লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা ও পৌর যুবদলের কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধ কাটছে না। কমিটি ঘোষণার পর দলের ভেতরে বিরোধ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আজ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে রামগঞ্জ পৌর শহরে কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন যুবদলের একাংশের নেতা-কর্মীরা। বিক্ষোভে কয়েক শ নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

দুপুরের পর যুবদলের নেতা-কর্মীরা রামগঞ্জ শহরের সোনাপুর চৌরাস্তায় জড়ো হন। এ সময় তাঁরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসেন। পরে রামগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন ওরফে পলাশের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা জেলা যুবদলের নেতাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নূর প্লাজা চত্বরে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

গত শনিবার কবির হোসেনকে রামগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও আবদুল সাত্তার মজুমদারকে সদস্যসচিব করে ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া জামাল হোসেনকে পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ও মিজানুর রহমানকে সদস্যসচিব করে ৩৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা কমিটি। এরপর ওই দিনই উপজেলা ও পৌর যুবদলের নবগঠিত এই কমিটি নিয়ে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন নেতা-কর্মীরা।

রামগঞ্জের বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন রামগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন, পৌর যুবদলের সাবেক সভাপতি মো.

আলাউদ্দিন, সাবেক প্রচার সম্পাদক তাজুল ইসলাম, সাবেক সদস্য মারুফ হোসেন ভূঁইয়া প্রমুখ।

গিয়াস উদ্দিন তাঁর বক্তব্যে বলেন, যাঁরা ১৭ বছর দলের জন্য নিবেদিত ছিলেন, মামলা-হামলা ও মাসের পর মাস জেলে ছিলেন, তাঁদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই পকেট কমিটি নেতা-কর্মীরা মেনে নিতে পারছেন না। আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য করা এ কমিটি অবিলম্বে বাতিল না করলে রামগঞ্জ যুবদলের নেতা-কর্মীরা গণপদত্যাগ করবেন।

শনিবার লক্ষ্মীপুরে যুবদলের ১১টি শাখার নতুন আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় যুবদলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে কমিটির প্রেস বিজ্ঞপ্তিগুলো প্রকাশ করা হয়।

এসব কমিটির অনুমোদন দেন জেলা যুবদলের আহ্বায়ক রেজাউল করিম লিটন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকন ও সদস্যসচিব আবদুল আলিম হুমায়ুন।

জানতে চাইলে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক রেজাউল করিম লিটন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিক্ষোভ মিছিলের বিষয়টি শুনেছি। বিগত আন্দোলন–সংগ্রামে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। সংগঠনকে গতিশীল করতে তাঁরা সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা–কর্মীরা আগামী তিন মাসের মধ্যে তাঁদের অধীন সব শাখার সম্মেলন শেষে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করবেন।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র মগঞ জ উপজ ল প র য বদল র য বদল র ন কর ম র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি

‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে ‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।

এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’

‎বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন

‎জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।

‎তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।

‎কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।

‎পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”

‎গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”

‎অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, ‎যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ