“হবিগঞ্জের নদীগুলো ভালো নেই। দখল, দূষণ, বালু ও মাটি উত্তোলনসহ নানা কারণে চরম সংকটে পতিত হয়েছে এখানকার নদীগুলো। এই নদী সমূহকে বাঁচাতে হবে, ভালো রাখতে হবে। নদী ভালো না রাখলে আমরা ভালো থাকব না। সভ্যতা টিকবে না।”
আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবসকে সামনে রেখে ‘আমাদের নদী, আমাদের ভবিষ্যৎ’ প্রতিপাদ্যে সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার ও প্ল্যানেটিয়ার্স ক্লাব হবিগঞ্জের আয়োজনে নদীর কথা বলি শীর্ষক এক কর্মসূচিতে বক্তারা একথা বলেন।
হবিগঞ্জের বার্ডস কেজি এন্ড হাই স্কুল প্রাঙ্গণে খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পরিবেশ সংগঠক অধ্যাপক মো.
আরো পড়ুন:
নেত্রকোণার ধনু নদ থেকে ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার
পদ্মায় গোসলে নেমে এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু
প্লানেটিয়ার্স ক্লাব হবিগঞ্জের সমন্বয়ক সজীব চন্দ্র গোপের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- শিক্ষক সাদিয়া আরফিন রিকি, কাউসার আহমেদ, তুলনা দেব, মাহমুদা আক্তার, শিক্ষার্থী জেরিন খানম স্বর্ণা, উম্মে সাদাফ সৌমি, ঐশী রায় বর্ষা, তাসিন মোহাম্মদ নাবিল, সাইমা আকতার প্রাবন্তি।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শ্রাবন্তি বলেন, “এই দেশ আমাদের। দেশের নদীগুলোও আমাদের। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কারণে আমাদের নদীগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে।”
হবিগঞ্জ পুরাতন খোয়াই নদী দখলমুক্ত করে সাঁতার উপযোগী করার দাবি জানান দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ঐশী রায় বর্ষা।
সপ্তম শ্রেণী শিক্ষার্থী স্বর্ণা ও সৌমি খোয়াই নদীর বন্যা, সুতাং নদীর ভয়াবহ দূষণসহ কয়েকটি নদীর চিত্র তুলে ধরেন তাদের উপস্থাপনায়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মো. ইকরামুল ওয়াদুদ বলেন, “হবিগঞ্জের পরিবেশ ও প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষার ক্ষেত্রে অপরিহার্য খোয়াই নদী, পুরাতন খোয়াই, সুতাং, সোনাইসহ অন্যান্য নদী রক্ষার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা দেখছি না। সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান নদী ও পরিবেশ রক্ষায় যথাযথ ভূমিকা পালন না করলে বর্তমানে নদীগুলো যে অবস্থায় রয়েছে ভবিষ্যতে এই অবস্থাও নষ্ট হবার আশঙ্কা রয়েছে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নুর উদ্দিন জাহাঙ্গীর হবিগঞ্জের নদীগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে তোফাজ্জল সোহেল বলেন, “চরম সংকটে রয়েছে এই অঞ্চলের নদীগুলো। খোয়াই নদীর অভ্যন্তরে এস্কেভেটর, ড্রেজার মেশিন, ট্রাক্টর ঢুকিয়ে অনিয়ন্ত্রিতভাবে মাটি, বালু উত্তোলনের কারণে নদীটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। বর্ষা মৌসুমে মানুষকে বন্যার আশঙ্কায় আতঙ্কে থাকতে হয়। নদী থেকে হারিয়ে যাচ্ছে মাছসহ জলজ প্রাণী।”
পুরাতন খোয়াই নদী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নদীটি দখলমুক্ত করার কার্যকর পদক্ষেপ দেখছি না। দিনদিন দখল, ভরাটের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে।”
তিনি বলেন, “কলকারখানার দূষণে সুতাং নদীকে মেরে ফেলা হচ্ছে। দেশের সব আইন অমান্য করে ব্যাপক দূষণ চালিয়ে আসছে কলকারখানাগুলো। নদী পাড়ের গ্রামবাসী ভয়াবহ পরিবেশ ও মানবিক সংকটে রয়েছেন।”
ঢাকা/মামুন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নদ খ য় ই নদ র নদ গ ল পর ব শ আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ: এবার কাদের বিপক্ষে, কবে খেলবে বাংলাদেশ?
আইসিসির বৈশ্বিক টেস্ট লিগ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। তিনটি সফল চক্র শেষে চতুর্থ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্র, ২০২৫-২৭ মাঠে গড়ানোর অপেক্ষা। মঙ্গলবার (১৭ জুন) গলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার টেস্ট দিয়ে শুরু হবে চতুর্থ চক্রের খেলা।
প্রতিটি দল দুই বছরের মধ্যে ছয়টি সিরিজ খেলবে। যার তিনটি দেশের মাটিতে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। প্রতিটি সিরিজ হবে কমপক্ষে দুই টেস্টের। সর্বোচ্চ পাঁচটি টেস্ট থাকতে পারবে এক সিরিজে। এই সময়ে সিরিজ হবে মোট ২৭টি, যেখানে টেস্টের সংখ্যা ৭১টি। ২০২৭ সালের জুনে লিগ টেবিলের শীর্ষ দুই দলকে নিয়ে হবে ফাইনাল। শেষ তিন আসরের মতো ইংল্যান্ডেই বসবে সাতাশের ফাইনাল। সম্ভাব্য ভেন্যু লর্ডস।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম চক্রে বাংলাদেশ সাতটি ম্যাচ খেলেছিল। জিততে পারেনি কোনো ম্যাচ। ড্র করেছিল একটি। হেরেছিল ছয়টি। পরের চক্রে ১২ ম্যাচে মাত্র ১ জয়, ১০টাতেই হার।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টেস্ট পরিসংখ্যান
বাংলাদেশের বিপক্ষে হোম সিরিজে শ্রীলঙ্কার টেস্ট দল ঘোষণা
সর্বশেষ টেস্ট চক্রে বাংলাদেশ তিনটি ম্যাচ দেশের বাইরে, একটি দেশের মাটিতে জিতেছে। সব মিলিয়ে ১২ ম্যাচে চারটিতে জিতেছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ম্যাচের সিরিজ জিতেছিল। এছাড়া নিউ জিল্যান্ডকে দেশের মাটিতে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিদেশে হারিয়েছিল।
এবারের চক্রে বাংলাদেশ ১২টি ম্যাচ খেলবে। মোট ছয়টি সিরিজ। তিনটি দেশের বাইরে, তিনটি দেশের মাটিতে। দেশের বাইরে বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কার পর কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। কেননা দুটি সফরই শেষবারের দুই ফাইনালিস্টদের বিপক্ষে। অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজ রয়েছে বাংলাদেশের। এছাড়া ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে দেশের মাটিতে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই টেস্টের পর বাংলাদেশকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পরের ম্যাচের জন্য ২০২৬ সালের মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পাকিস্তান ২০২৬ সালের মার্চে বাংলাদেশ সফর করবে। ২টি টেস্ট বাদেও ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলবে। ওই বছরের অক্টোবরে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আতিথেয়তা দেবে। নভেম্বর বাংলাদেশ যাবে দক্ষিণ আফ্রিকায়।
এরপর ২০২৭ সালে ইংল্যান্ড দুই টেস্টের জন্য আসবে ফেব্রুয়ারিতে। মার্চে বাংলাদেশ যাবে অস্ট্রেলিয়া সফরে। ২০০৩ সালের পর ২০২৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। আর এই সিরিজ দিয়ে বাংলাদেশের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ চক্র শেষ হবে।
নতুন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের লক্ষ্য নিয়ে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছিলেন, ‘‘টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে আমরা গত বছর (চক্রে) ৭ নম্বরে শেষ করেছি। এই বছর তো অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে যেন ৪-৫-৬ নম্বরের মধ্যে আসতে পারি। তাহলে খুব ভালো হয়।”
“গত বছর (চক্রে) জয়ের হার সম্ভবত ৪৫ শতাংশ (আসলে ৪৫ পয়েন্ট ও ৩১.২৫ শতাংশ) ছিল। এখান থেকে যদি বাড়াতে পারি—৫০-৫৫ বা ৬০ শতাংশ হলে, একজন অধিনায়ক হিসেবে আমার মনে হয়, ভালো একটা ফল হবে আমাদের।”– যোগ করেন শান্ত।
ঢাকা/ইয়াসিন