বলিউডের মিস্টার পারফেকশনিস্ট আমির খান। ২০২১ সালে দ্বিতীয় সংসারের ইতি টানেন। তারপর গুঞ্জন চাউর হয়, অভিনেত্রী ফাতিমা সানা শেখের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন আমির। এজন্য দ্বিতীয় সংসার ভেঙেছে তার। এরপর আমির-সানার বিষয়টি চাপা পড়ে যায়।   

কিছুদিন আগে গুঞ্জন চাউর হয়, বেঙ্গালুরুর রহস্যময়ী এক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন আমির খান। এ নিয়ে চর্চা শুরু হলেও নীরব ছিলেন ‘দঙ্গল’ তারকা। অবশেষে নতুন প্রেমের সম্পর্কের কথা স্বীকার করলেন তিনি। আমির জানিয়েছেন, তার নতুন প্রেমিকার নাম গৌরি স্প্রাট।

একষট্টিতে পা রাখার পূর্ব মুহূর্তে নতুন প্রেমের কথা স্বীকার করলেও প্রেমিকার পরিচয় জানাননি। তবে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম গৌরির বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন। চলুন জেনে নিই গৌরিকে— 

আরো পড়ুন:

দেব মুখার্জি মারা গেছেন

‘মাধুরী দীক্ষিত দ্বিতীয় শ্রেণির তারকা’

গৌরি স্প্রাট কে
গৌরি স্প্রাট ভারতের বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা। তার মা তামিল। কিন্তু বাবা আইরিশ। তার দাদা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ফ্যাশন অ্যান্ড স্টাইলিং বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন গৌরি। হেয়ার ড্রেসিংয়ের কাজও করেন তিনি। মুম্বাইয়ে একপি সেলুন পরিচালনা করেন গৌরি। এখন আমির খানের প্রোডাকশন হাউজে কাজ করছেন। গৌরির ৬ বছর বয়সি একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। 

আমির-গৌরির প্রেম
গৌরি স্প্রাটকে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে চেনেন আমির খান। তবে তারা ডেট করছে এক বছরের বেশি সময় ধরে। সম্প্রতি গৌরিকে দেখতে বেঙ্গালুরুতে গিয়েছিলেন আমির খান। কিন্তু পুরো ব্যাপারটি আড়ালে রাখার চেষ্টা করেন ‘দঙ্গল’ তারকা। পরে মজা করে আমির খান বলেন, “আমি কাউকে বিষয়টি জানতে দিইনি।”   

আমির খান তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গৌরিকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। তার পরিবার ও সন্তানেরা তাকে সমর্থন করেছেন। শুধু তাই নয়, শাহরুখ খান, সালমান খানের সঙ্গেও গৌরিকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন আমির। 

গৌরি-আমিরের বয়সের ব্যববধান
১৯৬৫ সালের ১৪ মার্চ তৎকালীন বোম্বেতে (মুম্বাই) তাহির হোসেন-জিনাত হোসেন দম্পতির ঘর আলো করে জন্ম নেন আমির খান। শুক্রবার (১৪ মার্চ) ষাট পূর্ণ করে একষট্টিতে পা দিতে যাচ্ছেন মিস্টার পারফেকশনিস্ট। অন্যদিকে, ১৯৭৮ সালের ২১ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন গৌরি স্প্রাট। তার বয়স এখন ৪৬ বছর ৬ মাস। আমির খানের চেয়ে প্রায় ১৪ বছরের ছোট গৌরি।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, সিয়াসাত ডটকম

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম র খ ন ন আম র খ ন

এছাড়াও পড়ুন:

অধ্যাপক ইউনূসের সংস্কারের অঙ্গীকারের এক বছর পরেও কারাগারে সাংবাদিকেরা: সিপিজে

সাংবাদিক ফারজানা রুপা চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকার একটি জনাকীর্ণ আদালতে আইনজীবী ছাড়াই দাঁড়িয়েছিলেন। বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করছিলেন। ইতিমধ্যে অন্য মামলায় কারাগারে থাকা এই সাংবাদিক শান্তভাবে জামিনের আবেদন জানান। ফারজানা বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমার বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি একজন সাংবাদিক। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি মামলাই যথেষ্ট।’

বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের (সিপিজে) এক নিবন্ধে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপার বিরুদ্ধে ৯টি হত্যা মামলা রয়েছে। আর তাঁর স্বামী চ্যানেলটির সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদের নামে রয়েছে আটটি হত্যা মামলা।

এক বছর আগে ছাত্রদের নেতৃত্বে কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভের পর পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বিক্ষোভ চলাকালে দুজন সাংবাদিক নিহত হন। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

অধ্যাপক ইউনূস গণমাধ্যম সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের অধীন সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু ২০২৪ সালের নভেম্বরে ডেইলি স্টার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস বলেছিলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তাড়াহুড়ো করে হত্যার অভিযোগ আনা হচ্ছে। তিনি আরও বলেছিলেন, সরকার তখন থেকে এ ধরনের পদক্ষেপ বন্ধ করে দিয়েছে। মামলাগুলো পর্যালোচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কিন্তু প্রায় এক বছর পর এখনো সাংবাদিক ফারজানা রুপা, শাকিল আহমেদ, শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল হক বাবু কারাগারে আছেন। হত্যায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পৃথক মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বিগত সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের বারবার ব্যবহারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সেন্সরশিপ বলেই মনে হচ্ছে।

এ ধরনের আইনি অভিযোগ ছাড়াও সিপিজে সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক হামলা, রাজনৈতিক কর্মীদের কাছ থেকে হুমকি এবং নির্বাসনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কমপক্ষে ২৫ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে তদন্ত করছে। এই অভিযোগ সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

সিপিজের আঞ্চলিক পরিচালক বেহ লিহ ই বলেন, ‘চারজন সাংবাদিককে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই এক বছর ধরে কারাগারে আটকে রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার ঘোষিত প্রতিশ্রুতিকে দুর্বল করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত সংস্কার মানে অতীত থেকে বেরিয়ে আসা, এর অপব্যবহারের পুনরাবৃত্তি নয়। যেহেতু আগামী মাসগুলোতে দেশে নির্বাচন হতে চলেছে, তাই সব রাজনৈতিক দলকে সাংবাদিকদের খবর প্রকাশের অধিকারকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।’

আইনি নথি ও প্রতিবেদন নিয়ে সিপিজের এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এফআইআর নথিভুক্ত হওয়ার অনেক পর সাংবাদিকদের নাম প্রায়ই এতে যুক্ত করা হয়। মে মাসে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, গত বছরের বিক্ষোভের পর ১৪০ জনের বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

শ্যামল দত্তের মেয়ে শশী সিপিজেকে বলেন, তাঁর বাবার বিরুদ্ধে এখন কতগুলো মামলা চলছে, পরিবার তার হিসাব রাখতে পারেনি। তাঁরা অন্তত ছয়টি হত্যা মামলার কথা জানেন, যেখানে শ্যামল দত্তের নাম আছে। মোজাম্মেল বাবুর পরিবার ১০টি মামলার কথা জানে। ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদের পরিবার সিপিজেকে জানিয়েছে, তারা পাঁচটি মামলার এফআইআর পাননি, যেখানে একজন বা অন্য সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মানে হলো তাঁদের কেউই জামিনের আবেদন করতে পারছেন না।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম ও পুলিশের মুখপাত্র এনামুল হক সাগরকে ই–মেইল করে সিপিজে। তবে তাঁরা সাড়া দেননি বলে সিপিজের নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ