সরকার থেকে এ পর্যন্ত ৬ হাজার ২০২টি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত এ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় কমিটি মাঠ পর্যায় থেকে উপস্থাপিত ৬ হাজার ২৯৫টি মামলা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ পর্যন্ত ৬২০২টি মামলা রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বিবেচিত হওয়ায় প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাঠপর্যায়ের কমিটি থেকে পাওয়া প্রস্তাবসমূহ বিবেচনার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে আটটি সভায় মিলিত হয়েছে। এসব সভায় কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে ৬ হাজার ২৯৫টি মামলা প্রত্যাহারের প্রস্তাব উপস্থাপিত হয়।

বিগত সরকারের ১৬ বছরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে রুজুকৃত মামলাসমূহ প্রত্যাহারের নিমিত্ত বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের পক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক মন্ত্রণালয় পর্যায়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে সভাপতি করে কেন্দ্রীয় কমিটি ও মাঠপর্যায়ের যাচাই বাছাইয়ের নিমিত্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদেরকে সভাপতি করে নিম্নরূপ দুটি কমিটি গঠন করা হয়। এগুলো হলো-১.

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে সভাপতি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে সদস্য রেখে ৭ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি। ২. জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সভাপতি করে পুলিশ সুপার ও পাবলিক প্রসিকিউটরদেরকে সদস্য রেখে ৪  সদস্যবিশিষ্ট জেলা পর্যায়ে কমিটি।

মাঠ পর্যায়ের কমিটি কর্তৃক যাচাই বাছাইয়ের পর বিভিন্ন জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা এবং আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটরের কার্যালয় কর্তৃক মামলা প্রত্যাহারের প্রস্তাব কেন্দ্রীয় কমিটির বিবেচনার জন্য প্রেরণ করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, নিরাপরাধ ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অনর্থক হয়রানি থেকে পরিত্রাণ দেওয়ার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে গৃহীত এই কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ন দ র য় কম ট পর য য় সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ