আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষের ভোটের অধিকারের ব্যাপারে আমাদের সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে জেনেভায় প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে বুধবার এ কথা বলেন আইন উপদেষ্টা। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিক্ষোভের সঙ্গে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের ওপর জাতিসংঘের মানবাধিকার তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন জেনেভায় উপস্থাপনা করা হয়। এ সময় সেখানে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড.

আসিফ নজরুল। খবর বাসসের

প্রতিবেদনের বিষয়ে উপস্থাপনের পর বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা বেশ কিছু প্রশ্ন ও মতামত ব্যক্ত করেন। এর মধ্যে সম্প্রতি সংখ্যালঘু ইস্যু ও পার্বত্য চট্টগ্রামে নির্বাচন ইস্যুতে করা প্রশ্নের উত্তর দেন ড. আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে কিছু রাজনৈতিক সহিসংতার ঘটনা ঘটেছে আওয়ামী লীগ রিজিমের নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে। যারা বহু বছর ধরে মানুষকে নির্যাতন ও হত্যা করেছে।

আসিফ নজরুল বলেন, তবে এসব হামলার ঘটনা অধিকাংশই ঘটেছে মুসলিমদের ওপর। সামান্য কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে। এটিকে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হিসেবে দেখার সূযোগ নেই। আওয়ামী রিজিমের সময় মানুষকে নির্যাতন ও হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ওপর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ এসব ঘটনা। আমরা সেটার নিন্দা জানাই।

তিনি বলেন, এটি সংখ্যালঘু ইস্যু ব্র্যান্ড করা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমাদের কাছে পরিসংখ্যান আছে। এ সম্পর্কে আমাদের কাছে ফ্যাক্ট চেকড তথ্য আছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে নির্বাচন প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষের ভোটের অধিকারের ব্যাপারে আমাদের সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেটা পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল হোকা বা যে কোনো স্থানেই হোক। আমরা এরইমধ্যে একটি কমিশন গঠন করেছি, যারা স্থানীয় সরকার ইস্যু নিয়ে কাজ করছে।

বাংলাদেশ সময় আজ বুধবার ৫ মার্চ সন্ধ্যা ৬টার পর প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট আম দ র র ওপর উপস থ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ