সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর জানাজা বৃহস্পতিবার, দাফন বনানী কবরস্থানে
Published: 12th, March 2025 GMT
দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর জানাজা হবে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বাদ জোহর।
ঢাকার গুলশান আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে তার মরদেহ দাফন করা হবে বনানী কবরস্থানে।
এপেক্স গ্রুপের মানবসম্পদ বিভাগের এক কর্মকর্তা এসব তথ্য দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক উপদেষ্টা শিল্পপতি সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী আর নেই
লক্ষ্মীপুরে বিএনপির সাবেক এমপি নাজিম উদ্দিন আর নেই
সিঙ্গাপুরের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে (বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৭টা) সেখানকার একটি হাসপাতালে সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে তার পাশে ছিলেন ছেলে সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর ও মেয়ে মুনিজে মঞ্জুর।
দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী মঞ্জুর এলাহীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তার মৃত্যুতে দেশের ব্যবসায়ী মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এর আগে ২০২০ সালের ২৬ মে সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর স্ত্রী ও সানবিমস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ নিলুফার মঞ্জুর চৌধুরী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ১৯৬৬ সালে তারা সংসার জীবন শুরু করেছিলেন।
এপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক এবং গ্রে অ্যাডভারটাইজিং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন।
১৯৭২ সালে মঞ্জুর ইন্ডাস্ট্রিজ নামে কোম্পানি করে কমিশনের ভিত্তিতে চামড়া বিক্রির মাধ্যমে ব্যবসায় আসেন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। চার বছর পর ১৯৭৬ সালে ১২ লাখ ২২ হাজার টাকায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ওরিয়েন্ট ট্যানারি কিনে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন এপেক্স ট্যানারি। তারও ১৪ বছর পর যাত্রা শুরু করা এপেক্স ফুটওয়্যার এখন দেশের শীর্ষস্থানীয় জুতা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান।
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী ১৯৯৬ সালে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। তখন তিনি যোগাযোগ, নৌপরিবহন, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
২০০১ সালেও তিনি সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। তখন তিনি কৃষি, নৌপরিবহন, মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এসবের বাইরে সংগঠক হিসেবেও অনেক কাজ করেছেন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। তিনি মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ঢাকার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৪ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যও তিনি।
১৯৪২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। তার বাবা স্যার সৈয়দ নাসিম আলী (১৮৮৭-১৯৪৬) কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান ১৯৩৩ সালে। তার এক যুগ পর তিনি প্রধান বিচারপতি হয়েছিলেন।
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী কলকাতাতেই স্কুল ও কলেজের পাট শেষ করেন। ১৯৬২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি নেন। তারপর স্নাতকোত্তর করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬৪ সালে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম (এস এম) হলে থাকতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতি করতেন।
তিনি একজন দেশপ্রেমিক ব্যবসায়ী ছিলেন: প্রধান উপদেষ্টা
মঞ্জুর এলাহীর মৃত্যুতে এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, “বাংলাদেশের উদ্যোক্তা জগতে সকলের শ্রদ্ধাভাজন, দেশপ্রেমিক শিল্পপতি সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর মৃত্যুতে আমি গভীর শোক জানাই। আমি তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।”
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী বাংলাদেশের উদ্যোক্তা জগতে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। তিনি একজন দেশপ্রেমিক ব্যবসায়ী ছিলেন। দেশের চামড়া শিল্পকে এগিয়ে নিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তার অক্লান্ত পরিশ্রমে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার দেশের শীর্ষস্থানীয় জুতা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে।”
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট র উপদ ষ ট ব যবস য় ন কর ন কলক ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি ঘিরে উত্তেজনা এখন চূড়ান্তে। ২-১ ব্যবধানে সিরিজে ইংল্যান্ড এগিয়ে থাকলেও পঞ্চম ও শেষ টেস্টটি একটি পরিণতির লড়াই হিসেবে সমাসন্ন। তবে ঠিক এই সময়েই বড় দুঃসংবাদ এসে আঘাত হেনেছে ইংলিশ ড্রেসিংরুমে। ইনজুরিতে পড়ে সিরিজ নির্ধারণী ওভাল টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন অধিনায়ক বেন স্টোকস।
বুধবার (৩০ জুলাই) ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, ওভালে মাঠে নামা হচ্ছে না স্টোকসের। ম্যানচেস্টারে চতুর্থ টেস্টে দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের মাধ্যমে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন তিনি। ব্যাটে-বলে সমান পারদর্শী স্টোকস ছিলেন দলের ভারসাম্য ধরে রাখার অন্যতম স্তম্ভ। তার অনুপস্থিতি তাই শুধু একজন খেলোয়াড়কে হারানো নয়, বরং একটি জয়ের প্রত্যয়ের বড় চ্যাপ্টারও হারানো।
এই ম্যাচে অধিনায়কের দায়িত্ব সামলাবেন ওলি পোপ। যিনি প্রথমবারের মতো সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে নেতৃত্ব দেবেন জাতীয় দলের।
আরো পড়ুন:
শেষ ম্যাচের আগে ভারতের শিবিরে ধাক্কা, বিশ্রামে বুমরাহ
ওভাল টেস্টের ইংল্যান্ড দল ঘোষণা, ওভারটনের প্রত্যাবর্তন
স্টোকস ছাড়াও ওভাল টেস্টে দেখা যাবে না জোফরা আর্চার, ব্রাইডন কার্স ও লিয়াম ডসনকে। চোট ও ফিটনেস ইস্যুর কারণে তারা বাদ পড়েছেন স্কোয়াড থেকে।
অবশ্য একাদশে ফিরেছেন দুই পরিচিত মুখ জশ টাঙ ও জেমি ওভারটন। বিশেষ নজর কেড়েছেন গাস অ্যাটকিনসন। যিনি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মে মাসে খেলার পর হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে ছিলেন মাঠের বাইরে। সারে কাউন্টির হয়ে ফের মাঠে ফিরে জায়গা পেয়েছেন জাতীয় দলে। ইংল্যান্ডের পেস বিভাগে তার উপস্থিতি বাড়াবে গতি ও ধার।
চলতি সিরিজে ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন বেন স্টোকস। চার ম্যাচে তার ঝুলিতে ১৭ উইকেট। ম্যানচেস্টার টেস্টে ভারতের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার ও ব্যাটে সেঞ্চুরি করে একাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়েছিলেন। লর্ডসেও দুই ইনিংস মিলিয়ে রান করেছেন ৭৭, নিয়েছেন আরও পাঁচ উইকেট।
তাই ইংলিশ শিবির শুধু একজন ব্যাটার বা একজন বোলার হারায়নি, তারা হারিয়েছে একজন পূর্ণাঙ্গ ম্যাচ উইনারকে। স্টোকসের মতো একজন অলরাউন্ডার যিনি প্রয়োজনের সময় ছায়ার মতো আক্রমণে নেতৃত্ব দেন এবং ব্যাট হাতে গড়েন ম্যাচের ভিত, তার অভাব যে দলকে নাড়া দেবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের সম্ভাব্য একাদশ:
জ্যাক ক্রাউলি, বেন ডাকেট, ওলি পোপ (অধিনায়ক), জো রুট, হ্যারি ব্রুক, জ্যাকব বেথেল, জেমি স্মিথ (উইকেটকিপার), ক্রিস ওকস, গাস অ্যাটকিনসন, জেমি ওভারটন ও জশ টাঙ।
ঢাকা/আমিনুল