আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে স্বাগতিক পাকিস্তানের ভরাডুবির পরই গুঞ্জনটা শুরু হয়েছিল। দল থেকে বাদ পড়তে যাচ্ছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান-বাবর আজমের মতো শীর্ষ তারকারা।

গুঞ্জনটা শেষ পর্যন্ত আংশিক সত্যি হয়েছে। আসন্ন নিউজিল্যান্ড সফরের ওয়ানডে স্কোয়াডে জায়গা ধরে রাখলেও টি-টোয়েন্টি থেকে বাদ পড়েছেন রিজওয়ান ও বাবর। পেসার নাসিম শাহকেও টি-টোয়েন্টির দলে রাখা হয়নি।

রিজওয়ানকে গত অক্টোবরে সাদা বলের দুই সংস্করণের অধিনায়কের দায়িত্ব দেয় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়া, এমনকি দল থেকেই বাদ দেওয়ার মূল কারণ হিসেবে সামনে আনা হচ্ছে রিজওয়ানের স্ট্রাইক রেট।

সাম্প্রতিক সময়ে টি-টোয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে নেমে পাওয়ারপ্লে কাজে লাগাতে পারেননি এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। কারও কারও ধারণা, প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশিই বল ‘গিলে ফেলেছেন’ রিজওয়ান। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও কচ্ছপগতিতে রান তোলায় ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন।

কিন্তু রিজওয়ানের পরিবর্তে যাঁকে পাকিস্তানের নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক করা হলো, সেই আগা সালমান আদৌ এ সংস্করণে খেলার যোগ্য কি না, এমন প্রশ্নও উঠতে পারে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সালমানের স্ট্রাইক রেট যে মাত্র ৭৯.

৩৬, গড় মাত্র ১০! ধুন্ধুমার ব্যাটিং প্রদর্শনীর এ সংস্করণে যেখানে প্রায়ই ছক্কা-বৃষ্টি দেখা যায়, সেখানে তিনি একটি ছক্কাও মারতে পারেননি!

৬ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে সালমানের মোট রান ৫০। তিনবারই আউট হয়েছেন এক অঙ্কের ঘরে। সর্বোচ্চ ৩২ রানের ইনিংসটা অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। তবে বিস্ময়কর মনে হলেও সত্যি, টি-টোয়েন্টির চেয়ে ওয়ানডেতেই তাঁর স্ট্রাইক রেট বেশি—৯৮.৮৮।

তাই পাকিস্তানের যেকোনো সমর্থক প্রশ্ন করতে পারেন, এত খেলোয়াড় থাকতে সালমানকেই কেন পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টির নেতৃত্বে আনা হলো, যিনি ব্যাট হাতে টি-টোয়েন্টির দাবিই মেটাতে পারেন না!

এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা যাক—

অক্টোবরে রিজওয়ানকে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক বানানোর দিনেই সালমানকে এই দুই সংস্করণের সহ-অধিনায়ক বানানো হয়। যেহেতু অধিনায়ক রিজওয়ান দল থেকে বাদ পড়েছেন, তাই নিয়ম অনুযায়ী সহ-অধিনায়ক সালমানেরই নেতৃত্বে আসার কথা।

রিজওয়ান বিশ্রামে থাকায় টি-টোয়েন্টিতে এরই মধ্যে পাকিস্তানকে চার ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন ৩১ বছর বয়সী সালমান। ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ের মাটিতে তাঁর অধিনায়কত্বে পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতেছে। সেই সিরিজেই সালমানকে দেখে পিসিবির হর্তাকর্তাদের মনে হয়েছে, দলের নেতা হওয়ার সব গুণ তাঁর মধ্যে রয়েছে। ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হলেও বোলিংয়ে মোটামুটি ভালো করেছেন। ২ ইনিংসে বল করে নিয়েছেন ২ উইকেট। ইকোনমি রেট ৫.২০।

রিজওয়ানের সঙ্গে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান বাবর আজমেরও টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়া। আবার বাবরকে রাখা হলেও তিনি যে নতুন করে অধিনায়কের দায়িত্ব নিতেন, সেই নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে না। গত দুই বছরে দুবার পাকিস্তানের নেতৃত্ব ছেড়েছেন বাবর। বোঝাই যাচ্ছে, আবারও অধিনায়ক হওয়ার কোনো আগ্রহ তাঁর নেই।

রিজওয়ান-বাবরের অনুপস্থিতিতে অধিনায়ক হতে পারতেন আরেক অভিজ্ঞ ফখর জামান। দারুণ ফর্মে থাকা সাইম আইয়ুবেরও নাম শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত দুজনই চোট থেকে সেরে ওঠার লড়াইয়ে আছেন। ফখর চোটে পড়েছেন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে। আর জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গোড়ালিতে চোট পেয়ে লম্বা সময়ের জন্য ছিটকে পড়া আইয়ুব উন্নত চিকিৎসা নিতে গেছেন লন্ডনে।

প্রায় ৯ মাস পর পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি দলে ফিরেছেন অভিজ্ঞ লেগ স্পিনার শাদাব খান। শাদাবের নেতৃত্বে গত বছর পিএসএলে চ্যাম্পিয়নও হয়েছে ইসলামাবাদ ইউনাইটেড। কিন্তু লম্বা সময় পর জাতীয় দলে ফিরেই শাদাবকে অধিনায়কত্বের বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া উচিত হবে না বলে মনে হয়েছে পিসিবির। এ কারণে নিউজিল্যান্ড সফরের টি-টোয়েন্টি সিরিজে তাঁকে সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

পিসিবির জন্য আরেকটি বিকল্প ছিলেন শাহিন আফ্রিদি। কিন্তু অধিনায়ক আফ্রিদিকেও বাজিয়ে দেখা হয়ে গেছে। গত বছর তাঁর নেতৃত্বেই নিউজিল্যান্ডে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে পাকিস্তান। সিরিজটি তারা হেরেছে ৪-১ ব্যবধানে। আফ্রিদিকে অধিনায়ক হিসেবে রাখা না–রাখা নিয়েও জল কম ঘোলা হয়নি। অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়ার পর পিসিবি তাঁকে সহ-অধিনায়ক করতে চাইলেও তিনি রাজি হননি। তা ছাড়া শাহিন আফ্রিদির শ্বশুর শহীদ আফ্রিদিও তাঁকে অধিনায়কত্বের বাড়তি দায়িত্ব না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স স করণ র জওয় ন দল থ ক ন ব বর

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের

ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে। 

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে  বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ