উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিলেন সি আর আবরার
Published: 5th, March 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিলেন চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও মানবাধিকারকর্মী।
আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে বঙ্গভবনে সি আর আবরারকে শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো.
সি আর আবরার শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব পাচ্ছেন। বর্তমানে শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
সি আর আবরার শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব পাওয়ার পর ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ শুধু পরিকল্পনা উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করবেন।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, তাঁরা আশা করছেন, সি আর আবরার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ অনেক দিন ধরেই একই সঙ্গে দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকতে চাচ্ছিলেন না। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় অনেক বড় মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে তাঁকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেখতে হচ্ছে। সে জন্য সি আর আবরার উপদেষ্টা পরিষদে আসছেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। কয়েক দফায় নতুন কয়েকজন উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা ২৩ জন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট র ন উপদ ষ ট আর আবর র মন ত র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষার্থীর গবেষণাপত্রের অংশ অনুমতি না নিয়ে প্রকাশের অভিযোগ, শিক্ষক বলছেন ‘ভিত্তিহীন’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইসরাত জাহানের বিরুদ্ধে তাঁর আগের কর্মস্থলের এক শিক্ষার্থীর তৈরি করা গবেষণাপত্রের অংশ নিজের নামে প্রকাশ করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
লিখিত অভিযোগ দেওয়া ওই সাবেক শিক্ষার্থীর নাম রিফাত সুলতানা। তিনি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমানে তিনি ফেনী শহরের বাসিন্দা এবং সেখানে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ২০১৯ সালে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন ইসরাত জাহান। ওই সময়ের শিক্ষার্থী রিফাত সুলতানার থিসিসের সুপারভাইজার ছিলেন তিনি। প্রায় আড়াই বছর আগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছেন ইসরাত জাহান।
জানতে চাইলে ইসরাত জাহান মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেই শিক্ষার্থী আমাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলবে, কখনো ভাবিনি। আমার সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক এবং সে নিজেই একাধিকবার আমার সঙ্গে যৌথভাবে জার্নাল প্রকাশের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমি দীর্ঘদিন তাকে পড়িয়েছি, আমিই তাকে সব সময় উৎসাহিত করেছি থিসিসে। কিন্তু অভিযোগে এবং গণমাধ্যমে সে যেসব কথা বলেছে, তার সবই ভিত্তিহীন। আমি তার সঙ্গে অসংখ্যবার আলোচনা করেই জার্নালে প্রবন্ধ জমা দিয়েছি। আমার কাছে সব প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু কেন সে অভিযোগ করল, এটাই বুঝতে পারছি না।’
২০১৯ সালে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ইসরাত জাহানের অধীন রিফাত সুলতানা একটি থিসিস করেন। যার শিরোনাম ‘সাবজুগেশন, মার্জিনালাইজেশন অ্যান্ড ডাবল কলোনিজেশন: আ রিডিং অব দ্য অবরোধবাসিনী, দ্য ডার্ক হোল্ডস নো টেররস অ্যান্ড দ্য গড অব স্মল থিংস’। ওই থিসিসের বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে গত ৩১ ডিসেম্বর ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ইংলিশ লিটারেচার অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস’ জার্নালে ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স: আ কোয়েস্ট ফর সেলফ ইন শশী দেশপান্ডে’স দ্য ডার্ক হোল্ডস নো টেররস’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেন ইসরাত জাহান। এই প্রবন্ধে রিফাত সুলতানাকে দ্বিতীয় লেখক হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এরপর গত ১৩ মার্চ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর অভিযোগ পাঠান রিফাত সুলতানা। যার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রিফাত সুলতানা অভিযোগ করেন, ইসরাত জাহান তাঁর অনুমতি ছাড়া এমএ থিসিসের ৩ নম্বর অধ্যায় থেকে সরাসরি অনুলিপি করেছেন। এ ছাড়া থিসিসের অন্যান্য অংশও, যেমন ৬ জানুয়ারি ২০১৯ এবং ২৩ আগস্ট ২০১৯ তারিখে পাঠানো থিসিসের খসড়া নমুনা এবং থিসিস প্রেজেন্টেশন থেকেও তিনি উদ্ধৃতি এবং প্যারাফ্রেজিং ব্যবহার করেছেন। তা ছাড়া ইসরাত জাহান থিসিসের মৌলিক লেখকের নাম প্রকাশে তাঁর সম্মতি নেননি। গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ইসরাত জাহান তাঁর মুঠোফোনে কল করলেও তিনি ব্যস্ততার কারণে ধরতে পারেননি। এরপর তাঁর সঙ্গে শিক্ষকের আর কোনো যোগাযোগ হয়নি।
রিফাত সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গত ২২ এপ্রিল আমার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। তবে সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় তদন্ত কমিটি পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে এবং নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। তদন্ত চলাকালীন আমার অভিযোগের তদন্ত না করে আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছে তারা। তদন্ত কমিটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে মানসিকভাবে হেনস্তা করেছে।’
তদন্ত কমিটির সদস্যরা তাঁদের মত চাপিয়ে দিতে চেয়েছেন উল্লেখ করে রিফাত সুলতানা আরও বলেন, ‘তাঁরা মনে করেন, থিসিস থেকে শিক্ষার্থী এবং সুপারভাইজার দুজনেই নাকি একক লেখক হিসেবে গবেষণা আর্টিকেল প্রকাশ করতে পারেন এবং কোনো সুপারভাইজার চাইলেই শিক্ষার্থীর থিসিস থেকে প্রথম লেখক হিসেবে আর্টিকেল প্রকাশ করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে থিসিসকারী শিক্ষার্থী অনুমতি না নিয়ে আর্টিকেল প্রকাশ করাকে তাঁরা অন্যায় বলে মনে করেন না।’
জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির সদস্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এগুলো সব মিথ্যা ও বানোয়াট কথাবার্তা। ইসরাত জাহান এই গবেষণা দিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো প্রকার সুবিধা নেননি। এটি তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। কারণ, পূর্বের প্রতিষ্ঠানে এটি তাঁদের যৌথ কাজ ছিল। ইসরাত যে গবেষণা জার্নালে প্রকাশ করেছেন, সেখানে তিনি শিক্ষার্থীর নামও দিয়েছেন। এরপরও আমাদের কাছে অভিযোগ করায় আমরা এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি এবং অভিযোগকারীর কাছ থেকে বিস্তারিত জানান চেষ্টা করেছি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন সেগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।’