ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানা চত্বরে আসামির স্বজন ও ছাত্রদল নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। আজ মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে থানা চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর ছাত্রদলের সদস্যসচিব রিদওয়ান আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এলাকা থেকে দুজন আসামিকে পুলিশ ধরে নিয়ে আসে। আটক ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে থানা চত্বরে গিয়ে কথা বলতে থাকি। কিছুক্ষণ পর পুলিশ সদস্য মিজানুর রহমান এসে আমাদের বের হতে বলেন। এ সময় পুলিশ সদস্য উচ্চবাচ্য শুরু করে। ওই সময় আমি নিজেকে ছাত্রদলের সদস্যসচিব পরিচয় দিলে পুলিশ সদস্য আরও ক্ষুব্ধ হন।’

ছাত্রদলের এ নেতা আরও বলেন, ‘পুলিশ সদস্য থানার ভেতরে গিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে আবার বাইরে বের হয়ে আসে। এ সময় নিজের শরীরের পোশাক ছিঁড়ে বলতে থাকে আমার পোশাক ছিঁড়লি কেন, গায়ে হাত তুললি কেন। ওই সময় থানা চত্বরে থাকা আসামির পরিবারের সদস্যদেরও মারধর করা হয়। পরে আমাকে থানার ওসি কক্ষে নিয়ে যায়। আমি পুরো ঘটনা ওসিকে জানিয়ে পুলিশ সদস্যের বিচার চাই। পরে পৌর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া থানায় গেলে ওসি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেন।’

থানা চত্বরে মারধরের বর্ণনা দেন এক আসামির স্বজন শিমরাইল গ্রামের বাসিন্দা লুৎফুন নাহার। তিনি বলেন, ‘আমার ভাই আমিনুল ইসলামকে গত রাতে পুলিশ ধরে নিয়ে আসে। আজ মাদকের মামলায় চালান দেয়। ভাইকে আদালতে পাঠানোর সময় থানা চত্বরে অপেক্ষমাণ থাকার সময় আমাকেও মারধর করা হয়। আমি এ ঘটনার বিচার চাই৷’

মুঠোফোনে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে পুলিশ সদস্য মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ওসির সঙ্গে কথা বলেন।’

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ সদস্যের সঙ্গে ছাত্রদলের একজনের কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরে আমি ডেকে নিয়ে এসে বিষয়টি মিটমাট করে দিয়েছি। আসামিদের আদালতে পাঠানোর জন্য বের করার সময় থানা চত্বরে বাইরের লোক রাখা হয় না। থানা চত্বরে থাকা লোকজনকে বের হতে বলায় বাগ্‌বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প ল শ সদস য র ছ ত রদল র ম রধর র র সদস

এছাড়াও পড়ুন:

জমিজমার বিরোধে থানায় সালিসে গিয়ে ‘রাজনৈতিক মামলায়’ গ্রেপ্তার যুবক

জমিজমা–সংক্রান্ত বিরোধে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় সালিসে আসা এক যুবককে ‘রাজনৈতিক মামলায়’ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওই যুবকের মা আনারা বেগম এ কথা জানান।

গ্রেপ্তার ওই যুবকের নাম আল-আমিন (৩২)। তাঁর বাড়ি নগরের বলাশপুর এলাকায়। মায়ের দাবি, আল-আমিন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। সালিসে জমিজমার কাগজ ঠিক থাকায় সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে রাজি না হলে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ওই যুবক যুবলীগের সমর্থক। তাঁকে গ্রেপ্তারে কয়েকবার বাড়িতে অভিযানও চালিয়েছে পুলিশ। থানায় তাঁকে পেয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদিও গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো প্রতিবেদনে তাঁকে নগরের কেওয়াটখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আল-আমিনের মা আনারা বেগম বলেন, ২০২১ সালে বলাশপুর এলাকায় স্বামীর পেনশনের ১৭ লাখ টাকায় ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ জমি কেনেন তাঁরা। এর আগে ২০০৮ সালে একই দাগে ৪ শতাংশ জমি কেনার দাবি করে ২০২২ সালে জোরপূর্বক সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করেন এক ব্যক্তি। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিস হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। ৫ আগস্টের পর সরকার পরিবর্তন হলে নিজের কেনা জমিতে বাড়ি করার উদ্যোগ নিলে বাধা হয়ে দাঁড়ান ওই ব্যক্তি ও তাঁর পক্ষের লোকজন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে কোতোয়ালি মডেল থানায় উভয় পক্ষকে ডাকা হয়। গত শনিবার রাত আটটায় থানায় সালিস শুরু হয়। চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। সালিসে শেষ পর্যায়ে যখন জমির কাগজপত্র তাঁদের ঠিক পান সালিসকারীরা, তখন ওসি আল-আমিনকে তাঁর কক্ষে নিয়ে পিটিয়ে হাড়গোড় ভেঙে ফেলার হুমকি দেন। পেছনে পেছনে তিনি গিয়ে প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করা হয়। এরপর আল-আমিনকে গারদে ঢুকিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। রাজি না হওয়ায় সাজানো রাজনৈতিক মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

আনারা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো রাজনীতি করে না। আমার ছেলে ব্যবসা করে। তাকে রাজনৈতিক মামলায় পুলিশ কারাগারে পাঠিয়েছে।’

২৭ জুলাই আল-আমিনকে আদালতে পাঠানোর প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১টা ৩৫ মিনিটে পুলিশের টহল দল নগরের আকুয়া ভাঙ্গাপুল এলাকায় অবস্থানকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে সদরের উত্তর দাপুনিয়ার সরকারি পুকুরপাড় সেলফি নামের স্থানে পাকা রাস্তার ওপর একদল সন্ত্রাসী জনতাবদ্ধ হয়ে রাস্তা বন্ধ করে গাড়ি ভাঙচুর ও দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টি করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৫টি মশাল, ২০টি লাঠি, ৩০টি ইটের টুকরা, ২৫টি কাচের টুকরা জব্দ করা হয়। এ ঘটনার পরদিন পুলিশ কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় আল-আমিনকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে ২৬ জুলাই রাত ১১টা ৪০ মিনিটে নগরের কেওয়াটখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রতিবেদনে পুলিশ আল-আমিনকে যুবলীগের সমর্থক হিসেবে উল্লেখ করে।

থানার ওই সালিসে থাকা মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মো. বাবু বলেন, থানা চত্বরের একটি ঘরে এসআই সজীব কোচের উপস্থিতিতে দুই পক্ষের কাগজপত্র বোঝেন, এমন লোকজন নিয়ে সালিস শুরু হয়। একপর্যায়ে আল-আমিনকে ‘ফ্যাসিস্ট’ আখ্যায়িত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে তাঁকে থানা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়।

জানতে চাইলে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‘১০ দিন আগে থেকে দারোগারা তাঁকে (আল-আমিন) ধরার জন্য খুঁজতেছে। ডেভিল হান্টের আসামি সে। আমাদের দুই দারোগা ছয় থেকে সাতবার তাঁর বাড়িতে রেড দিছে। সে যুবলীগের ফ্যাসিস্ট। মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তদন্তে প্রাপ্ত আসামি।’ ওসি বলেন, কোনো কাগজপত্র দিয়ে নোটিশ করে তাঁকে থানায় ডাকা হয়নি। বিচারক যদি মনে করে আমরা তাঁকে ইলিগ্যাল অ্যারেস্ট করেছি, তাহলে আদালত ফাইন্ডিংস দেবেন। আসামিকে থানা থেকে গ্রেপ্তার করা কী নিষেধ আছে?’ আদালতের প্রতিবেদনে ভিন্ন স্থান দেখানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জজ এটার বিচার করবে। যদি এমন কইরা থাকে, সমস্যা কী?’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে ১০ শ্রমিক আহত
  • ময়মনসিংহে জয়নুল আবেদিন উদ্যানে উচ্ছেদ হচ্ছে মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্ক
  • অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, পাহাড়ে ভূমিধসের শঙ্কা
  • ময়মনসিংহে ময়লা ছিটিয়ে টাকা ছিনতাই, দুই বছর পর ঢাকা থেকে আসামি গ্রেপ্তার
  • সাগরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত, ঢাকাসহ ৪ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস
  • ময়মনসিংহের সেই মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্কের চুক্তি বাতিল, অপসারণের উদ্যোগ
  • ময়মনসিংহে বন্ধুর বাড়িতে যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ
  • টাঙ্গাইলে কুকুরের কামড়ে ২৫ জন আহত
  • জমিজমার বিরোধে থানায় সালিসে গিয়ে ‘রাজনৈতিক মামলায়’ গ্রেপ্তার যুবক
  • ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি, আজও বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস