রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পাঁচ দফা দাবিতে মহাসমাবেশ করছেন চিকিৎসকেরা। আজ বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে এ সমাবেশ শুরু হয়।

আন্দোলনকারীরা জানান, আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ সারা দেশের মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীদের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। সরকারি–বেসরকারি সব হাসপাতালে ইনডোর ও আউটডোর সেবা বন্ধ থাকবে। তবে মানবিক বিবেচনায় জরুরি সেবা চলমান থাকবে। একই সঙ্গে বৈকালিক চেম্বার বন্ধ থাকবে। এ সমাবেশে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের চিকিৎসকেরা মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছেন।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মহাসমাবেশ শেষ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দিকে পদযাত্রা করবেন।

‘ন্যাশনাল স্টিয়ারিং কমিটি পাইওনিয়ার অব ফাইভ পয়েন্টস মুভমেন্ট’–এর ব্যানারে তাঁরা এ সমাবেশ করছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কনসালট্যান্ট আনোয়ার হোসেন বলেন, একজন চিকিৎসক তাঁর পদবি ব্যবহার করবেন। কিন্তু চিকিৎসক নন, এমন ব্যক্তিরা চিকিৎসক পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না। কিন্তু চিকিৎসকের সহকারীরা চিকিৎসক পদবি ব্যবহার করছেন। এটা চরম অন্যায় এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে চরম বৈষম্য। এসব ভুয়া চিকিৎসকদের জন্য অনেকেই ভুল চিকিৎসার শিকার হচ্ছেন।

যে পাঁচ দফার দাবিতে চিকিৎসকেরা আন্দোলনে নেমেছেন, সেগুলো তুলে ধরা হলো—

১.

চিকিৎসক বা চিকিৎসক–সমার্থক যেকোনো পদবি ব্যবহার–সংক্রান্ত আদালতে ১৩ বছর ধরে চলমান তিনটি রিট অবিলম্বে নিষ্পত্তি করতে হবে।

মেডিকেলের শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকসমাজের আন্দোলন ও কোর্ট অভিমুখে লং মার্চের পরিপ্রেক্ষিতে রায়ের দিন নির্ধারিত হয়েছে ১২ মার্চ।

২. ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট করা এবং শুধু এমবিবিএস/বিডিএস গ্র্যাজুয়েট চিকিৎসক কর্তৃক ওষুধ প্রেস্ক্রিপশন করা ছাড়া বাকি সব ধরনের প্রেস্ক্রিপশন নিষিদ্ধ করা।

৩. উপজেলায় তীব্র চিকিৎসকসংকট মোকাবিলায় চিকিৎসকদের শূন্য পদে দ্রুত ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ করতে হবে। প্রতিবছর ডেপুটেশনের কারণে উপজেলার সংকট মোকাবিলায় পাঁচ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ এবং চিকিৎসকদের বিসিএস এন্ট্রি বয়স ৩৪–এ উন্নীতকরণ। একই সঙ্গে আলাদা হেলথ সার্ভিস কমিশনের আওতায় ষষ্ঠ গ্রেডে চাকরি প্রবেশপথ তৈরি।

৪. সব ম্যাটস বন্ধ ঘোষণা এবং মানহীন মেডিকেল কলেজ বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ। স্যাকমো পদবি পরিবর্তন–পূর্বক ‘মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট’ পদবি চালু। ইতিমধ্যে শিক্ষাধীন ম্যাটস শিক্ষার্থীদের প্যারামেডিকস হিসেবে সুপারিশ এবং

৫. চিকিৎসক সুরক্ষা আইনের অবিলম্বে বাস্তবায়ন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ক ৎসকদ র র চ ক ৎসক চ ক ৎসক র ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলিম নারী চিকিৎসকেরা হারিয়ে গেলেন কেন

কর্দোভার সংকীর্ণ গলিতে এক নারী দ্রুত পা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর হাতে একটি কাঠের বাক্স, ভেতরে হাতে তৈরি মলম ও ঔষধি গাছ। তিনি আল-জাহরাভির কন্যা, একজন ধাত্রী, যিনি প্রসূতি মায়েদের সেবা করছেন। তাঁর কাজ শুধু শারীরিক নিরাময় নয়, বরং একটি সম্প্রদায়ের আস্থা ও আশার প্রতীক।

মধ্যযুগের মুসলিম বিশ্বে মুসলিম নারী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এমন অগণিত গল্প রচনা করেছেন, যা চিকিৎসাবিজ্ঞান ও সমাজের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলেছে। তৃতীয় ও শেষ পর্বে আমরা তাঁদের প্রভাব, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে তুলনা এবং তাদের ঐতিহাসিক স্বীকৃতির চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করব।

চিকিৎসাবিজ্ঞানে নারীদের ছাপ

মুসলিম নারী চিকিৎসকদের কাজ মুসলিম বিশ্বের চিকিৎসাব্যবস্থাকে একটা কাঠামো দিয়েছে। রুফায়দা আল-আসলামিয়া (রা.)-এর মোবাইল হাসপাতালের ধারণা আধুনিক ফিল্ড হাসপাতালের পূর্বসূরি। তাঁর তাঁবু যা মদিনার মসজিদে নববিতে স্থাপিত হয়েছিল, স্বাস্থ্যসেবার মডেল হিসেবে কাজ করেছে।

২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারিতে মসজিদগুলো চিকিৎসা ও টিকাকরণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা রুফায়দার মসজিদভিত্তিক তাঁবুর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

এই মডেল পরবর্তী সময়ে আব্বাসীয় যুগের বিমারিস্তানে (হাসপাতাল) প্রতিফলিত হয়, যেখানে শিহাবুদ্দিন আল-সায়িগের (মৃ. ১৬২৭ খ্রি.) কন্যার মতো নারীরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। (আল-সাঈদ, আত-তিব ওয়া রায়িদাতুহু আল-মুসলিমাত, পৃ. ১৮৯, আম্মান: দারুল ফিকর, ১৯৮৫)

নারীদের ওষুধ তৈরি ও শল্যচিকিৎসার কাজ চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। আল-জাহরাভির (৯৩৬-১০১৩ খ্রি.) গ্রন্থ আত-তাসরিফ নারী চিকিৎসকদের জন্য শিক্ষার ভিত্তি ছিল, বিশেষ করে প্রসূতি ও গাইনোকোলজিতে। এই গ্রন্থ ইউরোপে অনূদিত হয়ে রেনেসাঁসের চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রভাব ফেলেছে। ১৯০৮ সালে গ্রন্থটির আধুনিক সংস্করণ প্রকাশ পেয়েছে কায়রো ‘দারুল কুতুব’ থেকে।

আন্দালুসে উম্ম হাসান বিনত কাজি তানজালি (১৪ শতক) চিকিৎসাশিক্ষার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম তৈরি করেন, যা শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। (আবু বকর ও আল-সাদি, আন-নিসা ওয়া মিহনাত আল-তিব, পৃ. ২১২, কায়রো: দারুল কুতুব, ১৯৯৯)

এই কাজগুলো আধুনিক পাবলিক হেলথ সিস্টেমের পূর্বসূরি হিসেবে বিবেচিত হয়।

আরও পড়ুনযে নারী সাহাবির বিয়ের পরামর্শদাতা ছিলেন রাসুল (সা.)২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩নারীদের ওষুধ তৈরি ও শল্যচিকিৎসার কাজ চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তিন দফা দাবিতে সিলেটের ওসমানী হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ডাক
  • উদ্ধার হলো এয়ার ইন্ডিয়ার বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের ব্ল্যাক বক্স
  • মুসলিম নারী চিকিৎসকেরা হারিয়ে গেলেন কেন