ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে রাবি শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
Published: 9th, March 2025 GMT
দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ এবং ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রোববার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
বেলা ১১টার দিকে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে প্যারিস রোডে জড়ো হতে থাকেন। বেলা সাড়ে ১১টার কিছুক্ষণ পর শিক্ষার্থীরা একটি মিছিল নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন। বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে আগামীকাল সোমবার একইভাবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বেলা সাড়ে ১১টায় মহাসড়ক অবরোধ করার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে? আমি কে? আছিয়া আছিয়া’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, নো মোর র্যাপিস্ট’, ‘আমার বোনের কান্না, আর না আর না’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে বিচার কর’, ‘খুনি কেন বাহিরে, ইন্টেরিয়ম জবাব চাই’, ‘বিচার বিচার চাই, ধর্ষকের বিচার চাই’, ‘গোলামি না আজাদী, আজাদী আজাদী’ প্রভৃতি স্লোগান ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনায় যদি কোনো বিচার করতে না পারেন, তাহলে শেখ হাসিনার অবস্থাটা মনে করিয়ে দিতে চাই। আমাদের যেন আবার ১ দফা দাবি নিয়ে মাঠে নামতে না হয়। আমাদের বোন আছিয়ার ধর্ষণের ঘটনা, ইন্টেরিয়ম এড়াতে পারে না। শুধু আছিয়া নয়, এতদিন যত ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে সব ঘটনার বিচার করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের বোনদের নিরাপত্তা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আজকে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। অবিলম্বে ধর্ষকদের বিচার নিশ্চিত করার জন্য পৃথক ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে ধর্ষণের ঘটনাগুলো ঘটছে সেগুলো বন্ধ করতে না পারলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের শাসনকার্য পরিচালনার অধিকার রাখে না। ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে আপনারা যে চেয়ার পেয়েছেন, সেটার মূল্যায়ন করতে না পারলে অবিলম্বে চেয়ার ছেড়ে দেন। এই দেশের ছাত্র-জনতা স্বৈরাচার হাসিনাকে সরাতে পারলে ধর্ষকদেরও এই বাংলার মাটি থেকে বিতাড়িত করার ক্ষমতা রাখে। আজকে শিক্ষার্থীদের জনসমুদ্র আরেকটি জুলাইয়ের ইঙ্গিত করে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাচ্ছি না।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ ক ল স পর ক ষ সড়ক অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ