ইন্টার্নি চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে বর্হিবিভাগ বন্ধ
Published: 12th, March 2025 GMT
পাঁচ দাবিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মবিরতিতে গেছেন ইন্টার্নি চিকিৎসকেরা। এর ফলে ঢাকা মেডিকেলের বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে এ কর্মসূচি চলছে। ঢাকা মেডিকেলের পাশাপাশি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের বহির্বিভাগে বন্ধ আছে। ফলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বিপদে পড়েছেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ‘সর্বস্তরের চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থীদের’ ব্যানারে দিনভর কর্মসূচি পালনের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলনে কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়। পাঁচ দাবিতে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক নাদিম হোসাইন।
ইন্টার্নি চিকিৎসকদের কর্মবিরতি এবং বর্হিবিভাগ বন্ধ থাকায় চরম বিপদে পড়েছেন রোগীরা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন রোকসানা বেগম। তিনি চর্ম রোগে অক্রান্ত বলে জানালেন।
মুন্সীগঞ্জ থেকে ১৬ মাস বয়সী শিশুকে নিয়ে এসেছেন মা সায়মা বেগম। তিনি বলছিলেন, টিকেট কাটার পরও বাচ্চাকে দেখাতে পারেন নি।
ঢাকা মেডিকেলের বর্হিবিভাগ সূত্র বেলা সাড়ে ১২টার দিকে জানায়, প্রতিদিন এ সময় অন্তত ৭০০ টিকেটে বিক্রি হয়ে যায়। আজ এখন পর্যন্ত অনলাইন ও সরাসরি মিলে ১৯০টি টিকেট বিক্রি হয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ইন্টার্নি চিকিৎসক শরিফুল হাসান রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, সকাল নয়টা থেকে তাঁদের কর্মবিরতি চলছে। সোহরাওয়ার্দী ও ঢাকা মেডিকেলের পাশাপাশি মিডফোর্ট হাসপাতালের বর্হিবিভাগও বন্ধ আছে।
এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবে না- এমন দাবি তুলে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের দাবিতে সংহতি প্রকাশ করে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টেইনি চিকিৎসকরা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ বর হ ব ভ গ ইন ট র ন চ ক ৎসক
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলিম নারী চিকিৎসকেরা হারিয়ে গেলেন কেন
কর্দোভার সংকীর্ণ গলিতে এক নারী দ্রুত পা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর হাতে একটি কাঠের বাক্স, ভেতরে হাতে তৈরি মলম ও ঔষধি গাছ। তিনি আল-জাহরাভির কন্যা, একজন ধাত্রী, যিনি প্রসূতি মায়েদের সেবা করছেন। তাঁর কাজ শুধু শারীরিক নিরাময় নয়, বরং একটি সম্প্রদায়ের আস্থা ও আশার প্রতীক।
মধ্যযুগের মুসলিম বিশ্বে মুসলিম নারী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এমন অগণিত গল্প রচনা করেছেন, যা চিকিৎসাবিজ্ঞান ও সমাজের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলেছে। তৃতীয় ও শেষ পর্বে আমরা তাঁদের প্রভাব, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে তুলনা এবং তাদের ঐতিহাসিক স্বীকৃতির চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করব।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে নারীদের ছাপমুসলিম নারী চিকিৎসকদের কাজ মুসলিম বিশ্বের চিকিৎসাব্যবস্থাকে একটা কাঠামো দিয়েছে। রুফায়দা আল-আসলামিয়া (রা.)-এর মোবাইল হাসপাতালের ধারণা আধুনিক ফিল্ড হাসপাতালের পূর্বসূরি। তাঁর তাঁবু যা মদিনার মসজিদে নববিতে স্থাপিত হয়েছিল, স্বাস্থ্যসেবার মডেল হিসেবে কাজ করেছে।
২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারিতে মসজিদগুলো চিকিৎসা ও টিকাকরণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা রুফায়দার মসজিদভিত্তিক তাঁবুর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।এই মডেল পরবর্তী সময়ে আব্বাসীয় যুগের বিমারিস্তানে (হাসপাতাল) প্রতিফলিত হয়, যেখানে শিহাবুদ্দিন আল-সায়িগের (মৃ. ১৬২৭ খ্রি.) কন্যার মতো নারীরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। (আল-সাঈদ, আত-তিব ওয়া রায়িদাতুহু আল-মুসলিমাত, পৃ. ১৮৯, আম্মান: দারুল ফিকর, ১৯৮৫)
নারীদের ওষুধ তৈরি ও শল্যচিকিৎসার কাজ চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। আল-জাহরাভির (৯৩৬-১০১৩ খ্রি.) গ্রন্থ আত-তাসরিফ নারী চিকিৎসকদের জন্য শিক্ষার ভিত্তি ছিল, বিশেষ করে প্রসূতি ও গাইনোকোলজিতে। এই গ্রন্থ ইউরোপে অনূদিত হয়ে রেনেসাঁসের চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রভাব ফেলেছে। ১৯০৮ সালে গ্রন্থটির আধুনিক সংস্করণ প্রকাশ পেয়েছে কায়রো ‘দারুল কুতুব’ থেকে।
আন্দালুসে উম্ম হাসান বিনত কাজি তানজালি (১৪ শতক) চিকিৎসাশিক্ষার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম তৈরি করেন, যা শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। (আবু বকর ও আল-সাদি, আন-নিসা ওয়া মিহনাত আল-তিব, পৃ. ২১২, কায়রো: দারুল কুতুব, ১৯৯৯)
এই কাজগুলো আধুনিক পাবলিক হেলথ সিস্টেমের পূর্বসূরি হিসেবে বিবেচিত হয়।
আরও পড়ুনযে নারী সাহাবির বিয়ের পরামর্শদাতা ছিলেন রাসুল (সা.)২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩নারীদের ওষুধ তৈরি ও শল্যচিকিৎসার কাজ চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে