জীবন সহজ করবে গুগল ক্রোমের এই ৫ এক্সটেনশন
Published: 9th, March 2025 GMT
গ্রামারলি
ইংরেজির ভুল এড়িয়ে ই–মেইল বা অনলাইনে ক্লাস অ্যাসাইনমেন্ট লেখার ক্ষেত্রে গ্রামারলি বেশ জনপ্রিয়। বিনা মূল্যের এই ক্রোম এক্সটেনশন ব্যবহার করে ইংরেজি ব্যাকরণ ও বানানের ত্রুটি শনাক্ত করা যায়। সেই সঙ্গে ভালো শব্দ ও বাক্য গঠনের পরামর্শও পাওয়া যায়। এই এক্সটেনশনটি ব্রাউজারে যোগ করে নিতে পারেন এই লিংক থেকে।
টুডুইস্টটুডুইস্ট মূলত একটি ‘টাস্ক ম্যানেজমেন্ট’ বা কাজ গুছিয়ে রাখতে সহায়ক ক্রোম এক্সটেনশন। এই ক্রোম এক্সটেনশনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প, অ্যাসাইনমেন্ট এক জায়গায় সংগঠিত করা যায়। কোন কাজ কতটুকু করা হয়েছে, কী করতে হবে, গুগল ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে নোটিফিকেশন তৈরির সুযোগও থাকে। কোন বই পড়বেন, কোন নিবন্ধ কতটুকু পড়েছেন, আগামীকাল কী করবেন, কোন কাজ কতটা গুরুত্বপূর্ণ, বন্ধুদের সঙ্গে কাজ ভাগাভাগির তথ্য থেকে শুরু করে কাজের ডেডলাইন মনে করিয়ে দিতে পারে টুডুইস্ট এক্সটেনশন। বিস্তারিত দেখুন এই লিংকে।
নয়েজলিঅনেক সময় আমরা এক কাজে ইন্টারনেট ব্যবহার শুরু করে একটু পর হারিয়ে যাই। কী খুঁজতে এসেছি, আর কী করছি, মনে থাকে না। কাজে মনোযোগ দেওয়ার জন্য নয়েজলি এক্সটেনশন বেশ কার্যকর। পড়ালেখা বা অ্যাসাইনমেন্ট করার সময় এই এক্সটেনশন একধরনের শব্দ তৈরি করে, যা আপনাকে মনোনিবেশ করতে সাহায্য করবে। ইচ্ছা করলে আপনি বৃষ্টি বা ক্যাফের পরিবেশ কিংবা সবুজ কোনো বনের পরিবেশ এই এক্সটেনশন দিয়ে তৈরি করতে পারেন। নয়েজলি ব্রাউজারে যোগ করতে পারেন এই লিংক থেকে।
আরও পড়ুন৮ মাস প্রশিক্ষণ নিয়ে জাপানে চাকরির সুযোগ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫গুগল ডিকশনারিগুগল ডিকশনারি আরেকটি জনপ্রিয় ক্রোম এক্সটেনশন। এটি ব্যবহার করলে ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা অনলাইন পিডিএফ পড়ার সময় কঠিন কঠিন শব্দের অর্থ সহজে বের করতে পারবেন। এই এক্সটেনশন চালু থাকলে শুধু একটি শব্দের অর্থ দেখতে তার ওপর ডাবল ক্লিক করলেই চলবে। গুগল শব্দের অর্থ, উদাহরণসহ দেখিয়ে দেবে। বিস্তারিত দেখুন এই লিংকে।
এভারনোট ওয়েব ক্লিপারআমরা নানা প্রয়োজনে বহু ওয়েবসাইট ভিজিট করি। কোন ওয়েবসাইট কেন ভিজিট করি, অনেক সময় তা মনে রাখতে পারি না। এভারনোট ওয়েব ক্লিপার এক্সটেনশন ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইটের তথ্য আলাদা বুকমার্ক করে রাখতে পারেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন আর্টিকেল ও ছবি স্ক্রিনশট নিয়ে রাখতে পারেন। ক্লাসের অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশনের জন্য ছবির মতো নানা তথ্য এই এক্সটেনশনের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা যায়। বিস্তারিত এই লিংকে।
আরও পড়ুনবিখ্যাত মনোবিজ্ঞানীর মতে, অফিসের যে ৪টি নিয়ম বাতিল করার এখনই সময় ০৬ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অ য স ইনম ন ট ব যবহ র ন এই ল
এছাড়াও পড়ুন:
মিরাজে দুর্দান্ত জয় বাংলাদেশের
এমন পারফরম্যান্সই তো চাওয়ার থাকে ভালো দলের কাছে। মেহেদী হাসান মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্য, সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরি, তাইজুল ইসলামের ৯ উইকেট শিকারে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল জয় এনে দেয় বাংলাদেশকে। প্রথম টেস্ট হারের পর যে সমালোচনা হয়েছিল, তার জবাবটা বোধ হয় দ্বিতীয় টেস্ট তিন দিনে জিতে দিয়ে দিলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। ‘বাউন্স ব্যাক’ করে সিরিজ ড্র ১-১-এ।
চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে বীরোচিত পারফরম্যান্স ছিল টাইগারদের। এটি সম্ভব হয়েছে পছন্দের উইকেটে খেলা হওয়ায়। স্পিন ভুবনে উইকেট উৎসব করেছেন তাইজুল, মিরাজ গাঁটছড়া বেঁধে। সিরিজ নির্ধারণী টেস্টে দুটি সেঞ্চুরি দারুণ অর্জন অধারাবাহিক ব্যাটিং লাইনআপের। এই টেস্টে ওপেনিং জুটি ভালো করেছে। লম্বা সময় পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া এনামুল হক বিজয় ভালোই সঙ্গ দেন সাদমানকে। লোয়ার মিডলঅর্ডারে মিরাজের লড়াই ছিল দেখার মতো।
টেলএন্ডারদের নিয়ে রীতিমতো বাজিমাত করেছেন তিনি। শেষ ৩ উইকেটে তৃতীয় দিন ১৫৩ রান যোগ করেন। বাংলাদেশকে পৌঁছে দেন ৪৪৪ রানে। ২১৭ রানের লিড থাকায় ইনিংস ব্যবধানে জয়ের স্বপ্ন দেখায়। মিরাজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে সে স্বপ্ন পূরণ হয়। সাকিব আল হাসান ও সোহাগ গাজীর পর তৃতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার তাঁর।
গত বছর দেশের মাটিতে টেস্টে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার পর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। ২০২৫ সালের শুরুটাও ভালো ছিল না। সিলেটে জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছে। সিরিজ বাঁচাতে চট্টগ্রামে জিততেই হতো। লক্ষ্যে পৌঁছাতে কন্ডিশনেও পরিবর্তন আনা হয়। চট্টগ্রামের উইকেটে খেলা হয় দ্বিতীয় টেস্ট। যেখানে শাসন ছিল স্পিনারদের। পছন্দের উইকেট পাওয়ায় তিন স্পিনার নিয়ে খেলে বাংলাদেশ। তিনজনই দারুণ বোলিং করেন প্রথম থেকে।
দীর্ঘ বিরতির পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া অফস্পিনার নাঈম হাসান চ্যালেঞ্জ নিয়ে বোলিং করে গেছেন। বেশি উইকেট না পেলেও এক প্রান্তে ব্যাটারদের চাপে ফেলেছেন। যার সুফল তাইজুল ও মিরাজ পেয়েছেন অন্য প্রান্তে। প্রথম দিন শেষ সেশনে ব্রেক থ্রু দেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনার পরে পিক করে ৬ উইকেট শিকার করেন। জিম্বাবুয়ে ৯ উইকেটে ২২৭ রানে প্রথম দিন শেষ করে। পরের দিন এক বল খেলে ওই রানেই অলআউট হয়। বাংলাদেশ ব্যাটিং শুরু করে বড় লক্ষ্য নিয়ে। সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয় ১১৮ রানের ওপেনিং জুটি করায় প্রতিপক্ষকে ছাড়িয়ে যাওয়া সহজ হয়। সাদমানের সেঞ্চুরি ও মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম কিছু রান করায় ৭ উইকেটে ২৯১ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করে বাংলাদেশ।
সেদিন সংবাদ সম্মেলনে সাদমান আশা প্রকাশ করেন, মিরাজ ও তাইজুল জুটি করবেন। অষ্টম উইকেটে ৬৪ রানের জুটি দু’জনের। বেশি ভালো করেছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। মিরাজের সঙ্গে ১৫৬ বলে ৯৬ রানের জুটি। অভিষেক টেস্টে সাকিবের ব্যাটিং দারুণ লেগেছে অধিনায়ক শান্তর কাছে। ৮০ বলে ৪১ রান করেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা, মাথায় বল লাগার পরও বিচলিত হননি তিনি। মিরাজ ছাড়া চট্টগ্রাম টেস্টের প্রাপ্তি হিসেবে ওপেনিং জুটির ভালো খেলা, সাদমানের সেঞ্চুরি, তাইজুলের ৫ উইকেট শিকার ও সাকিবের রান করাকে মনে করেন শান্ত।
শেষের তিন উইকেটে তৃতীয় দিন প্রায় দুই সেশন ব্যাট করে বাংলাদেশ। তাইজুল, সাকিব ও হাসানকে নিয়ে ১৫৩ রান যোগ করে। মিরাজ ১০৪ রান করে ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে উইকেট দেন। নার্ভাস নাইটির ঘরে প্রবেশ করে কিছুটা ঝুঁকির মুখে ছিলেন মিরাজ। ৯৮ রানে পৌঁছানোর পর সেঞ্চুরি ছুঁতে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ফিল্ডারের কাছে বল চলে যাওয়ায় এক রানে থামতে হয়। তখন স্ট্রাইকে হাসান থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল সবাই। ড্রেসিংরুমে খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফের সবাই দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। কখন হাসান আউট হয়ে যায়, সে ভয় কাজ করছিল হয়তো। কিন্তু হাসান ছিলেন দৃঢ়চেতা। মাসাকাদজাকে ডিফেন্স করে স্বস্তি দেন।
মিরাজ স্ট্রাইকে এসে মেদেভেরের প্রথম দুই বলে ঝুঁকি নেননি। তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ নেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ ও দ্বিতীয় টেস্টের সেরা খেলোয়াড় মিরাজ। প্রথম ম্যাচের উভয় ইনিংসে ৫ উইকেট করে ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে অতীতের সব পারফরম্যান্স ছাড়িয়ে গেছেন। সেঞ্চুরির সঙ্গে ৫ উইকেটপ্রাপ্তি, দুই হাজার রানের মাইলফলক পেয়েছেন। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ২১৭ রানে পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ১১১ রানে। ফ্লাডলাইটের আলো জ্বেলে নির্ধারিত সময়ের বেশি খেলান আম্পায়াররা। প্রায় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খেলা হয়। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটাররা তাতে আপত্তি করেননি। তাইজুল ৩, নাঈম ১ ও মিরাজ ৫ উইকেট নিলে ম্যাচ শেষ হয়।
সিলেটে প্রথম টেস্ট হারের পর চট্টগ্রামে প্রভাব বিস্তার করে খেলে ম্যাচ জেতার পরও খুশি নন অধিনায়ক শান্ত, ‘আমি টেস্ট সিরিজ ড্র করে খুশি না। কারণ, প্রথম টেস্টে আমরা একেবারেই ভালো খেলিনি। এই টেস্টে একপেশে খেলে জিতলেও সিরিজে আরও ভালো খেলা উচিত ছিল। সিরিজটি জিততে হতো।’ টাইগার দলপতি জানান, এই পারফরম্যান্স শ্রীলঙ্কা সফরে কাজে দেবে। দেশের মাটিতে স্পোর্টিং উইকেট বানিয়ে বিদেশে খেলার পরিবেশ তৈরি করছিল বিসিবি। ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হচ্ছে। কিউইদের বিপক্ষে সিলেটে ঐতিহাসিক জয় পেলেও মিরপুর থেকে হারতে শুরু করে। দেশের মাটিতে টানা ছয় হারের পর জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ।