স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেপ্তার
Published: 13th, March 2025 GMT
রাজশাহীতে নবম শ্রেণি পড়ুয়া স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৫। গ্রেপ্তারের পর তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে র্যাব-৫ এর রাজশাহী সদর কোম্পানির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বুধবার (১২ মার্চ) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে রাজশাহীর এয়ারপোর্ট থানার সিন্দুর কুসুন্দি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম জামাদুর ইসলাম (৩৮)। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সাদিপুর গ্রামে তার বাড়ি।
র্যাব জানায়, স্কুলে যাওয়া আসার পথে এক ছাত্রীকে উত্যক্ত করতো তোজাম্মেল হোসেন উজ্জ্বল ওরফে শ্রাবণ (২৭) নামের এক যুবক। গত ২২ জানুয়ারি জামাদুরের সহযোগিতায় ওই ছাত্রীকে চারঘাটের স্কুলের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায় শ্রাবণ। তাকে নিজের বাড়ি নিয়ে গিয়ে শ্রাবণ ধর্ষণ করে।
পরে বিষয়টি জানতে পেরে দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর বাবা। মামলার পর থেকেই জামাদুর পলাতক ছিলেন। তাকে গ্রেপ্তার করে চারঘাট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
ঢাকা/কেয়া/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
তাহিয়্যাতুল অজুর নামাজ
ইসলামে অজু শুধু পবিত্রতার কাজ নয়; বরং এটি মুমিনকে নামাজ ও ইবাদতের জন্য আধ্যাত্মিকভাবে প্রস্তুত করে। অজুর পর আল্লাহর অন্তরঙ্গ সান্নিধ্য লাভের অন্যতম মহান সুন্নাহ হলো তাহিয়্যাতুল অজু, অর্থাৎ অজু সম্পন্ন করার পরে দুটি রাকাত নফল নামাজ আদায় করা।
নবীজি (স.) ও সাহাবিদের আমলে এর বিশেষ গুরুত্ব ছিল, এবং হাদিসে এই আমলের অসামান্য ফজিলত উল্লেখ আছে।
তাহিয়্যাতুল অজু কী?
তাহিয়্যাতুল অজু হলো অজু সম্পন্ন করার পরে আল্লাহর শোকর আদায়ে দুটি রাকাত নফল নামাজ পড়া।
এটি কিছুটা তাহিয়্যাতুল মসজিদ-এর মতো। যেমন মসজিদে প্রবেশ করলে দুই রাকাত পড়ে মসজিদকে সম্মান জানানো হয়, তেমনি অজু শেষ হলে দুই রাকাত নামাজ পড়ে অজুর নিয়ামতকে সম্মান জানানো হয়।
তাহিয়্যাতুল অজুর ফজিলত
এই আমল সম্পর্কে সবচেয়ে শক্তিশালী দলিল হলো সহিহ মুসলিমের বিখ্যাত হাদিস।
সহিহ মুসলিমে বর্ণিত একটি হাদিসে আছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বিলাল (রা.)-কে জিজ্ঞেস করেন, “বিলাল, জান্নাতে তোমার পদধ্বনি আমি আগে আগেই শুনেছি। তুমি এমন কোন আমল কর যে এতে তুমি এত উত্তম মর্যাদা পেয়েছ?”
বিলাল (রা.) বলেন, “ইসলাম গ্রহণ করার পর থেকে আমি কখনো অজু করলেই সেই অজুর ওপর যা আমার ভাগ্যে লেখা আছে (যতটুকু সম্ভব), দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিই।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৪৫৮)
এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে অজুর পরে দুই রাকাত নামাজ আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয় আমল এবং জান্নাতের উচ্চ মর্যাদা অর্জনের উপায়।
আরও পড়ুনঘুমালে কেন অজু ভঙ্গ হয়০৬ অক্টোবর ২০২৫তাহিয়্যাতুল অজুর হুকুম কী?
সুন্নাতে মুআক্কাদাহ নয়, কিন্তু অত্যন্ত মুস্তাহাব ও গুরুত্বের সঙ্গে সুন্নাহ। অধিকাংশ ফকিহের মতে (ইমাম শাফেয়ী, আহমদ প্রমুখ), এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ মুস্তাহাব (পছন্দনীয়) আমল।
হানাফি মত অনুযায়ী, এটি নফল; করলে বিশাল সাওয়াব, না করলে গুনাহ নেই। ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) বলেন, “অজু শেষ করে দুটি রাকাত পড়া নবীজির নিয়মিত সুন্নাহ।” (যাদুল মা’আদ, ১/১৯৫, দারুল ফিকর, বৈরুত, ২০০৫)
তাহিয়্যাতুল অজুর নামাজ পড়ার পদ্ধতি
১. অজু সম্পন্ন করা: শুদ্ধ নিয়তে সঠিক পদ্ধতিতে অজু সম্পন্ন করতে হবে।
২. কেবল ইচ্ছা (নিয়ত) করা: মনে মনে নিয়ত করলেই যথেষ্ট যে “তাহিয়্যাতুল অজু’র দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ছি।”
৩. দুই রাকাত সাধারণ নফল নামাজ: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা ও ছোট একটি সুরা পড়া। দ্বিতীয় রাকাতও একইভাবে পড়া।
৪. সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করা
৫. দোয়া করা: অজুর পর দোয়া কবুলের সময়; তাই দোয়া করা উত্তম।
সহিহ হাদিসে এসেছে, “যে ব্যক্তি অজু করে সুন্দরভাবে অজু সম্পন্ন করবে, তারপর দুই রাকাত নামাজ পড়বে গভীর মনোযোগ সহকারে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৩৪)
আরও পড়ুনঅজু ভাঙার কারণ: পবিত্রতা অর্জনে সতর্কতা১০ জুলাই ২০২৫কোন সময়ে পড়া যাবে?
যেকোনো সময় পড়া যাবে, শুধু নিষিদ্ধ সময় এড়িয়ে চলতে হবে।
সূর্যোদয়ের সময়
সূর্য মধ্যগগণে থাকা অবস্থায়
সূর্য অস্ত যাওয়ার ঠিক আগে
এই তিন সময় ব্যতীত বাকি সবসময় পড়া যায়। তবে শাফেয়ী মত অনুযায়ী জরুরি প্রয়োজনে এই সময়গুলোতেও পড়া যাবে, কারণ এটি একটি নির্দিষ্ট কারণে (অজু) সম্পর্কিত নামাজ।
নারীরা কি তাহিয়্যাতুল অজু পড়বেন?
অবশ্যই। ইবাদতে নারী-পুরুষের বিধান একই।
সাহাবিয়ারাও এই নামাজ পড়তেন।
তাহিয়্যাতুল অজুর উপকারিতা
১. হৃদয়ে প্রশান্তি: অজুতে যে শারীরিক শীতলতা ও স্নায়ুর উদ্দীপনা তৈরি হয়, তারপর নামাজ সেই প্রশান্তিকে দ্বিগুণ করে। (ড. ইব্রাহিম আল-ফাকিহ, হিউম্যান সাইকোলজি, কায়রো, ২০১২)
২. মনোযোগ বৃদ্ধি: অজুর পর তৎক্ষণাৎ নামাজ মানসিক একাগ্রতা ও কগনিটিভ স্থিরতা বাড়ায় (Journal of Religion & Health, ২০১৯)
৩. ইবাদতের ধারাবাহিকতা: নবীজির (স.) মতে, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল হলো “যেটি নিয়মিত পালন করা হয়।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৪৬৪)
অজুর পর নামাজ এই ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করে।
সারকথা
অজুর পর দুই রাকাত নফল নামাজই তাহিয়্যাতুল অজু।
হাদিসে এর অসাধারণ ফজিলত এসেছে।
এটি নফল, সুন্নাহ মুতাবিক খুবই পছন্দনীয় আমল।
যেকোনো সময় (তিন নিষিদ্ধ সময় বাদে) পড়া যায।
নিয়ত করেই দুই রাকাত সাধারণ নফল পড়লেই যথেষ্ট।
আরও পড়ুননামাজ ও কোরআন পড়ার আগে অজু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোরআনে০৭ আগস্ট ২০২৩