ধর্ষণ মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় কমিয়ে অর্ধেক করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে বলে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানিয়েছেন। আজ বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের’ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর আইন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান উপদেষ্টা। এ সময় ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের’ পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়।

গত রোববার আইন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ধর্ষণের মামলায় তদন্তের সময় ৩০ থেকে কমিয়ে ১৫ দিন করা হচ্ছে। আর বিচার শেষ করতে হবে ৯০ দিনের মধ্যে। এ ছাড়া উপযুক্ত ক্ষেত্রে বিচারক যদি মনে করেন তবে ডিএনএ প্রতিবেদন ছাড়াই চিকিৎসা সনদের ভিত্তিতে এবং পারিপার্শ্বিক সাক্ষীর ভিত্তিতে মামলার বিচারকাজ চালাতে পারবেন। এমন বিধান রেখে আইন সংশোধন করা হচ্ছে। আজ উপদেষ্টা জানান, অধ্যাদেশের খসড়াও তৈরি করা হয়েছে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, গত পরশু ও গতকাল (মঙ্গলবার) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে পরামর্শ সভা করা হয়েছে। একটি খসড়া আইন (অধ্যাদেশ) করা হয়েছে। সেটি আজ কিছু কিছু অংশীজনের কাছে পাঠানো হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব এই আইন কঠোর করার চেষ্টা করা হবে, যাতে ধর্ষণ মামলার বিচার শুধু দ্রুতই নয়, বিচারও যাতে নিশ্চিত ও যথাযথ হয়, এগুলো তাদের (ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ) বলা হয়েছে।

অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে বিজয়ের পরবর্তী সময়ে দেশে মেয়েদের আক্রমণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন গোষ্ঠী থেকে এবং বিভিন্ন ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়েও তাঁদের ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে।

ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, তিনিও মনে করেন তাঁদের প্রতিটি দাবি যৌক্তিক। তাঁরা বলেন, মাগুরায় যে জঘন্য ঘটনা ঘটেছে, সর্বোচ্চ দ্রুততার সঙ্গে যেন বিচার নিশ্চিত করা হয়। তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, মাগুরার ঘটনায় আসামি যারা আছে পুলিশ এরই মধ্যে তাদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে। এই বিচারকাজ কোনোরকম কালবিলম্ব না করে দ্রুত ও ন্যায়বিচার যাতে করা হয়, সে জন্য বিশেষ নজরদারি থাকবে। এটি তাদের বলা হয়েছে।

‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের’ অন্যান্য দাবির বিষয়েও যথাসাধ্য চেষ্টা করা হবে বলে জানান আইন উপদেষ্টা।

‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের’ পাঁচ দফা দাবি

এ সময় ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের’ পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন মঞ্চের একজন প্রতিনিধি। তিনি বলেন, মাগুরায় শিশু ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে এবং এক মাসের মধ্যে যেন বিচারিক কাজটি শেষ হয় ও তাদের আশা দায়ীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা হবে। দ্বিতীয়ত, বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা, যেখানে ধর্ষণের মামলার বিচার হবে। তৃতীয়ত, সারা দেশে নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, সে বিষয়ে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে রাষ্ট্রকে জবাবদিহি করতে হবে, বিশেষ করে আইন, স্বরাষ্ট্র এবং নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টার কথা বলেছেন তাঁরা। চতুর্থত, সারা দেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে ‘নারী ও শিশু নিপীড়নবিরোধী সেল’ কার্যকর করতে হবে। পঞ্চম দাবি হলো, ধর্ষণের ক্ষেত্রে যে আইনগুলো আছে অনেক ক্ষেত্রে সেগুলোর আইনি পরিভাষায় অস্পষ্টতা আছে, যার ফাঁকফোকর ধরে ধর্ষকেরা বেরিয়ে যায়। এগুলো যেন স্পষ্ট করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইন উপদ ষ ট ন উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

ইরান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আরো শক্তিশালী করে পুনর্নির্মাণ করবে

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন, তেহরান তার পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে ‘আরো শক্তিশালী করে’ পুনর্নির্মাণ করবে। রবিবার সরকারি সংবাদমাধ্যমকে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।

ইরানের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, তার দেশ পারমাণবিক অস্ত্রের সন্ধান করছে না।

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, জুন মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে স্থাপনাগুলোতে বোমা হামলা চালিয়েছিল সেগুলো পুনরায় চালু করার চেষ্টা করলে তেহরান ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে নতুন করে হামলার নির্দেশ দেবেন।

ইরানের প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, “ভবন ও কারখানা ধ্বংস আমাদের জন্য কোনো সমস্যা তৈরি করবে না, আমরা আরো শক্তির সাথে পুনর্নির্মাণ করব।”

জুনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়েছিল। ওই সময় ওয়াশিংটন বলেছিল, স্থাপনাগুলো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির লক্ষ্যেএকটি কর্মসূচির অংশ ছিল। তবে তেহরান জানিয়েছিল, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে বেসামরিক উদ্দেশ্যে।

ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমের প্রসঙ্গে পেজেশকিয়ান বলেছেন, “এগুলো জনগণের সমস্যা সমাধানের জন্য, রোগের জন্য, জনগণের স্বাস্থ্যের জন্য।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ