কল ফরওয়ার্ডিং প্রতারণা কী, নিরাপদ থাকবেন যেভাবে
Published: 7th, March 2025 GMT
প্রতিনিয়ত নতুন কৌশলে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের বোকা বানিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসহ অর্থ চুরি করছে সাইবার অপরাধীরা। সম্প্রতি ‘কল ফরওয়ার্ডিং’ কৌশল কাজে লাগিয়ে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের অজান্তেই তাঁদের ফোনকল অন্য নম্বরে স্থানান্তর করে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা করছে তারা।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের তথ্যমতে, নতুন এ কৌশলে দূর থেকে নির্দিষ্ট ব্যক্তির স্মার্টফোনে থাকা কল ফরওয়ার্ডিং সেটিংস পরিবর্তন করে দেয় সাইবার অপরাধীরা। এরপর সেই নম্বর ব্যবহার করে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য পরিবর্তন, মোবাইল ওয়ালেট থেকে অর্থ লেনদেনসহ একবার ব্যবহারযোগ্য পাসওয়ার্ড (ওটিপি) নিজেদের নম্বরে সরিয়ে নেয়। পরিচিত ব্যক্তিরা সেই নম্বরে কল করার পর অপরিচিত কণ্ঠ শুনলেও সেটিকে নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণ বলে ধরে নেন। এর ফলে প্রতারণার শিকার ব্যক্তি বুঝতে পারেন না তিনি প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।
আরও পড়ুনস্মার্টফোনে আড়ি পাতা যেভাবে বুঝবেন, যেভাবে ঠেকাবেন১২ অক্টোবর ২০২৪কল ফরওয়ার্ডিং মূলত একধরনের টেলিকম সুবিধা। এ সুবিধা ব্যবহারকারীদের কল নির্দিষ্ট নম্বরে স্থানান্তর করে থাকে। তবে প্রতারকেরা ফিশিং লিংক, অজানা কোড ডায়াল বা ম্যালওয়্যার ইনস্টলের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের অজান্তেই তাদের স্মার্টফোনে এই সুবিধা চালু করে থাকে। সুবিধাটা চালু থাকলে সেই নম্বরের ফোন কলসহ ওটিপি কোড প্রতারকদের কাছে চলে যায়। এ বিষয়ে সাইবার বিশেষজ্ঞ স্নেহাল বাকিল জানিয়েছেন, সিম কার্ড হলো ডিজিটাল অ্যাকাউন্টগুলোর চাবি। নির্দিষ্ট ব্যক্তির ওটিপি বা গুরুত্বপূর্ণ কল অন্য নম্বরে ফরওয়ার্ড করে সহজেই সেই ব্যক্তির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে পারে সাইবার অপরাধীরা।
আরও পড়ুনস্মার্টফোনের কার্যক্ষমতা ভালো রাখার ৭ উপায়২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫স্মার্টফোনে কল ফরওয়ার্ডিং সুবিধা চালু রয়েছে কি না, তা যাচাই করতে ডায়াল অপশনে গিয়ে *#২১# ডায়াল করতে হবে। কল ফরওয়ার্ডিং চালু থাকলে কোন নম্বরে কল স্থানান্তরিত হচ্ছে, তা পর্দায় দেখা যাবে। যদি কল ফরওয়ার্ড কোনো অজানা নম্বরে সেট করা থাকে, তাহলে তা দ্রুত বন্ধ করতে ##০০২# ডায়াল করতে হবে। এরপর ফোনের কল ফরওয়ার্ডিং সেটিংস থেকে সন্দেহজনক নম্বরটি মুছে ফেলতে হবে।
সূত্র: নিউজ ১৮
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার এক কিশোর ১২ দিন পর মারা গেছে। নিহত কিশোরের নাম মো. শিহাব (১৭)। সে উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের মিজানুর রহমান রিপনের ছেলে। চলতি বছর এসএসসি পাস করেছে সে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিল শিহাব। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে তার মৃত্যু হয়।
এর আগে গত ২০ আগস্ট রাত আটটার দিকে তাকে নির্মম নির্যাতন করা হয়। রিপনের এক ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে শিহাব ছিল সবার বড়। প্রচণ্ড মারধরের পর থেকেই সে অচেতন অবস্থায় ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিহাব গত ২০ অক্টোবর পার্শ্ববর্তী বান্দুড়িয়া এলাকায় তার প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে যায়। সে তেঁতুলতলা বাঁকের কাছে গেলে তার প্রেমিকার আত্মীয়-স্বজনেরা তাকে তাড়া দেয়। শিহাব নিজেকে রক্ষা করতে রাতের অন্ধকারে মাঠের মধ্যে দৌড় দেয়। একপর্যায়ে শিহাব দিক হারিয়ে অন্ধকারের মধ্যে পুকুরে ঝাঁপ দেয়।
সেসময় কিছু ব্যক্তিও পুকুরে নেমে শিহাবকে মারধর শুরু করে। এরপর তাকে পুকুর থেকে তুলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান।
একপর্যায়ে শিহাব জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে ঢলে পড়ে। এরপর লাঠি দিয়ে শিহাবকে আরো পিটিয়ে ফেলে রেখে যায় প্রেমিকার আত্মীয়রা। পরে স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। মাথায় গুরুত্বর আঘাত থাকায় তার জ্ঞান ফেরেনি। তাই তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
শিহাবকে নির্যাতনের ঘটনায় তার বাবা রিপন গত ২৪ অক্টোবর রাতে রতন আলী (৩২), মো. কানন (২২), সুজন আলী (৩২), ইয়ার উদ্দীন (৩২), মো. শরীফ (৩৫), মো. রাব্বি (২৫), মো. হালিম (৩০) এবং মো. কলিম (৩২) নামের নয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো আট থেকে নয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে গোদাগাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত এদের কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি থানা-পুলিশ।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে শিহাব হামলার শিকার হয়েছিল। তার মৃত্যুর খবর শুনেছি। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। হামলার ঘটনায় আগে করা মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। আসামিদের গ্রেপ্তারে সব ধরনের চেষ্টা চলছে।”
ঢাকা/কেয়া/এস