের দায়ে ১০ই এপ্রিল সভাপতি পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সে বিগত সতেরো বছর নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে। ৫ ই আগস্টের পর ৪০ বিঘা জমির উপর মাছের প্রজেক্ট দখল করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন মোমেন।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময় সে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন তার নিজের জন্য। এখনো সে এলাকায় সাধারণ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে এর যথেষ্ট প্রমাণ আমার কাছে এসেছে এবং অনেক সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। যে সমস্ত মানুষ কোন দল করে না দল বুঝেনা। এ সমস্ত অভিযোগের কারণে তাকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে নজরুলসহ কৃষকদলের বেশ কয়েকজন নেতা সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় শাহীনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে টাকার বিনিময়ে পুনর্বাসনসহ বেশ কিছু অভিযোগ আনেন তারা।