সেই এমবাপ্পেই এখন বড় স্বপ্ন দেখাচ্ছেন রিয়ালকে
Published: 17th, March 2025 GMT
গত বছরের নভেম্বরের শেষ দিকের কথা। ছন্দ হারিয়ে কিলিয়ান এমবাপ্পের তখন ছন্নছাড়া দশা। এরই মধ্যে লিভারপুলের কাছে চ্যাম্পিয়নস লিগে হারের পর ভাইরাল হয় এমবাপ্পের একটি ছবি। সেই ছবিতে দেখা যায়, ঘাড়ে ভর দিয়ে দুই পা ওপরে তুলে উল্টে আছেন ফরাসি তারকা। এ ছবি নিয়ে সে সময় হাসাহাসিও হয়েছে অনেকে। কেউ কেউ এ ছবিকে এমবাপ্পের চলমান দুর্দশার সঙ্গেও মিলিয়ে পাঠ করেছেন।
সমালোচক বা ট্রলকারীদের অবশ্য দোষ দেওয়ার খুব একটা সুযোগ ছিল না। সে সময়টায় ধারাবাহিকভাবেই বাজে পারফরম্যান্স করে যাচ্ছিলেন এমবাপ্পে। যা তাঁকে রীতিমতো কোণঠাসা করে ফেলেছিল।
লিভারপুলের বিপক্ষে সেই বাজে অভিজ্ঞতা অন্যভাবে ফিরে এসেছিল কদিন পর। অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে রিয়ালের ২-১ গোলে হারের রাতে পেনাল্টি মিস করে বসেন এমবাপ্পে। এরপর কেউ কেউ তাঁকে ডাকতে শুরু করেন ‘মিস পেনাল্টি’ নামে। বেশ বিব্রতকর অভিজ্ঞতাই বটে। অথচ চিত্রটা মোটেই এমন হওয়ার কথা ছিল না।
কয়েক বছর ধরে চলতে থাকা নাটকীয়তা ও উত্থান-পতনের পর্ব পার করে গ্রীষ্মের দলবদলেই পিএসজি ছেড়ে রিয়ালে আসেন এমবাপ্পে। ঘটনার ঘনঘটা এবং নামের কারণে স্বাভাবিকভাবেই শুরু থেকে মাইক্রোস্কোপের নিচে ছিলেন এমবাপ্পে। তাঁর প্রতিটি মুহূর্তকে নজরদারি করা হচ্ছিল কঠোরভাবে।
আরও পড়ুনভক্ত এমবাপ্পেকে রোনালদোর উপদেশ, নিজের মতো খেলো০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫দর্শক, সমর্থক, সাবেক ফুটবলার বা সংবাদমাধ্যম—সবার চোখ ছিল তাঁর ওপর। আর পান থেকে চুন খসলেই গেল গেল রব। ‘রিয়াল তাকে কিনে ভুল করেছে’ বা ‘এমবাপ্পে চাপ নিতে পারেন না’—এমন কথাতেও ছেয়ে গিয়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। অনেকটা অন্যায্যভাবেই দলের বাজে পারফরম্যান্সের বেশির ভাগ দায় বহন করতে হচ্ছিল তাঁকেই। এমনকি দলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য সময় দিতেও যেন সবার অনীহা।
এমন পরিস্থিতিতে জবাবটাকে এমবাপ্পেকে মাঠেই দিতে হতো। এমন নয় যে শুরু থেকে খুবই বাজে পারফরম্যান্স করছিলেন কিংবা তাঁকে মাঠে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সমস্যাটা ছিল ধারাবাহিকতায়। নিয়মিত একই তালে খেলতে পারছিলেন না।
ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করার পথে গোলের পর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো উদ্যাপন করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন এমব প প
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।
তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।
ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।
প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।
তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।
এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।
তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।
চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।
এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।
এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।
অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।