ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাক্‌-প্রফেশনাল মাস্টার অব এডুকেশন (প্রাক্‌-এমএড) ও প্রফেশনাল মাস্টার অব এডুকেশন (এমএড) কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি নেবে। ভর্তির জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছে। অনলাইনে ফরম পূরণের সময় ভর্তির আবেদন ফি বাবদ নির্ধারিত ২০০০ (দুই হাজার) টাকা বিকাশের মাধ্যমে জমা দিতে হবে।

আরও পড়ুনযুক্তরাজ্যর থিঙ্ক বিগ স্কলারশিপ, টিউশন ফি–জীবনযাত্রার খরচসহ মিলবে নানা সুবিধা৭ ঘণ্টা আগে

প্রাক্‌-প্রফেশনাল মাস্টার অব এডুকেশন (প্রাক্‌-এমএড) কোর্সের মেয়াদ ১ সেমিস্টার (৬ মাস)। যাদের বিএড বা সমমানের ডিগ্রি নেই তারা এমএডের পূর্বপ্রস্তুতিমূলক এই কার্যক্রমে আবেদন করতে পারবেন। এ কার্যক্রমের সফল সমাপনের পরে প্রফেশনাল মাস্টার অব এডুকেশন মূল কার্যক্রমে সরাসরি ভর্তি হওয়া যাবে।

প্রফেশনাল মাস্টার অব এডুকেশন (এমএড) কোর্সে ৩ সেমিস্টার (১৮ মাস) মেয়াদের। যাঁদের বিএড বা সমমানের ডিগ্রি আছে, কেবল তাঁরাই এ প্রোগ্রামে/কার্যক্রমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনসংক্রান্ত তথ্য—

ক.

প্রাক্‌-প্রফেশনাল মাস্টার অব এডুকেশনে ভর্তিতে আবেদনে ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে।

খ. প্রফেশনাল মাস্টার অব এডুকেশনে ভর্তিতে বিএড (সম্মান) অথবা ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রিসহ বিএড/বিএসএড/ বিপিএড/ডিপ-ইন-এড/ডিপিএড/সি-ইন-এড ডিগ্রি থাকতে হবে।

উভয় কার্যক্রমে প্রার্থীদের শিক্ষাজীবনের সব পরীক্ষায় ন্যূনতম দ্বিতীয় শ্রেণি অথবা জিপিএ/সিজিপিএ-এর ক্ষেত্রে ন্যূনতম ২.৫ থাকতে হবে। শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট চাকরিরত প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে; তবে তাদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিসহ আবেদন করতে হবে।

আরও পড়ুনবাংলাদেশি চিকিৎসক ও নার্সদের আয়ারল্যান্ডে ক্যারিয়ারের সুযোগ, পরীক্ষা তিনটি ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ভর্তিসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নির্দেশনা শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। আগ্রহী প্রার্থীকে অনলাইন ফরম পূরণের জন্য নিম্নোক্ত লিংক এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে।

অনলাইন ফরম পূরণের সময় সব শিক্ষাগত যোগ্যতা (এসএসসি থেকে ব্যাচেলর/মাস্টার্স পর্যন্ত সব মূল সনদের একটি PDF ফাইল) এবং অভিজ্ঞতার সনদ আপলোড করতে হবে।

আরও পড়ুন৪৮ জেলায় ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ, এইচএসসি পাস ১৮-৩৫ বয়সীর সুযোগ, ভাতা দৈনিক ২০০০৬ মার্চ ২০২৫

গুরুত্বপূর্ণ তারিখ

অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণে শেষ সময়: ২০ মার্চ, রাত ১১: ৫৯ মিনিট পর্যন্ত

ভর্তি পরীক্ষা: ১৮ এপ্রিল ২০২৫ (শুক্রবার)। বেলা ১১টা, স্থান: আইইআর ভবন

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন য নতম

এছাড়াও পড়ুন:

অধ্যাপক ইউনূসের সংস্কারের অঙ্গীকারের এক বছর পরেও কারাগারে সাংবাদিকেরা: সিপিজে

সাংবাদিক ফারজানা রুপা চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকার একটি জনাকীর্ণ আদালতে আইনজীবী ছাড়াই দাঁড়িয়েছিলেন। বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করছিলেন। ইতিমধ্যে অন্য মামলায় কারাগারে থাকা এই সাংবাদিক শান্তভাবে জামিনের আবেদন জানান। ফারজানা বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমার বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি একজন সাংবাদিক। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি মামলাই যথেষ্ট।’

বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের (সিপিজে) এক নিবন্ধে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপার বিরুদ্ধে ৯টি হত্যা মামলা রয়েছে। আর তাঁর স্বামী চ্যানেলটির সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদের নামে রয়েছে আটটি হত্যা মামলা।

এক বছর আগে ছাত্রদের নেতৃত্বে কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভের পর পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বিক্ষোভ চলাকালে দুজন সাংবাদিক নিহত হন। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

অধ্যাপক ইউনূস গণমাধ্যম সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের অধীন সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু ২০২৪ সালের নভেম্বরে ডেইলি স্টার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস বলেছিলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তাড়াহুড়ো করে হত্যার অভিযোগ আনা হচ্ছে। তিনি আরও বলেছিলেন, সরকার তখন থেকে এ ধরনের পদক্ষেপ বন্ধ করে দিয়েছে। মামলাগুলো পর্যালোচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কিন্তু প্রায় এক বছর পর এখনো সাংবাদিক ফারজানা রুপা, শাকিল আহমেদ, শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল হক বাবু কারাগারে আছেন। হত্যায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পৃথক মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বিগত সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের বারবার ব্যবহারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সেন্সরশিপ বলেই মনে হচ্ছে।

এ ধরনের আইনি অভিযোগ ছাড়াও সিপিজে সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক হামলা, রাজনৈতিক কর্মীদের কাছ থেকে হুমকি এবং নির্বাসনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কমপক্ষে ২৫ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে তদন্ত করছে। এই অভিযোগ সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

সিপিজের আঞ্চলিক পরিচালক বেহ লিহ ই বলেন, ‘চারজন সাংবাদিককে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই এক বছর ধরে কারাগারে আটকে রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার ঘোষিত প্রতিশ্রুতিকে দুর্বল করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত সংস্কার মানে অতীত থেকে বেরিয়ে আসা, এর অপব্যবহারের পুনরাবৃত্তি নয়। যেহেতু আগামী মাসগুলোতে দেশে নির্বাচন হতে চলেছে, তাই সব রাজনৈতিক দলকে সাংবাদিকদের খবর প্রকাশের অধিকারকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।’

আইনি নথি ও প্রতিবেদন নিয়ে সিপিজের এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এফআইআর নথিভুক্ত হওয়ার অনেক পর সাংবাদিকদের নাম প্রায়ই এতে যুক্ত করা হয়। মে মাসে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, গত বছরের বিক্ষোভের পর ১৪০ জনের বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

শ্যামল দত্তের মেয়ে শশী সিপিজেকে বলেন, তাঁর বাবার বিরুদ্ধে এখন কতগুলো মামলা চলছে, পরিবার তার হিসাব রাখতে পারেনি। তাঁরা অন্তত ছয়টি হত্যা মামলার কথা জানেন, যেখানে শ্যামল দত্তের নাম আছে। মোজাম্মেল বাবুর পরিবার ১০টি মামলার কথা জানে। ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদের পরিবার সিপিজেকে জানিয়েছে, তারা পাঁচটি মামলার এফআইআর পাননি, যেখানে একজন বা অন্য সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মানে হলো তাঁদের কেউই জামিনের আবেদন করতে পারছেন না।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম ও পুলিশের মুখপাত্র এনামুল হক সাগরকে ই–মেইল করে সিপিজে। তবে তাঁরা সাড়া দেননি বলে সিপিজের নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ