Prothomalo:
2025-05-01@14:06:11 GMT

প্রশাসন কেন এমন নির্বিকার

Published: 10th, March 2025 GMT

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ রোপওয়ের (রজ্জুপথ) সংরক্ষিত বাংকার এলাকার যে চিত্র প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, তাতে করে কারও কাছে স্বাধীন–সার্বভৌম অঞ্চল বলে বিভ্রমের সৃষ্টি হতে পারে। হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন ৩৫৯ একরের এই বাংকার থেকে নির্বিচার পাথর লুট করে চলেছে।

গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে যে শিথিলতা তৈরি হয়েছে, তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের নির্বিকারতা। ফলে সাত মাসে আনুমানিক ২০০ কোটি টাকার পাথর লুট হয়ে গেছে। নির্বিচার লুটের কারণে বাংকারটি শিগগিরই পাথরশূন্য হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় লোকজনের বরাতে, আগে মানুষ আড়ালে-আবডালে পাথর তুলত। ৫ আগস্ট বাংকারের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) আবাসনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ভাঙচুর করা হয়। এর পর থেকে প্রকাশ্যে পাথর তোলা হচ্ছে। মাঝেমধ্যে প্রশাসনের অভিযান চললে লুটপাটকারীরা সটকে পড়ে। অভিযানকারীরা চলে গেলে আবার লুটপাট শুরু হয়। দিনে পাথর উত্তোলন কম হলেও বিকেলের পর থেকে সারা রাত অবাধে চলে।

পাথর তুলে শ্রমিকেরা বারকি নৌকার মালিকদের কাছে বিক্রি করছেন। নৌকার মালিকেরা ক্রাশার মিলমালিকদের কাছে তা বিক্রি করছেন। সেসব পাথর মেশিনে ভেঙে ছোট করে পাথর ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করা হয়। ব্যবসায়ীরা ট্রাক ও পিকআপে করে পাথর দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠান।

ফলে পাথর উত্তোলন, পাথর বিক্রি, পাথর ভাঙা ও পাথর পরিবহন—সব কাজ এতটাই পদ্ধতিগতভাবে চলছে যে পুরো বিষয়টা যে অবৈধ, সেটা কে বলবে? উপজেলা প্রশাসনের ভাষ্য হচ্ছে, নিয়মিত অভিযান চালিয়েও লুটপাট ঠেকানো যাচ্ছে না। অভিযান চালাতে গেলে লুটপাটকারীরা সরে যায়। চলে এলে আবার পাথর উত্তোলন শুরু করে দেয়।

বোঝাই যাচ্ছে, অতি প্রভাবশালী গোষ্ঠী এর পেছনে রয়েছে। ফলে শুধু শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে এটা বন্ধ করা যাবে না। শ্রমিকদের কাছ থেকে পাথর যাঁরা কিনছেন, যাঁরা ভাঙছেন এবং যাঁরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাথর পাঠাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এই লুট কি আদৌ বন্ধ করা যাবে?

৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় বাংকারটির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আরএনবির সদস্যরা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁদের আবাসনও ভাঙচুর করা হয়েছিল। ফলে তাঁরা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে একধরনের নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন। দিনের বেলা তাঁরা পাহারায় থাকলেও সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত পুরো এলাকা অরক্ষিত থেকে যাচ্ছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, এভাবে প্রকাশ্যে পাথর লুট হবে আর প্রশাসন কেন চোখ বন্ধ করে রাখবে? ভোলাগঞ্জের সংরক্ষিত বাংকার এলাকা থেকে যেকোনো মূল্যে পাথর লুট বন্ধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের নির্লিপ্ততা, অজুহাত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৫০ হাজার থেকে কমে সাড়ে ৩ হাজারে নেমেছে সেবাগ্রহীতা

মুঠোফোন নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলে নেওয়ার (এমএনপি) সুবিধা সাত বছরেও খুব একটা জনপ্রিয় হয়নি। শুরুতে মাসে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ এই সেবা নিতেন। এখন সেটা নেমে এসেছে সাড়ে তিন হাজারে।

রাজধানীর একটি হোটেলে আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ‘মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি): চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

মুঠোফোন নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলের সুবিধা জনপ্রিয় না হওয়ার পেছনে সাতটি কারণকে দায়ী করেন এমএনপি খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

কারণগুলো হলো উচ্চ সিম কর, নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাধা, আবেদন বাতিলের উচ্চ হার, অপারেটরদের অসহযোগিতা, খুদে বার্তা বা এসএমএস জটিলতা, ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড)–সংক্রান্ত জটিলতা এবং মুঠোফোনে আর্থিক সেবা বা এমএফএস–সংক্রান্ত জটিলতা।

কর্মশালাটি আয়োজন করে টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ (টিআরএনবি)।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ২০১৮ সালের অক্টোবরে ঘটা করে এমএনপি সেবা চালু করে। এই সেবা নিলে গ্রাহক নম্বর ঠিক রেখে এক অপারেটর থেকে অন্য অপারেটরে যেতে পারেন।

প্রথম বছরেই এমএনপি সেবায় সাড়া ছিল ভালো। বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মে মাসে ১ লাখ ১১ হাজার ১২৭ জন গ্রাহক নম্বর একই রেখে অপারেটর বদল করেন। কিন্তু বছর ঘুরতেই সেই সংখ্যা নেমে আসে কয়েক হাজারে। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চ মাসে এই সেবাগ্রহীতার সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ হাজার ৫২২ জনে।

এমএনপি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ইনফোজিলিয়নের টেকনিক্যাল লিড ওবায়দুল ইসলাম বলেন, বিশ্বের ৭২তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে এমএনপি চালু হয়। প্রথম বছরে যেখানে সাত লাখ গ্রাহক এ সেবা গ্রহণ করেছিলেন, পরবর্তী ছয় বছরে সেই সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য কোনো বৃদ্ধি ঘটেনি। বর্তমানে ৯৭ শতাংশ গ্রাহক এমএনপি সেবা ব্যবহার করছেন না, যার প্রধান কারণ বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণগত বাধা।

ইনফোজিলিয়নের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাবরুর হোসাইন বলেন, ‘গ্রাহকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি, কিন্তু নানা বিধিনিষেধে সেই স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বাধাগুলো দূর করা গেলে পরোক্ষভাবে সরকারের রাজস্বও বাড়বে, পাশাপাশি গ্রাহক পাবেন সর্বোত্তম সেবা।’

কর্মশালায় টিআরএনবির সাবেক সভাপতি রাশেদ মেহেদী বলেন, এই সেবায় (এমএনপি) সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দেওয়া যেত। তৃতীয় পক্ষের নেটওয়ার্ক ব্যবহারযোগ্য হলে প্রতিযোগিতা বাড়বে।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন টিআরএনবি সভাপতি সমীর কুমার দে। এতে ইনফোজিলিয়নের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোস্তফা কামাল, টিআরএনবির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুনমুঠোফোন নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলের সুযোগ, কিন্তু জনপ্রিয় হয়নি কেন৩১ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫০ হাজার থেকে কমে সাড়ে ৩ হাজারে নেমেছে সেবাগ্রহীতা
  • পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা