টিভি খুললে এখন নাটক ও বিজ্ঞাপনে ভেসে ওঠে তাঁর মুখ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আলোচিত তিনি। ইউটিউবে প্রবেশ করলেই সামনে চলে আসে তাঁর অভিনীত নাটক। তিনি নাজনীন নাহার নিহা। গেল ভালোবাসা দিবসের নাটক ‘মন দুয়ারি’ দিয়ে আলাদা নজর কেড়েছেন এ অভিনেত্রী। ডাগর ডাগর চোখ, মায়াবি চাহনি আর মিষ্টি হাসির এ অভিনেত্রীর কাছে এখন ভরসা রাখছেন ঢাকাই শোবিজের নাট্য নির্মাতারা। তাই ভালোবাসা দিবসের কাজের রেশ যেতে না যেতেই ঈদের নাটকের শুটিংয়ে ব্যস্ততা বেড়েছে নিহার।
ব্যস্ততা বাড়লেও বেশ সন্তর্পণে পা ফেলছেন অভিনেত্রী। ভালো গল্প ও চরিত্র নির্বাচনে বেশ সজাগ। খ্যাতির মোহে এলোমেলো সিদ্ধান্ত যেন না নিয়ে বসেন, এ বিষয়ে নিহা যে বেশ সচেতন তা তাঁর কথায় উপলব্ধি করা গেল। বললেন, ‘ভালো কাজের যে ভালো রেসপন্স আসে তা তো প্রমাণিত। আমার সামনে কাজের অবারিত সুযোগ রয়েছে। তাই নিজেকে অভিনেত্রী হিসেবেই মেলে ধরার চেষ্টা করছি। সেই চেষ্টায় ছাড় নয় একচুলও।’
নিহার সঙ্গে যখন কথা হয় তখন তিনি নারায়গঞ্জের ‘উইশ কার্ড’ নামে একটি নাটকের শুটিংয়ে। চারদিকে সবুজ প্রান্তর। মাথার ওপর দুপুরের ঝলমলে রোদ। দূর থেকে মানুষের কোলাহলের আওয়াজ ভেসে আসছে। নিহা পর্যন্ত তা আসতে আসতে ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে তা। এই নাটকে নিহার সঙ্গে ইয়াশ রোহান। ‘মন দুয়ারি’ নাটকের সাফল্যের পর নিহার সঙ্গে ইয়াশের জুটি গড়েছেন সৌখিন।
আগামী ঈদে তাই ‘উইশ কার্ড’ নাটকটির মাধ্যমে নিহা অপূর্ব নয়, নিহা-ইয়াশকে পাবেন সৌখিনের নির্মাণে। তবে ইয়াশের সঙ্গে নিহার এবারই প্রথম কাজ নয়; আগেও অনেক কাজ হয়েছে। হচ্ছে এবারও।
বলতে গেলে অল্প দিনের ক্যারিয়ার নিহার। সবে দুই বছর! অথচ পরিচিতি পেয়েছেন বহুগুণ বেশি। দুই বছরের ক্যারিয়ারে অপূর্ব তো বটেই, তৌসিফ মাহবুব, ইয়াশ রোহান, জোভান, মুশফিক আর ফারহান, জাহের আলভীর বিপরীতে অভিনয় করেছেন নিহা। ‘যুগল’ নামে একটি নাটকে তাঁর বিপরীতে ছিলেন তরুণ অভিনতো ফররুখ আহমেদ রেহানও।
কথায় কথায় ‘মন দুয়ারী’র সাফল্য কেমন উপভোগ করছেন? প্রশ্ন রাখা হয় অভিনেত্রীর কাছে। নিহা বলেন, ‘এককথায় দারুণ। নাটকটির প্রতি মানুষের এমন সাড়া সত্যিই মুগ্ধ করার মতো। অপূর্ব ভাই এককথায় দারুণ। সৌখিন ভাইয়ের নির্মাণও অসাধারণ। এসব অসাধারণের সঙ্গে আমার নামটিও জড়িয়ে আছে। এটা আমার জন্য সত্যিই মুগ্ধকর। এখন যে নাটকটির অভিনয় করছি, এটির গল্পও চমৎকার। আমার বিশ্বাস, দর্শকের কাছে এটিও দারুণ প্রশংসিত হবে।’
প্রশ্নে ‘মন দুয়ারী’ থাকলেও নিহা প্রশ্নের উত্তরে উপসংহার টানলেন বর্তমান কাজটি নিয়েই। বুঝিয়ে দিলেন ‘মন দুয়ারী’ নিয়ে বসে থাকলেই হবে না। পরের কাজগুলোতেও সাফল্যের ধারাবাহিকতায় বজায় রাখতে হবে। কথায় কথায় অভিনেত্রী এও জানিয়ে দিলেন আপাতত কাজ, পরিবারের সঙ্গেই তাঁর প্রেম।
মা-ই নিহার স্বপ্নের পৃথিবী। ক্যারিয়ারে যদি একটুও সফলতা ধরা দেয়, তার পুরোটাই এসেছে মায়ের অবদানে। তাঁর অনুপ্রেরণা না পেলে নিহাকে হয়তো সবাই অন্যরকমভাবে পেত বলে জানিয়েছেন এ অভিনেত্রী। তা কেমন পেত? প্রশ্ন রাখলে কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে পড়েন নিহা। কিছুটা অতীতে ফিরে যান। চেহারায় চিন্তার ছাপ পড়ে।
নিহা বলেন, ‘আমার কিন্তু অভিনেত্রী হওয়ার কথা ছিল না। বলতে পারেন পরিবারের অনেকের অমতেই আমার এ অঙ্গনে আসা। তবে আম্মুর সাপোর্ট পেয়েছি জোরালোভাবে। তাঁর সহযোগিতা ছিল আমার চলার পথের পাথেয়। তাঁর কারণেই আমার অভিনেত্রী হয়ে ওঠা।’
কথা বলতে বলতেই শটের ডাক পড়ে নিহার। সূর্যের আলো চলে যাচ্ছে। আলো থাকতেই দ্রুত শট নিতে হবে। শটের আগে নিহা জানিয়ে যান, আগামী ঈদে অর্ধডজন কাজে পাওয়া যাবে তাঁকে। প্রতিটি কাজই অসাধারণ। পাশাপাশি ‘মন দুয়ারী’ দর্শক গ্রহণ করায় সবাইকে ভালোবাসাও জানিয়ে যান। সঙ্গে পাশে থাকার আহ্বান জানান দর্শকদের।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন জন ন ন হ র ন হ মন দ য় র
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।